একটি ছবি কখনো শেষ হয় না

বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
বিদ্যাসাগর থেকে বিষ্ণু দে থেকে জয়নুল আবেদিন থেকে সফিউদ্দীন পর্যন্ত সবাই কলোনির কলকাতা ছেড়ে সাঁওতাল পরগনায় পালিয়েছেন। সমাজ-সংস্কারক বিদ্যাসাগর কি সমাজ সংস্কারের অর্থহীনতায় ক্লান্ত বোধ করেছেন? মার্কসিস্ট বিষ্ণু দের বিশ্ববীক্ষায় কি ঘুণ করেছিল? মানবতাবাদী জয়নুল আবেদিন কি কলোনির জীবনযাত্রায় অবসন্নবোধ করেছেন? সফিউদ্দীন কি কলোনির ধনতন্ত্রে উদ্ভ্রান্ত হয়েছেন? সেজন্যে কি তাঁরা সবাই জীবনের একপর্যায়ে সাঁওতাল পরগনায় আশ্রয় নিয়েছেন? যতক্ষণ পর্যন্ত কিছু অরণ্য, কিছু পাহাড় থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ অংশত সামাজিক সম্পর্কের নির্যাতন থেকে পালাতে পারবে। যখন অরণ্য আর থাকবে না, সব কর্ষিত জমি হয়ে যাবে, প্রথম দখলকারী সব দখল নেবে কিংবা ক্ষমতাবানরা সবাইকে উচ্ছেদ করবে, তখন মানুষের স্বাধীনতার জন্য আর কোনো আশ্রয় থাকবে না। মানুষ বাধ্য হবে নিজের থেকে এবং সকলের থেকে বিযুক্ত হতে। তারা সমাজ-সম্পর্কের কদর্যতার মধ্যে আবদ্ধ হবে ও পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে, তাদের মধ্যে তৈরি হবে বিশেষ স্বার্থবিশেষ, স্বার্থবোধের প্রতিযোগিতার দরুন তাদের মধ্যে তৈরি হবে স্থায়ী বৈরিতা। এই বৈরিতার ঝান্ডা ঝুলতে থাকবে তাদের জীবন ও স্বাধীনতার ওপর, স্বাধীনতা হয়ে উঠবে তাদের নিঃসঙ্গতার প্রকাশ। এ হচ্ছে বৈপরীত্য : স্বাধীনতা হচ্ছে পারস্পরিক বৈরিতা এবং নিস্তব্ধতা হচ্ছে স্বাধীনতা ও মৃত্যুর মধ্যকার বাঁচবার স্পেস। বিদ্যাসাগর থেকে বিষ্ণু দে থেকে জয়নুল আবেদিন থেকে সফিউদ্দীন পর্যন্ত সবাই জীবনের একপর্যায়ে নিঃসঙ্গতার মধ্যে বাঁচবার চেষ্টা করেছেন। বিদ্যাসাগর কার্মাতাড়ে থেকেছেন সত্য, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কলকাতায় ফিরে এসেছেন বিক্ষুব্ধ হয়ে। বিষ্ণু দে, রিখিয়ায় বসে বেশকিছু অসাধারণ কবিতা লিখেছেন, কিন্তু তাঁর বুদ্ধিবাদী মন রিখিয়ার প্রকৃতির মধ্যে স্থায়ীভাবে লুপ্ত হয়নি। জয়নুল আবেদিন দুমকায় থেকে সাঁওতালদের জীবন নিয়ে বেশকিছু নজরকাড়া ছবি এঁকেছেন, কিন্তু দুমকার নির্জন নিঃসঙ্গতার মধ্যে নিজেকে দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখতে পারেননি। সফিউদ্দীন দুমকার সাঁওতাল জীবন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন, কিন্তু দিনের শেষে কলোনির কলকাতায়, ধনতন্ত্রের রাজধানী কলকাতায়, দারিদ্র্য যে-শহরকে ঘেরাও করে আছে সেই কলকাতায় ফিরে এসেছেন এবং পরবর্তীকালে ঢাকায়। এর কারণ তদন্ত করা দরকার। বিদ্যাসাগর, বিষ্ণু দে, জয়নুল আবেদিন, সফিউদ্দীনের স্বরূপ বোঝার জন্য। এসব বিখ্যাত ব্যক্তি সরলতার খোঁজ করেছেন সাঁওতাল পরগনায়, কার্মাতাড়ে, রিখিয়ায়, দুমকায়। সরলতা কি কোথাও আছে? নান্দনিকতার আদি-অন্ত কি প্রকৃতি ও নিসর্গের মধ্যে? সাঁওতালরা, আদিবাসীরা যে-জীবনে আবদ্ধ তা কি সত্যিই সরল? আমরা শহুরেরা, ধনতান্ত্রিক সভ্যতার বাসিন্দারা যে-জীবন যাপন করি আমাদের তুলনায় আদিবাসীদের জীবন সরল। কিন্তু তাদের জীবনপদ্ধতি এতো দৃঢ় লোকাচারে বদ্ধ, সেই গন্ডির বাইরে তাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। যদি কেউ যায় তার পক্ষে ফেরা সম্ভব হয় না। সে হয় ভ্রষ্ট, সে হয় পতিত, সে হয় একঘরে। