বুড়ো ক্যাপটেন

মণীন্দ্র গুপ্ত

পুরো পথটা আদ্দেক জল আর আদ্দেক মদে ভেসে
ভোরবেলা বন্দরে এসে ঢুকল জাহাজ।
স্বাধীনতাসংগ্রামীদের মতো বলিষ্ঠ বাহু বাড়িয়ে
দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটা ক্রেন।
জাহাজের উদর যেন মাটির তলার খনি –
পাথরে মিশে থাকা ধাতু, ভাঙা মরচে পড়া লোহা,
অকিঞ্চিৎকর আলকাতরা আমাদের জন্য
দূরদেশ থেকে বয়ে এনেছে সে।

সবাই বলে, বুড়ো ক্যাপটেনের প্রচুর অভিজ্ঞতা –
বন্দরে বন্দরে অনেক ডুয়েল লড়েছিলেন,
কিন্তু বিয়ের যোগ্য কনে পাননি।
ক্যাপটেন চেনেন সেই দ্বীপকে যেখানে
বাঁদরেরা নারকেলগাছে উঠে নারকেল পেড়ে দেয়।
তিনি দ্যাখেন, জাহাজের অন্ধকার খোলের মধ্যে
ওক কাঠের খাটপালঙ্ক,
পাথর-বাঁধানো রাস্তায় চলেছে ঘোড়ায় টানা ব্রুহাম,
মেয়েদের সোনালি চুল কোমর ছাপিয়ে নেমেছে।
ডকে, টুকটাক রিপেয়ারের জন্যে জাহাজ ঢুকলে
কেবিনের বাইরে এসে দেখেন,
উত্তর সাগরের অন্ধ তিমিরা তাঁর জাহাজকে ঘিরে
জলের ফোয়ারা ছিটিয়ে খেলছে।