তপন গোস্বামী
খাঁ-খাঁ পড়ে থাকে বিকেল এখন নদীতীর সুনসান
বাতাসও এখন ভারি হয়ে আছে দম ধরে আসে প্রাণ।
এদিকে-ওদিকে শরৎ শিশির হিম জমা হয় হাড়ে
তবুও নিমাই, পথে কত ভাই, কেউ কেউ বাড়ি ছাড়ে।
মাথা ন্যাড়া করে পথে না নামলে সন্ন্যাসী তুমি নয়
অথচ ভেতর পুড়ে পুড়ে খাক্ সংসারে বড়ো ভয়।
নওল কিশোর কোথা তোর ঘর কে কে তোর পিতা-মাতা
যেদিকে তাকাই শুধু পোড়া ছাই হৃদয়ে ব্যাঙের ছাতা।
তবু পথ ডাকে গঙ্গার তীর তবু মনে সংশয়
কানে কানে কেউ মন্ত্রণা দেয়, এ-ঘর তোমার নয়।
যারা ঘরে আছে তারা ঘরে থাক, শুধু তুমি একা একা
গন্ডি পেরিয়ে পথে পা দিয়েছ, কিছু কি যাচ্ছে দেখা?
সামনে ধূসর মেঘভাঙা চাঁদ, একা নারী ঘুমে কাদা
পথে জেগে থাকে কৃষ্ণকানাই, পথে জেগে থাকে রাধা।
পেছনে অনেক মায়া হে নিমাই, পেছনে অনেক সুতো
সংসার বড়ো পিছল জ্যামিতি বাস্তবসম্মত।
ন্যায়শাস্ত্রের তর্ক বৃথাই, বৃথা এই সাতপাক
বৃথা রাত্রির তারাভরা সাজ ভাগিরথী চৌকাঠ।
নদের নিমাই শুধু গুরুভাই রাত্রিও ঢলে পড়ে
স্মৃতি সততই দূরে সরে যায় জলে তার ছায়া নড়ে।
কাল থেকে এক নতুন সকাল, নব আনন্দ জাগে
কারো কোল যদি খালি হয় হোক গলিত অস্তরাগে।
গেরুয়া বসন মুখে হরিবোল কাটোয়ার সন্ন্যাসী
কাদামাটি দিয়ে গড়া এই ঘর আমরা তো ফিরে আসি।
আমি কোন ছার, কিসের বিচার, তুমি নর অবতার
ক্ষমা করো প্রভু, মাকে না কাঁদালে মুক্তি মেলে না তার?
চেতনার জোরে ছেড়ে গেলে ঘর ছেড়ে গেলে প্রিয় নারী
এই অপরাধ, ক্ষমা করো প্রভু, আমি কি ভুলতে পারি?
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.