দুজন সুবর্ণ আত্মঘাতী

জাহিদ হায়দার

‘মেয়েটি কি নেমে যাবে পরের স্টেশনে?’
‘ছেলেটি কি নেমে যাবে পরের স্টেশনে?’

‘নামলো না, কতদূর যাবে?’
‘ভালো  লাগলো, ছেলেটি নামলো না।’

‘ও কি দেখছে চলিষ্ণু গ্রাম, মৃত নদী?’
‘ও কি দেখছে আকাশ, হেমন্তের শূন্য মাঠ?’

‘ওর কি প্রেমিক নেই?
প্রেম ছাড়া সুন্দর কখনো থাকে একা?’
‘ওর কি প্রেমিকা আছে? মনে হয় আছে।’

‘বই খুললো, পড়বে না। অক্ষর-আকাশে
বুনে যাচ্ছ আমার পূর্ণিমা’;
‘মেয়েটি খুললো ম্যাগাজিন, পড়বে না।
ছবির গভীরে লিখে যাবে : হাত ধরো সমুদ্রের তীরে।’

শেষ স্টেশনে নামলো দুজন।
হুইসেল। যাত্রী যায়। ট্রেন চলে গেল।

: তুমি ছিলে দেখেছি স্বপ্নদেশ,
বেঁচেছিল নিকট আর দূরত্বের সৌন্দর্য;
হয়তো কখনো হবে না দেখা, না হোক;
কোনো ক্লান্তি নেই। ভালো থেকো যুবক।’

: দীর্ঘ পথ শেষ হলো সুন্দরের নীরবতা দেখে,
আজো বেঁচে আছে কিছু সুন্দর সময়,
সে-আমার উজ্জ্বল সঞ্চয়
ভালো থেকো মেয়ে।’

দুজন সুবর্ণ আত্মঘাতী
কথার বাইরে ৫-ঘণ্টা  মুখোমুখি ব’সে
সবুজ পাতায় ১০০০ পদাবলি লিখেছিল।

২০.১১.২০১২