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু-মুসলমান সমাজের মধ্যে পিছিয়ে-পড়া আদিবাসী সংখ্যালঘুদের জীবনযাত্রার আলেখ্য হচ্ছে তারাশঙ্করের দুটি উপন্যাস : হাঁসুলি বাঁকের উপকথা এবং নাগিনী কন্যার কাহিনী। অন্যপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ পিছিয়েপড়া আদিবাসীদের পাহাড়-জঙ্গলে-নিসর্গের মধ্যে বিদ্যাসাগরের মতো বিষ্ণুদের মতো জয়নুল আবেদিন এবং সফিউদ্দীনের মতো জীবনযাপন কোনো একসময় ফিকে হয়ে যায়। প্রথম ক্ষেত্রে পিছিয়েপড়া মানুষরা ধনতন্ত্রের আগ্রাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ধনতান্ত্রিক সভ্যতায় লালিত ভদ্রলোকরা তাদের রিট্রিট থেকে বাধ্য হন সরে যেতে। সফিউদ্দীনের ক্ষেত্রে তাঁর সরলতার অন্বেষণ ও সরলতার অভিজ্ঞতা ভাববার মতো। মানুষের সরলতা একটা মুহূর্ত; মানুষ জটিল শেষ পর্যন্ত। মানুষের পরিবেশে মোহমুগ্ধতা থাকে, থাকতে পারে নিসর্গ-প্রকৃতির কবিত্ব, কিন্তু কবিত্ব কি মানুষকে সরল করে? সফিউদ্দীনের এই প্রশ্নটা তাঁর কাজের মধ্যে লুকানো। তিনি নিসর্গের মধ্যে পিছিয়েপড়া মানুষদের সরলতা খুঁজতে খুঁজতে আবিষ্কার করেছেন মানুষের মনের জটিলতা। এই জটিলতার জন্য বিরাট বিশাল নৈসর্গিক স্পেসের দরকার নেই। নৈসর্গিক স্পেস বনাম মনের জটিলতা প্রকাশের স্পেসের মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব আছে। এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রভিত্তিমূল : স্বাধীনতা। স্বাধীনতা দরকার কার জন্য? নিজের জন্য কিংবা সবার জন্য? নিজের স্বাধীনতার অর্থ কি সবার জন্য স্বাধীনতা নষ্ট করা? কিংবা সবার স্বাধীনতার অর্থ কি নিজের স্বাধীনতা লুপ্ত করা? নৃবিজ্ঞানের দিক থেকে পিছিয়েপড়া সমাজের বাসিন্দারা প্রত্যেকেই কি নিজের মতো জীবনযাপন করে, নিজের মতো সুখী হয়, নিজের স্বর্গ খুঁজে পায়? রুশো সমস্যাটা ধরতে পেরেছেন। রুশোর বক্তব্য হচ্ছে : ‘সমস্যা হচ্ছে এক ধরনের সংঘবদ্ধতা খুঁজে বের করা, যে-সংঘবদ্ধতা ডিফেন্ড করবে ও রক্ষা করবে সকল শক্তি নিয়ে সংঘবদ্ধ প্রতিটি ব্যক্তি ও তার সরঞ্জামকে এবং যে-সংঘবদ্ধতার মধ্যে প্রতিটি ব্যক্তি সকলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে মানবে এবং পূর্বের মতো স্বাধীন থাকবে।’ রুশোর এই কল্পনার সংঘবদ্ধতার এবং স্বপ্নের স্বাধীনতা বাস্তবের কোনো সমাজেই নেই, সে অতীত কিংবা বর্তমানে হোক। তবু মানুষ এ-ধরনের সংঘবদ্ধতা খোঁজে এবং স্বাধীনতা খোঁজে, ভাবে বর্তমানে না থাকলেও, হয়তো সুদূর অতীতে, পিছিয়েপড়া সমাজে এই সংঘবদ্ধতার ভগ্নাংশ ও স্বপ্নের রেশ আছে, সেখানে মানুষের জীবনমান তুলনামূলকভাবে সরল। এ বদ্ধ-ভাবনার সমাজ, এই সমাজেই বসবাস করতে চেয়েছেন বিদ্যাসাগর কিংবা বিষ্ণু দে কিংবা জয়নুল আবেদিন অথবা সফিউদ্দীন।
