প্রচ্ছদ-পরিচিতি

পাখা

মুর্তজা বশীর বাংলাদেশের চিত্রকলা আন্দোলনের প্রথম প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে অগ্রগণ্য। শক্তিশালী ড্রইং, রঙের মনোগ্রাহী ব্যবহার এবং সামাজিক অঙ্গীকারের চেতনা তাঁকে স্বাতন্ত্র্যে চিহ্নিত করেছে। ষাটের দশকে তাঁর ‘দেয়াল’ সিরিজের ছবি এদেশের চিত্রানুরাগীদের মধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। ছাপচিত্র, জলরং, তেলরং, মিশ্রমাধ্যমে তাঁর অনায়াস দক্ষতা রয়েছে। তবে তেলরঙেই তাঁর সিদ্ধি সমধিক। তিনি অনেকগুলো সিরিজের শিল্পী : ‘দেয়াল’, ‘শহীদ-শিরোনাম’, ‘পাখা’, ‘রমণী’, ‘কলেমা তৈয়বা’। প্রত্যেকটিই স্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল হয়ে আছে। তাঁর ‘রমণী’ চিত্রমালায় বাঙালি নারীর আনন্দ-বেদনা, রূপবৈচিত্র্য-লাবণ্য, কোমলতা-দৃঢ়তা, স্বভাবসৌন্দর্য ও চর্চিত বৈশিষ্ট্য – এসবের সমন্বয় ঘটেছে।
মুর্তজা বশীর ঢাকার সরকারি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৫৪ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর উচ্চশিক্ষা ফ্লোরেন্সের একাদেমি দেল বেলেস্ন আরতিতে ১৯৫৬-৫৮ সালে এবং প্যারিসের ইকোল নাসিওনাল সুপিরিয়র দ্য বোঁজ আর্তে ১৯৭১-৭৩ সালে। দেশে-বিদেশে তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করে এখন অবসরজীবন যাপন করছেন ঢাকায়। তাঁর একাধিক কাব্যগ্রন্থ ও উপন্যাস পাঠক ও সমালোচকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সম্প্রতি বাংলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন তিনি।
তাঁর জন্ম ১৯৩২ সালে ঢাকায়।
ছবিটির সংগ্রাহক আবুল খায়ের।