মধ্যযামে আসেন তিনি কাঁদেন চুপিচুপি

রণজিৎ বিশ্বাস

সারাটা রাত তুমি আমার সঙ্গে দুশমনি করেছো। কোনো কঠিন দুশমনও এমন দুশমনি করে না।

: ঘাড়ে আমার মাথা কয়টা আছে যে তোমার সঙ্গে দুশমনি করবো! তাও আবার সারারাত! তাও আবার পার পেয়ে যাবো আমি! এতো ভাগ্য আমার!

: এমন ফুউল স্পিডে ফ্যান ছেড়েছো যে আমার পিঠব্যথা শুরু হয়েছে।

: ফ্যানের সঙ্গে পিঠব্যথার কী সম্পর্ক! ‘উত্তররতুন অইলো ঝড় অাঁড় ভাঙিরক্ত হড়ে’র মতো! আশ্চর্য!

: জানো তো তুমি, ঠান্ডা আমি সইতে পারি না। আমার অ্যালার্জি আছে!

: জানি, তুমি অনেক কিছুই সইতে পারো না। এমন গরমের দিনে চালু ফ্যানের সঙ্গে তোমার নতুন দুশমনি শুরু হলো কেন?!

: কী জ্বালা! ফ্যানের সঙ্গে আমার দুশমনি শুরু হবে কেন! আমি কি তোমার মতো গাছবাঁশের সঙ্গে ঝগড়া করে বেড়াই নাকি!

: আর তো কোনো কাজ নেই আমার। সারাদিন মানুষের সঙ্গে শুধু ঝগড়া করি।

: সারাদিন কাজ যে কী করো না করো তা তো আমি জানি। আমি ফ্যান দেবো ���� করে, উনি দেবেন ফাস্ট করে! চোর কোথাকার! চোরের মতো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে কখন আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। আচ্ছা একটা ফ্যানচোর তুমি! ইচ্ছে হয় ফ্যানচোরের চোখ দুটো গেলে দিই।

: দেখো, তোমার মুখে কথা মোটেই আটকাচ্ছে না আজকাল। সকালবেলা উলটোপালটা কথা বলে দিনটা খারাপ করো না আমার। এক থোকায় তিন-চারটে ইস্যুর জন্ম দিও না। সামলানো মুশকিল হবে।

: সামলানোর আবার মুশকিল কি! কী বলতে চাচ্ছো তুমি ‘মিনমিন্যা শয়তান’!?

: কোন টাইপের শয়তান আমি তার বিচার পরে হবে। আপাতত যা আমি বলতে চাইছি, তা খুব সিম্পল। ইন ফ্যাক্ট, আমি বলতে চাইছি – পাগলও নিজের ভালো বোঝে।

: আর, আমি বুঝি না। এই তো বলতে চাচ্ছো তুমি!?

: বিপদটা আজ যেন খুব ভোরেভোরেই ঢেকে ফেললাম। দুঃখ আছে কপালে আমার। তোমার এই বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে কোনোদিন কি আমি পাল�� দিয়ে পেরেছি?!

: কোন বেশিষ্ট্যের কথা বলছো তুমি?

: এই যে পুরোটা না শুনে ক্ষেপে ওঠা, ক্ষিপ্তপ্রক্ষিপ্ত হয়ে নাচনে-কোদনে মত্তপ্রমত্ত হয়ে ওঠা, অনিয়ন্ত্রিত অসংস্কৃত ও অশৈল্পিকভাবে গ্রামারবিহীন উত্তুঙ্গ নৃত্যে মেদিনী কাঁপিয়ে তোলা!

: আমি কি এসব করি! এসবই কি আমি করি!

: আহা! তুমি তোমার শৈশবের স্টাইলে ফিরে যাচ্ছো কেন!

: তুমি কি আমাকে শিশু বানিয়ে ছাড়ছো?! আমি কি শিশু! আমি কি বেইবি!

: না। তুমি পাগলও না, শিশুও না, তুমি নিরপেক্ষ। মহা নিরপেক্ষ!

