খোরশেদ বাহার
সেদিন প্রিয় বন্ধুর ই-মেইল পেলাম, তাতে লেখা ছিল
স্থান জোড়াসাঁকো, ২৫শে বৈশাখ, ১৪১৭ বঙ্গাব্দ।
এই এখানে সেই সেখানে করতে করতে অবশেষে
ঠাকুরবাড়ির উঠোনে পা রাখা গেল
বাইরে ছোটখাটো অনুষ্ঠান আয়োজনের তোড়জোড় দেখা গেল।
কিছু দূরে ফটিকের বন্ধুরা ছোট্ট একটি বল নিয়ে
ইচ্ছেমতো পেটাচ্ছিল, আর ছে-ছে বলে চেঁচাচ্ছিল।
দেয়ালের গায়ে পাথরে খোদাই করে লেখা
‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক
আমি তোমাদেরই লোক’
চোখে পড়তেই বুকটা হু-হু করে উঠলো।
অতি সন্তর্পণে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম,
সব ঝুট দাদাবাবু, তুমি এদের কেউ নও।
কী করে হয়?
এখানে পদ্মা নেই, পদ্মা বোট নেই,
এখানে শিলাইদহ নেই, পতিসর নেই, শাজাদপুর নেই
ছিন্নপত্র নেই, কবিতা নেই, গল্প নেই।
এখানে রতন, দুখিরাম, কাদম্বরী, ছিদাম, মৃন্ময়ী কেউ নেই,
লালন নেই, গগন হরকরা নেই
ফসলের মাঠে নেই সবুজ
শ্রাবণ গগনে নেই ঘনমেঘ বরষা
ভরা ঘাটে অচেনা কেউ রাখে না পায়ের ছাপ।
কেউ কি জিজ্ঞেস করে
হে বন্ধু আছো তো ভালো?
কতশত দিন নিজস্ব ভুবনে তুমি হয়ে আছ পরবাসী।
কত নিঃসঙ্গ একা এবং একা।
তবে এও জানি,
আজ ভোরে আমাদের জন্য যে কবিতাটি লিখতে
হয়তো লিখতে না তা বাংলায়
লিখতে হিন্দি, ইংরেজি কিংবা অন্য কোনো ভাষায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.