ছয়টি কবিতা

টোকন ঠাকুর

ঘামসূত্র

কামসূত্র লিখেছে কে? জানি না। চিনি না তাকে

পড়তে পড়তেই করি পর্যটন, ঘুরিফিরি, নানানাসনের বাঁকে

এরই মধ্যে আমি ঘেমে উঠি, দৃশ্যত আমি ঘেমে যাই

চলন্ত ট্রেনের বগি থেকে লাফ দিয়ে প্লাটফর্মে নেমে যাই

…কেবলই ফুটতে থাকে ঘাম, শরীর ঝরিয়ে ঝরে ঘাম…

ঘামের আগুন, মিহি নুন – এই বাক্যের অন্তর্মিলে থাকবে কাম

কামসূত্র পাঠ্য যদি, এইবার আমার হাতেই ঘামসূত্র

                                পয়দা হচ্ছে, বঙ্গভাষায়

এ-গ্রন্থের কৃতজ্ঞতা স্বীকার : একমাত্র তোমার কাছে

                                তুমি ঘাম তথ্য সহায়িকা,

                                               প্রচন্ড পিপাসায়
কামায়ন, ঘামায়ন

কামসূত্র নিয়ে সিনেমা হয়েছে

ঘামসূত্র নিয়েও সিনেমা হবে

যেমন, রামায়ণ পড়েছি বলেই আমি

কামায়ন লিখেছি, নীরবে নীরবে

এখন, ঘামায়ন শব্দটির উৎপত্তি-ব্যুৎপত্তি ও বিকাশ

                                লিখে রাখো তবে –

ভালো লাগা

রগ টানটান

                দাঁত কিড়মিড়

                                আগনমুখো রাগে

তোমাকে খুঁজছি

                তোমাকে আমার

                                খুঁজতেও ভাল্লাগে…

ফল জানে

দুর্বিনীত, দুর্দান্ত ফল

ছুটে এসে বলল, ‘চল’

‘কোথায়, বল?’

‘দুপুর-বাগানে’

আমি কী জানতাম –

রস নয়, এত রক্ত

ফলের মধ্যে?

আমি কী করব –

বুনো বুনো ঘ্রাণে

নেশাসক্ত, ফল আমার দুর্বলতা জানে…

প্রেম

ভেতরে জ্বর জ্বর! বুকটা খরখরে

মনের সঙ্গে মনের কত তর্ক রে!!

যে নেই আমার পাশে তবু, তার সঙ্গেই

হ্যাঁচকা সময় – কীসের নেশা ভর করে?

কিছুই তাকে বলা হয় না – বলব বলে

কথা সাজাই, কিন্তু কথা সব ভেঙে যায়

ফাঁকা রাস্তায় – কথারও নাকি ডর করে!?

শাহবাগ তুমি কার?

এদিকে ফুলের ঘ্রাণ – ফুলঘ্রাণ, তুমি কার?

দুদিকের বিল্ডিংয়েই বেলেহাঁস, নার্স, নার্স আপা, তুমি কার?

ঘুরেফিরে শেষ কথা, শাহবাগে; শাহবাগ তুমি কার?

শাহবাগ এরই মধ্যে সময়ের দর্শনার্থী, জাদুঘর হয়ে গেছে

ফুটপাতে আড্ডা মারে সারিসারি স্বপ্ন, হেঁটে যায় স্বপ্নের লাশ

উড়ে যায় তুলোবীজ, সেই-ই কবিতা, তুলোবীজ, তুমি কার?

মাথার মধ্যে কমা, দাঁড়ি, বিস্ময়, অমীমাংসিত প্রেম : যুদ্ধ,

                                          পরিখা, কাঁটাতার

কী হবে কী হবে বলো, বাংলা কবিতার?