রাতুল দেববর্মণ
আঠারো বছর বয়সেই
ঘর থেকে পালিয়ে
উত্তরের এক চা-বাগানে
ধ্রুপদি হাওয়ায় আশ্রয় নিয়েছিলাম,
ষাট-সত্তরের টালমাটাল সময়
সমস্ত শরীর জুড়ে আছে
তপ্ত অপমান
আমি এক পাহাড়ি সন্তান,
ঘরের বন্ধন, ভালোবাসাহীন ঘরে
রাত জেগে বসে থাকে মা,
তবে কী ভালোবেসে ফেলেছিলাম
চা-পাতার ঘ্রাণ, দুটি হাতের মুদ্রায়
ক্ষুধার বিপুল সংকেত,
বাগান বস্তির অদূরেই ব্রিটিশ আমলের
লোহার তৈরি ব্রিজ ছিল,
মনে পড়ে তার নিচে নিঃসঙ্গ
খালে ভাসে জল পুবে-পশ্চিমে,
সেখান থেকেই শুনি মাদলের সুর
ধিতাং তালের ভিতর মায়াপ্রেমিকার ডাক
যেন মাদলকন্যা ঢলে পড়ে চা-পাতার ঘ্রাণে
নাকফুল দোলে তার মরদের টানে,
গোধূলি আলোর খয়েরি রং
ডাকে যেন হৃদাকাশ আয় আয়
পাতার মিলনে তার ঋতুর খেলা
যৌনলগ্ন জ্বলে দ্বাদশীর চাঁদের আলোয়;
বিপুল ভঙ্গি নিয়ে মেঘপুরুষ
যখন সামনে দাঁড়ায়
কেউ যেন পিছু ডাকে –
মরদ আমায় ডরাও কেনে
মাদলসুরে রাত জাগবিনে?
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.