ওমরান দাকশিনের জন্য

জোবায়ের মিলন

 

অবনত হও পৃথিবী

দাম্ভিক অহমিকা থেকে নেমে এসে মিশে যাও

পায়ের স্যান্ডেলে,

ঝরা পাতার ধূলিকণায়,

নগণ্য ভাগাড়ে।

প্যাগোডা, গির্জা, মসজিদ, মন্দিরে মানায় না তোমায়।

শিশুরক্তে রঞ্জিত তোমার হাত,

দাঁত, লালসান্বিত চোখ।

 

‘ভদ্র বিশ্ব’ বলে যাকে তুমি দাও সন্তান স্বীকৃতি

তোমার সে-সন্তান বিকৃত লোভে বিনষ্ট বীজ

তার থেকে জন্ম নিচ্ছে অযুত নিযুত কীট,

কীটেরা ছোবল দিচ্ছে পায়রা ছানায়

জোঁকের মতো শুষে খাচ্ছে শিশুরক্ত,

ছোবলে ছোবলে বিক্ষত সহস্র ওমরান দাকশিন,

আমার শিশুটির দিকে তাকানো যায় না!

 

 

যে-গোলাপ বাগানে হেসে খেলবার কথা ছিল

শিশু আয়লান কুর্দির

যে কৃষ্ণচূড়ার তলায় সুগন্ধি পুষ্পবৃষ্টিতে

ভিজবার কথা ছিল – মিনাল কোবার্তির

যে-জলসায় সুরে আচ্ছন্ন হবার কথা ছিল

ওমরান দাকশিনের

সে-গোলাপ বাগানে, কৃষ্ণচূড়ার তলায়, সুরের জলসায়

শুধুই রক্ত ফোয়ারা, শুধুই ওমরান দাকশিন!

 

কচি কচি চোখ আকাশ দেখত

সবুজ সবুজ ঠোঁট কিচিরমিচির করত

নরম নরম হাত-পা লাটিম ঘোরাত, অথচ

সে-চোখগুলো প্রচ- ভয়ে নীল

ঠোঁটগুলো কম্পমান, হাত-পা সংকুচিত

আগ্রাসন দাবানলে।

নত হও পৃথিবী, নরম হও পৃথিবী

কোনো দেশ, কোনো ভূমি, কোনো জাত, গোত্র – তা নয়

যে-শিশুটির নাম ‘ওমরান দাকশিন’ তার দিকে

একবার তাকাও।