অযান্ত্রিক ছেলেবেলা

ওবায়েদ আকাশ

 

অযান্ত্রিক ছেলেবেলাগুলো ছায়াবাতাসের গ্রীবায় মুহূর্তে উড়ে যায়

তার এক পালক তোমার আর

অবশিষ্টগুলো আমাদের নস্টালজিয়া-সমগ্র ১, ২, ৩…

 

আমরা যেদিন থেকে নস্টালজিক হতে শিখেছি

পুকুরের মাছ ধরে এনে পরিপালন করছি কবুতরের খাঁচায়

ইচ্ছে হলে ভোরবেলার দরজা খুলে

সারামাঠ ঘুরিয়ে এনে ঠিক আবার পৌঁছে দিচ্ছি

বনবেড়াল, বুনোখরগোশের জন্য সুনির্দিষ্ট খোঁয়াড়ের ভেতর

 

যারা মাছ কিংবা প্রচন্ড নদী বা সমুদ্রপ্রেমিক

তারা গাছে ওঠার মতো প্রতিদিন নদী বা সমুদ্রে চড়ে –

আর তাদের কাঁধে বসে থাকে

চড়ুই শালিক কিংবা মাছরাঙার ছোট ছোট পা

তারা সুড়সুড়ি দেয়; ধারালো নখর বসিয়ে রক্তাক্ত করে ছাড়ে –

তবু সন্তরণরত মাছে তাদের প্রেম নিতান্ত বিঘ্নিত করে না

 

বরং কাঁচাপাকা মাছ শাখা-প্রশাখায় ঝুলে থাকতে দেখে

মহাআহ্লাদে নেমে এসে চারিদিকে পাহারা বসিয়ে দেয়

 

আজকাল ভাত খেতে বসে

প্লেটের চারপাশে থরে থরে সাজানো মাছ দেখে

দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে

 

তাদের কর্তিত মস্তক, মহানাক্ষত্রিক চোখ স্তব্ধ পড়ে থাকতে দেখে

নির্ভয়ে গর্জন করে উঠি

প্লেটটাকে ছুড়ে মারি সমুদ্রের প্রমত্ত খেলায়

 

অযান্ত্রিক ছেলেবেলাগুলো আরো বেশি অশান্ত হয়ে ওঠে

কবেকার মরে যাওয়া পাখপাখালির গুঞ্জন এসে

আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখে