সম্পাদকীয়

সৈয়দ শামসুল হক গত ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ পরলোকগমন করেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম এক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন। সাহিত্যের সকল শাখায় তাঁর সৃজনী উৎকর্ষ, বহুমুখীন কর্মের যে উজ্জ্বল স্বাক্ষর তিনি রেখে গেছেন, তা বাংলা সাহিত্যের ভুবনকে সমৃদ্ধ করেছে। বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক থেকে বাংলাদেশের সাহিত্যে হাতেগোনা যে কয়েকজন আধুনিকতার পথ নির্মাণ করেছিলেন সৈয়দ শামসুল হক ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। দীর্ঘদিনের চর্চা ও সাধনার মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, মৌলিক নাটক সৃজন, সাহিত্যের কলাম রচনায় ও শেক্সপিয়র-অনুবাদ তাঁর লেখনীর বৈশিষ্ট্যে ও জীবনের রূপায়ণে নতুন মাত্রা অর্জন করেছে। সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগকে তাঁর সৃজনবৈভব দ্বারা তিনি যে-উচ্চতায় স্থাপন করেছেন তার কোনো তুলনা নেই। তাঁর কবিতা ও গদ্য রচনার শৈলী উত্তরকালের জন্য অনুকরণযোগ্য হয়ে উঠেছে। সাহিত্যের চর্চা ও সাধনা তাঁর জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে মিশে গিয়েছিল। তাঁর গদ্যের শৈলী, নাটকের সংলাপ ও কাব্যভাষার বৈশিষ্ট্য বাংলা সাহিত্যকে নবীন আবেগে দীপিত করেছে Ñ এ ব্যাপারে আজ আর সন্দেহ নেই।
জন্মলগ্ন থেকে কালি ও কলমের সঙ্গে তাঁর প্রীতিময় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তিনি ছিলেন এ পত্রিকার শুভার্থী। তাঁর অগণিত রচনা কালি ও কলমে পত্রস্থ হয়েছে।
সব্যসাচী এই লেখকের মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য এক বিরাট ক্ষতি। তাঁর সাহিত্যচর্চা সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তাঁর মৃত্যুতে যে ক্ষতি হল তা সহজে পূরণ হবে না।
কালি ও কলমের অগ্রহায়ণ সংখ্যাটি তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে নিবেদিত হলো।