এই ভাবনার সমাজে সফিউদ্দীনের বসবাস, তুলনামূলকভাবে দীর্ঘদিনের, সেজন্যে তাঁর কাছে এই বসবাস অনেকটা স্থায়ী। সফিউদ্দীনের কাজের বিষয় সীমিত : মাছ, মাছ ধরার জাল, মাছের চোখ, কালো কুটিল জল এবং মানুষের চোখ কিংবা নিজের চোখ। এই সীমিত বিষয়ের মধ্য দিয়ে তিনি ধরবার চেষ্টা করেছেন কলোনি কালের আধুনিক জীবন এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী আধুনিক জীবন। এর মধ্যে দিয়ে তিনি ধরার চেষ্টা করেছেন নির্মাণের সঙ্গে মানুষের বিযুক্ততা এবং বিযুক্ত মানুষের শ্রেণি সম্পর্কের স্বরূপ। তিনি ইমপ্রেশনিস্ট পেইন্টিংয়ের সমস্যা ছাপচিত্রে নিয়ে এসেছেন। নিসর্গ-প্রকৃতি থেকে বিযুক্ত মানুষ এবং বিযুক্ত মানুষের শ্রেণি প্রতিনিধিত্বশীলতা তিনি আলোচনা করেছেন তাঁর কাজে। এক হিসেবে তাঁর কাজ আত্মজৈবনিক : তিনি নিসর্গের পরিবর্তমান স্বরূপ তাঁর কাজে ধরতে চেয়েছেন এবং আলোচনা করতে চেয়েছেন। দুমকায়, সাঁওতাল পরগনার মানুষ, ব্যক্তি যে অর্থে নিসর্গ/ প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত এবং এই যুক্ততা থেকে উত্থিত শিল্পী সফিউদ্দীন এবং দর্শকদের রোমান্টিক আকুতি দূরের জন্য, সেই যুক্ততা কলোনিকালের ঢাকায় ও স্বাধীনতা-পরবর্তী ঢাকায় অনুপস্থিত। দূরের জন্য আকুতি মনের মধ্যে ও চোখের মধ্যে, দূর হয়তো কোথাও নেই। স্বামীবাগে, যেখানে পঞ্চাশ দশক থেকে সফিউদ্দীন থেকেছেন, সেই স্বামীবাগের পূর্বসীমায় ছড়ানো বিস্তৃত জলাভূমি, ক্রমপ্রসারিত শহর ঢাকার ধাক্কায় কোণঠাসা একটি দুটি গ্রাম এবং জলা আর গ্রাম হচ্ছে বালু নদীর অাঁকাবাঁকা ধারার মধ্যে ছড়ানো-ছিটানো নৌকো, মাছ ধরার নৌকো, মাছ ধরার জাল, আর স্রোতের কুটিল রেখা, আর রেখার মধ্যে মাছের আসা-যাওয়া। তিনি সেই বাসগৃহ থেকে খুব একটা কোথাও নড়েননি। তিনি চোখ দিয়ে পরিব্রাজন করেছেন নিজের মধ্যে অন্তঃশীল নানা স্রোত এবং চোখ দিয়ে পরিব্রাজন করেছেন তার চারপাশ।
টি জে ক্লার্কের অনুসরণ করে সমাজ মধ্যকার একজন সফিউদ্দীন নামক শিল্পী ও তাঁর শ্রেণি সম্পর্কের সমস্যার কাছে পৌঁছনো যায়। ক্লার্কের বক্তব্য : শ্রেণি হচ্ছে একসার মাধ্যম সৌভ্রাতৃত্বের, দূরত্বের, যুক্ততার ও বহির্ভূততার। এসব বিষয় দরকার জীবনরচনার সরঞ্জাম ঠিক করার জন্য ও কিছু আস্থা খুঁজে পাওয়ার জন্য। সকলের প্রতিনিধিত্বশীলতার ভিতর দিয়ে প্রতিভাত হয় ও সামাজিক প্র্যাকটিসের মধ্য দিয়ে পরীক্ষিত হয়। গত শতাব্দীর পঞ্চাশ দশকে কলোনি ঢাকার আধুনিকতা অসমাপ্ত ও অনিশ্চিত। বুর্জোয়াদের রাজধানী লন্ডন থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় পৌঁছেই টের পান এই অসমাপ্ত ও অনিশ্চিত আধুনিকতা। ঢাকার জীবনযাত্রার মধ্যে একটা অস্থিরতা ও অস্বচ্ছতা আছে : এই অস্থিরতা ও অস্বচ্ছতার স্থান খুঁজে পান নদীপ্রবাহের মধ্যে, যে-প্রবাহ থেকে জেলেজীবন ও কৃষকের জীবন উধাও হয়ে