আমার পা

মমতাজ বেগম

 

টলোমলো পায়ে ভর করে

কখন প্রথম ভূমিতে দাঁড়িয়েছি জানিনে

কতবার পড়েছি-উঠেছি তা মনে নেই

তারপর হাঁটা – অবিরাম হাঁটা

চিরকালের বিশ্বস্ত সঙ্গী আমার।

 

কখনো তেমন করে মূল্য বুঝিনি তোমার

আলো বাতাসের মতো তুমি

আমার আজন্মের সাথি

চিরকাল বহন করবে ভার

এ রকমই বিশ্বাস।

তুমি যে কখনো ক্লান্ত হতে পারো

একথা কখনো মনে হয়নি

ছোটা অবিরাম ছোটা

অনেক কিছুই দেখার বাকি।

 

সাগরের নীলজলরাশি অপেক্ষা করে আছে –

অপেক্ষায় আছে হিমালয়ের পর্বতশ্রেণি

অচেনা জনপদে আছে অচেনা মানুষেরা

বাইরে আলাদা – ভেতরে সবাই একই রকম।

 

যত্ন করেছি আননের –

চোখ দুটো ক্লান্ত কেন?

চুলের মধ্যে খুঁজেছি বয়সের ইঙ্গিত।

প্রসারিত করতলে দেখেছি বিচিত্র রেখা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আজ তাকালাম পায়ের দিকে গাঢ় মমতায়

দুর্ঘটনায় ফুলে উঠেছে সে

নরম টিস্যু থেঁতলে গেছে

আহা পা আমার

কখনো মমতা ভরে তাকাইনি তার দিকে

কিন্তু সে শিশুকাল থেকে

বয়ে চলেছে অবিরাম-ক্লান্তিহীন

আমার দেহের ভার।

 

নদী যেমন আজন্ম বয়ে চলে

সকল ভার –

পা আমার –

সকল কষ্ট নিয়েও

এখনো বয়ে চলেছে

আমার সকল ভার।

তার ওপর ভর করেই

আমি দেখেছি বিশ্বসংসার।