কসাইখানার মালিক মশাই

মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

 

মুরগি গোরম্ন ভেড়া ছাগল পাঁঠা

একে একে পড়লো সবাই কাটা।

যেথায়, সেটা ষষ্ঠীপদর মসত্ম কসাইখানা –

চিল ও শকুন সারাক্ষণই ওড়ে

মাথার ওপর কেবল চরকি ঘোরে –

তক্কে-তক্কে থাকে কখন তলায় দেবে হানা।

পাশেই আছে রীতিমাফিক একটা পশুখামার –

সেটা কসাই ষষ্ঠীপদর আপন সেজো মামার –

মাংস বেচেই জীবন চালায় মামা ও ভাগ্নে

মুনাফা যতটা হয় এ ওকে কয় ভাগ নে

এই ভাবেই জীবন কাটায় মামা ও ভাগ্নে

মাসের শেষে নিয়ম করে এ ওকে ঠিক কয়

ঠিকঠাক সব হিসেব করে যেথায় প্রাপ্য ভাগ নে

পাড়ায় যত হুলো বেড়াল, নেড়ি কুকুরছানা

নিত্য দেবে নিয়ম করে কসাইখানায় হানা –

পাশেই ফেলা অন্ত্র যকৃৎ নাড়িভুঁড়ির খোঁজে,

মাংস কেনে রোজই পাড়ার পয়সাওয়ালা লোকে

সকাল-সন্ধে কসাইখানায় ভিড় তো লেগেই থাকে।

মাংসের এই কারবার তো তারাই সচল রাখে

যখন তারা কসাইখানায় মাংস কিনতে ঢোকে

ষষ্ঠীপদ পয়সা নিয়ে দিব্যি আছে, বেড়ে।

রাতের বেলায় যখন সে রোজ কসাইখানাতে

বাড়ি ফিরেই সাবান মাখে ডেটল মাখে হাতে

রক্তটক্ত বদ গন্ধ সবসুদ্ধ সাফ

করতে পারলে রোজকার এই জীবহত্যাই মাফ  –

অমত্মত সে বিবেক বাঁচায় এই বলে রোজ রাতে।

রম্নজি রোজগার না থাকলে কারম্ন জীবন চলে?

তাই সে রোজই সকালবেলায় কসাইখানা খোলে

বিবেক কী কয় সকালে তার রয় না কোনো রেশ।

চামড়া-টামড়া যত পরে তারাও সব বিকোয়

চর্মশিল্পী সেসব কিনে ধুয়ে রৌদ্রে শুকোয়

চামড়া দিয়েই চাবুক-টাবুক বানায় সে জম্পেশ।

Published :


Comments

Leave a Reply