গ্রামীণ জীবন
এস এম সুলতান ছিলেন ব্যাপক অর্থে জীবনবাদী শিল্পী। তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম।
ডাকসাইটে শিল্প-সমালোচক অধ্যাপক শাহেদ সোহ্রাওয়ার্দীর প্রযত্ন ও আনুকূল্যে চলিস্নশের দশকেই সুলতান কলকাতা আর্ট কলেজে চিত্রচর্চা শুরম্ন করেন। কিন্তু কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ না করে ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। এই সময়ে তাঁর চিত্রচর্চা অব্যাহত ছিল। কাশ্মিরে বেশকিছু সময় কাটান এবং কাশ্মিরের ভূদৃশ্য অবলম্বন করে চিত্র অঙ্কন করেন।
দেশবিভাগের পর করাচি শহরে আস্তানা গড়ে তোলেন তিনি। পরবর্তীকালে পৃথিবীর নানা দেশ পরিভ্রমণ করেন।
সুলতান অজস্র ছবি অঙ্কন করেছেন। বিষয় গ্রামীণ জীবনের অতি সাধারণ অনুষঙ্গ। স্টাইল ও আবেগধর্মিতা এবং গ্রামজীবনের আদর্শায়নের ফলে তাঁর চিত্রকর্ম হয়ে উঠেছিল অসামান্য। চিত্রাঙ্কনে তাঁর ছিল বিস্ময়কর স্বাচ্ছন্দ্য। বাংলার নিসর্গদৃশ্যের নরম, অনুচ্চকিত বর্ণবিন্যাস এবং গ্রামীণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও শামত্মশ্রী তাঁর ছবির প্রধান বিষয়। এক্ষেত্রে তাঁর মানুষেরা উজ্জ্বল, আবেগধর্মী, পেশিবহুল, বলশালী ও সুখী। আবহমান মানুষের বিস্ময়কর শক্তিমত্তা এই চিত্রগুচ্ছে প্রতিফলিত হয়েছে। চিত্ররীতি ও বিষয়ের গুণে তাঁর সৃষ্টি স্মরণীয়তার মূল্য পেয়েছে।
দেশে ও বিদেশে তিনি বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে ও ১৯৮৭ সালে জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়ে এস এম সুলতান ব্যাপক পরিচিতি এবং বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পীর মর্যাদা অর্জন করেন।
তাঁর জন্ম ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলে।
মৃত্যু ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরে।
ছবিটির সংগ্রাহক আবুল খায়ের।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.