: শোনো।

: শুনছি।

: তুমি আমাকে ছাগল ভেবো না।

: সেটি ভাববার কোনো অবকাশ নেই। বায়োলজিক্যালি ও ফিজিক্যালি তা সম্ভবও নয়।

: তুমি কার কথা মাথায় রেখে পাগল শিশু ও নিরপেক্ষ বলে আমাকে খোঁচা দিচ্ছো, আমি কিন্তু বুঝতে পাচ্ছি!

: আমি কিন্তু বুঝতে পাচ্ছি না।

: তোমার এই গালি কিন্তু আমি নেবো না।

: সেটি আমার ব্যাপার নয়। তুমি কিন্তু, গালাগালের সংজ্ঞা পালটে দিচ্ছো। এমন হলে মানুষ কিন্তু মানুষের সঙ্গে কথা বলতেই সাহস করবে না।

: না করুক। তাছাড়া, মানুষ মানুষের সঙ্গে যা করে তুমি তা আরেকজনের কাছে আশা করো কীভাবে! মানুষ তো মানুষের প্রজাতিপরিচয় ভুলে থাকতে পারে না। কোনো চতুষ্পদ প্রাণী তো বড় একটা দফতরে চাকরির নামে কতক্ষণ শ্রম দিলেই দ্বিপদ প্রাণীতে গ্র্যাজুয়েটেড হতে পারে না! ইম্পসিবল!

: অনেকক্ষণ পর তুমি কিন্তু আবার বৈশিষ্ট্যে ফিরে এলে।

: কী বলতে চাচ্ছো তুমি! বৈশিষ্ট্য বৈশিষ্ট্য বলছো তুমি, আসলে বলছো সব দোষের কথা! সরাসরি বললেই পারো – তুমি তোমার আগের দোষটির কথা স্মরণ করিয়ে দিলে, তোমার আগের দোষটিতে তুমি ফিরে এলে। সরাসরি কিছু বলো না কেন তুমি! কথা বলবে আমার মতো ডিরেক্ট-ডিরেক্ট!

: এবার যদি তোমার থামতে মর্জি হয়, আমি এক-আধটা কথা বলতে পারি।

: এতো বিনয়ভদ্রতা দেখানোর মতো ইডিয়ট হচ্ছো কেন!! আমার কাছে কোন জিনিসটা চেয়ে তুমি পাওনি?! আজ না হয় কাল, সকালে না হয় বিকেলে, এ-সপ্তাহে নয়তো ও-সপ্তাহে, এ-বছর নয়তো ও-বছর, তাও নয়তো পরের পরের বছর – বলো অকৃতজ্ঞ, গত চলি�শ বছরে আমার কাছে চেয়ে কোন জিনিসটা পাওনি তুমি! ইয়াদ করো। অত করজোড় কাঁপাকাঁপি বাদ দিয়ে ওই চেয়ারে বসো। ‘ইতমেনানসে বৈঠো’। তারপর গুছিয়ে কথা বলো। আমি শুনছি। আমি অত অধৈর্য নই।

: তা আমি জানি এবং আমার চেয়ে ভালো কেউ জানে না। আমি যে আপনার সম্পর্কে এতো জানি, স্বয়ং বিধাতাও তাতে অবাক হয়ে যান।

: তুমি কী করে বুঝলে?!

