চিত্রকল্পের ঘুম

ওবায়েদ আকাশ

 

ক. ভিক্ষাবৃত্তি

খয়েরি আলোর ঠোঁটে নির্বিঘ্নে জ্বলছে তোমার বুক

 

শখ করে কিনে আনা মাটির হাঁড়িতে লেগে ছিল খয়েরি চাঁদমুখ

 

ঝড়ো হাওয়ায় উড়ে গেছে কুমোরের প্রাজ্ঞ দুটি হাত

সেই থেকে গোলাপি চাঁদের দিকে চেয়ে আছে বাড়ি

 

আজ আবার দড়ি টানো, বাঁধ ভেঙে জল টেনে আনো সাগরে

জলের প্রযত্ন থেকে কেড়ে আনো সূর্যের খয়েরি প্রতাপ

 

তার মুখে ভিক্ষাবৃত্তি এক অধিকারবঞ্চিত সর্বনাম

 

 

খ. মখমলের দরজার আড়ালে

 

চক্রাকার মৌমাছি মখমলের দরজার ঘ্রাণে উড়ছে

ভেতর থেকে প্রবাহিত তাপ ও সৌগন্ধের পরিপাকযন্ত্রে

সিদ্ধ হচ্ছে উৎকণ্ঠা –

 

মৃত মানুষের জন্য বয়ে আনা মরু গুঞ্জরণ

সাদা সাদা ফ্যাশন হাউসে ছড়িয়ে পড়েছে

 

মখমলের নন্দনজুড়ে প্রবাহিত অনাবৃত নদী

 

মাঝিদের ক্লান্ত দেহ প্রচন্ড জ্বরে কাঁপছে

 

 

গ. করপোরেট

 

করপোরেট বিশ্বাসগুলোয় থরে থরে সাজানো রয়েছে রেলগাড়ি

বহুমাত্রিক যাত্রাবিরতি শেষে পরিবর্তিত হয় ইঞ্জিনের চলা

 

তোমার আমার করপোরেট হানিমুনের বর্ণনায় যে

সমুদ্রের চোখ খলবলিয়ে হাসে

তাতে এখন হামলে পড়েছে বহুজাতিক কুড়াল

 

উঠে আসছে ধোঁয়ায় আকীর্ণ মুখ, বিদগ্ধ মাতৃত্বের নাভি

 

 

ঘ. শেষতম উৎকণ্ঠা জুড়ে

 

প্রদীপের সলতের গলায় চড়িয়ে দিয়েছি ধারালো ছুরি

কাঁপছে যা কিছু দৃশ্যমানতার পূর্বাপর

 

তোমার অবতরণের কাল

কৃষ্ণপক্ষের সংরক্ষিত আশ্রয়ের ভেতর ভাসমান

 

রাতের ঊরুর নিচে তড়পাচ্ছে কবন্ধ প্রদীপ

আর অহর্নিশ ছুরির চিৎকারের নিচে তোমার আসা-যাওয়া

 

শেষতম উৎকণ্ঠা জুড়ে অবশিষ্ট ছিল মুমূর্ষু আলোর বিভাজন