যাচ্ছে, থেকে যাচ্ছে রেশ, ভগ্নাংশ, তিনি চোখে গেঁথে নিয়ে থাকেন মাছ ও নৌকোর আর্তনাদ, নদী, মাছ ও মাছ ধরার জালের রোদন, স্রোতের কুটিলতা-জটিলতা। এসবের মধ্যে দিয়ে তিনি তাঁর পাবলিকের সঙ্গে সম্পর্ক, মধ্য শ্রেণির কৃত্রিমতার মধ্যে তাঁর স্থান এবং সামাজিক স্পেসের মধ্যে তাঁর প্রকৃতি ও ফ্যান্টাসির আন্তরিকতা হওয়া নির্ণয় করেন। তাঁর প্রতিনিধিত্বশীলতার ভিত্তি বাস্তবতা, এই বাস্তবতার নিজস্ব একটা স্বরূপ তিনি উপস্থাপন করেন মাছ, নৌকো, জল কোণের ফ্রন্টাল জাক্সাটা পজিশন, কোনো কেন্দ্র নেই কিংবা কেন্দ্রহীনতার মধ্যে এক ধরনের পারসপেক্টিভ তৈরি হয়। এই ফ্রিজ-সম টেকনিক তিনি ধার করেন পপুলার ইমেজারি থেকে, নৌকো কিংবা মাছ কিংবা জাল কিংবা চোখ সবই চেনা, জানা কিংবা চেনাজানার মধ্যে ছড়িয়ে দেন জলের স্রোত, কুটিল ও ভয়ঙ্কর। তাঁর স্পেসের গঠন হোমোজিনিয়াস এবং নিউট্রাল ফ্রেমওয়ার্ক বিষয়ের বাইরে অবস্থিত। এই স্পেসকে চেনার ধরন নির্ভরশীল একজন সফিউদ্দীন দর্শকের ওপর, একটি স্থিরবদ্ধ নিশ্চল চোখ কাজটির কেন্দ্রে অবস্থিত। এ ধরনের কাজের কেন্দ্র শিল্পীর ভিশন। সফিউদ্দীন গ্রামীণ নিসর্গের ভাঙন দেখেছেন এবং একই সঙ্গে দেখেছেন গ্রাম্য নিসর্গের মিথলোজির ভাঙন। তিনি তদন্ত করেছেন বারবার, কলোনির মধ্যশ্রেণির ভিতর থেকে। এই ভিতর থেকে দেখার মহত্তম কাজগুলো হচ্ছে : ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধনির্ভর কাজগুলো, বন্দি আত্মার বিকৃতিকে তিনি দেখেছেন নানা চোখ থেকে। মধ্যবিত্ত সফিউদ্দীন পাকিস্তানের সশস্ত্র ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা তদন্ত করেছেন, একসঙ্গে এসার্ট করেছেন তার ক্ষমতা, তার রিপ্রেজেনটেশনাল চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের একটি নির্দিষ্ট পাঠ আছে, বন্দিজীবনের একটি নির্দিষ্ট পাঠ আছে। শিল্পীর চোখকে কখনই বন্দি করা যায় না।
এই চোখের অন্য অর্থও আছে; চক্ষু, চাহনি, দৃষ্টি, অক্ষিগোলক। সফিউদ্দীন এসব চোখের ভিন্নভিন্ন অর্থ খুঁজেছেন এবং অর্থের অভিজ্ঞতা সম্বল করে ছবি নির্মাণ করেছেন। মাছের চোখ সরল এবং মাছের চোখ ক্রুদ্ধ, মানুষ দর্শন হিসেবে এসব দেখছে। এই দেখার মধ্যে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা একত্র হচ্ছে। মাছ এবং চোখ একাগ্র এবং এক এবং অভিন্ন : জলের মধ্যে জলের করতালি কিংবা কলরব শিল্পীর চোখে ভেসে উঠছে এবং মাছ উগড়ে দিচ্ছে কল্পনার বিশালতা ও কল্পনার ভয়ালতা। মাছ তখন ভয়ের কারণ হয়, যেমন গভীর জলের মাছ, প্রাচীন মাছ, শেওলাপড়া মাছ, দরগার মাছ, দানোয় পাওয়া মাছ। একটা অস্বাভাবিক শক্তি আছে মাছের ভিতর। প্রথমদিকে সফিউদ্দীন কল্পনাকে যাত্রা করেছেন দূরনিসর্গের নিঃসঙ্গতায়; পরিণত সফিউদ্দীন কল্পনাকে ব্যবহার করেছেন মনের নিঃসঙ্গ গভীরে। এই স্বল্পভাষী মানুষটি রাগী যুবকের মতো পৃথিবীকে দেখেছেন। তিনি অনেক কদর্যতা মেনে নিতে পারেননি। চটজলদি কোনো কিছু শিল্প হয় না। সেজন্যে তাঁর কাছে একটি ছবি অাঁকা কখনই শেষ হয়নি। 