কাইয়ুম চৌধুরী
হেমন্তছায়া ক্রমশ
দীর্ঘায়িত হয়
এখনো সর্ষেক্ষেতে
উজ্জ্বল হলুদ এলানো
রক্তরাঙা শাড়ির চারপাশে।
কোলাহল ক্লান্ত
মধুফুলের গুঞ্জন
অস্পষ্ট অন্ধকারে বিলীয়মান।
ক্যানভাসে রক্তøানের প্রস্তুতি
কবে যে কোথায় অবগাহনের
মধুর আলাপন সোনালি
জলে ভাসমান।
দীর্ঘসময়ে খণ্ডিত ছবির
নানারং যেন আনন্দ জাগায়
বেজে ওঠে ইমনের মৃদুতান
নির্মীয়মাণ নিশীথ যাম।
কিছু কি দেবার না নেবার ছিল
সেই হিসেবের সুর
ভৈরবীতে ছায়া ফেলে
আনন্দমুখর কৈশোর নদীস্রোতে
ভাসমান জলযান টাবুরে।
শ্রাবণধারায় রুপোলি চাদরে
ভাতের গন্ধে আবছায়া
ফিরে আসে নাসারন্ধ্রে।
নদীজলে নাওয়া, পায়ের তলায়
বেলে মাটি সরে যায়
গলাছেড়ে গান সহোদর কণ্ঠ মেলায়
এপার-ওপার ঢেউ তোলে
জাহাজের ভোঁ কিউই কিংবা ভামো
নদীজল কেটে চলে চিত্রানদীতে।
পাখির উড়াল সমস্বরে ডাকাডাকি
মাছধরা নৌকোতে ভেজাজাল
হুটোপুটি উদ্বেড়াল
ডানপায়ে বৈঠা হলুদজলে
জেলে হাতড়ায়
খুঁজে ফেরে জলের শস্য।
ছায়াসবুজে জোয়ার আছড়ায়
শুকনো ডালে ওঁৎপেতে
মাছরাঙা একঠায়
ভাটিজল ঘুরে যায়
নদীপাড় ভাঙে উলটো স্রোতে।
জেগে ওঠে গাছের শেকড়
কাঁকড়া হাটে ফাঁক-ফোকরে
উদোম কিশোরের ডুবসাঁতার
যুবতীর ¯œান নদীর ঘাটে।
পাটাতন ফেলে জলযান ভিড়ে যায়
যাত্রীর ওঠানামা হেমন্ত বেলায়
ঘোমটা টেনে নাইওরি
ফিরে আসে পিত্রালয়ে বছরঘুরে
আনন্দপ্রপাতে কোলাহল জুড়ে
ছায়া ফেলে যায়
একজীবনের সোনালি ছায়ায়
প্রসারিত হেমন্তসন্ধ্যায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.