বুদ্ধ বললেন, তবু…

সৌম্য সরকার

একদিন ছিল যেদিন বুদ্ধের শরীরে দেশলাই

ঠুকে দিলে জ্বলে উঠতো আগুন :

কষ্টগুলো হামলে পড়লে কুঁকড়ে যেতেন তিনি,

বেদনায় নীল, কামে-ঘামে বেগুনি হয়ে উঠতো শরীর –

তারপর আবার একদিন অন্য এক আগুনে পুড়ে

যখন শুদ্ধ হলেন তিনি, দীর্ঘ উপবাসের পর সুজাতার হাতে

দগ্ধ একবাটি পায়েস খেয়ে প্রথম বললেন, ‘জগতের সব প্রাণী

সুখী হোক’ –

 

কিন্তু তবু জগতের প্রাণীরা সুখী হয় না :

কেঁচোরা কষ্টে থাকে মাটিতে কেমিক্যাল মিশে যায় বলে,

সাভারের আকাশ ইটভাটার ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায় তাই

সঠিক প্রোপরশনে ডানা মেলতে পারে না চিল,

বর্জ্যে দূষিত খালে কচুরিরা একপাল অপগন্ডের মতো শুয়ে থাকে,

আসন্ন মৃত্যু বিষয়ে অত্যধিক সচেতন হতে গিয়ে শ্রমিক মৌমাছিরা

মৌচাকে বয়ে আনে নষ্ট টক মধু –

 

আর হয়তো মানুষ বেশি করে পরজগতের কথা ভেবে

জগৎবিচ্ছিন্ন হয়, তারপর মাতালের মতো পুড়িয়ে দেয়

পাহাড়ের সুপারিবাগান, মন্দির পোড়ে – যে-আগুনে পায়েস রেঁধেছিল

সুজাতার হাত – ভাঁড়ারে জমানো ধূপকাঠি পোড়ে,

শত বছরের পান্ডুলিপি পুড়ে ইতিহাস বলি হয়

আর পোড়ে প্রসন্ন বুদ্ধের মুখ : জ্বলতে-জ্বলতেই তিনি আবার বলেন :

জগতের সব প্রাণী সুখী হোক –