: আপনার সৌজন্য ও সুবাস এবং আনুগত্য স্নিগ্ধতা প্রীতিময়তা ও শতাধিক প্রকৃতির বিরূপতায় ক্লান্ত হয়ে ও বদহজমের শিকার হয়ে যখন আমি বিছানার এক সাইডে পড়ে ও উলটোদিকে ফিরে বড় চুপচাপ অবস্থায় চোখের জল ছেড়ে দিই, তখন বিধাতা আমার কাছে আসেন, আমার মাথায় হাত বোলান, আমার সঙ্গে কানে কানে কথা বলেন। তিনি আমাকে কমপক্ষে তিনশো সাঁইত্রিশটি বিষয়ে আগাম ধারণা দেন। আমি ধর্মভিত্তিক অনুষ্ঠানে ও আচরণে এবং মেডিটেশনে তোমার সাড়ে তিন কোটি ভাগের এক ভাগও নৈষ্ঠিক নই; তারপরও তিনি আমাকে অনেক কথা বলেন এবং জীবনের সহস্র শিক্ষা অকাতরে দিয়ে যান। যাওয়ার সময় তিনি কখনো আমার গেঞ্জির নিচে হাত ঢুকিয়ে বুকের ‘পরে ও পিঠের’ পরে আদর করে দেন। পিতৃকুলের কোনো ঘনিষ্ঠ অভিভাবকের মতো। কখনো আমার ভেজাগন্ডে হাত বুলিয়ে তিনি তাঁর দস্তমোবারক নোংরা করে ফেলেন এবং আমার সফেদ গেঞ্জিকে কিংবা বড় স্টাইলের ফতুয়াকে হাত মোছার ন্যাকড়া ভেবে ব্যবহার করে ত্রস্তে প্রস্থান করেন। বলেন, আমার আরো অনেক কাজ ইডিয়ট, আমার আরো অনেক কাজ।

: এতো কাজের মাঝে তোমার বিধাতা অতো সময় করতে পারেন?!

: ভুল করলে। ভয়াবহ ভুল। অমার্জনীয় ভুল। আমার বিধাতা কিংবা তোমার বিধাতা বলতে কিছু নেই। বিধাতা সবার। সব মানুষের শুধু নয়, সব গাছপালারও, সব কীটপতঙ্গেরও; তিনি সব মানবের, সব মানবাতিমানবের, সব পাশবের ও সব পাশবাতিপাশবের, সব কীটের ও সব কীটাণুকীটের, সব মানবতাবাদীর ও সব মানবতাবিরোধীর, সব মুক্তিযোদ্ধার ও সব যুদ্ধাপরাধীর, সব আস্তিক ও নাস্তিকের, সব বিশ্বাসী ও সব সংশয়বাদীর, সকল তস্কর ও সকল ভাস্করের। তিনি কার নন?! তিনি সবার! তুমি কি মনে করো তিনি শুধু তোমার ভালো দেখবেন, আমার ভালো দেখবেন না! তোমাকেই শুধু মেদিনী কাঁপাতে দেবেন, আর আমাকে আশ্রয় দেবেন না! তিনি করিমের কথা শুনবেন, কানুর কথা শুনবেন না! তিনি রহিমকে কাছে টানবেন আর রামকে দূরে ঠেলবেন! যদি বিশ্বাসী হও, তোমাকে মানতে হবে – তিনি সবার কথা শোনেন, সবাইকে ভালোবাসেন ও সবার সমস্যার সমাধান করে সবাইকে সাধ্যমতো শান্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন। গুন্ডাবদমাশ, মৌলবাদী এবং সাম্প্রদায়িক ও ছদ্মসাম্প্রদায়িকদের জন্য সবসময় পারেন না; তবে, চেষ্টা তিনি করে যান। তাঁর মাঝে চেষ্টার ত্রুটি আমি কখনো নজর করিনি। আমরা সীমাবদ্ধ মানুষরাই শুধু বুঝি না বা বুঝতে চাই না যে, তাঁরও কিছু লিমিটেশন আছে, তাঁরও কিছু ন্যাপটিজম-ফ্যাভারিটিজম ইত্যাদি আছে, কোনো কোনো  দেশে কোনো কোনো মানুষ কিংবা গোষ্ঠীর প্রতি তাঁরও কিছু কমিটমেন্ট পৃথক পৃথক আছে। নিরপেক্ষতার মাঝেও তাঁরও কিছু পছন্দ-অপছন্দ, হালকা পছন্দ, পলকা পছন্দ, এক্সট্রা পছন্দ, লাইকলি পছন্দ ও আনলাইকলি পছন্দের ব্যাপারস্যাপার থাকতে পারে। এতে দোষেরও কিছু নেই, অস্বাভাবিকতারও কিছু নেই! কিন্তু, আমরা আমাদের ইডিয়টিক ন্যাচারের কারণে তা সহজভাবে নিতে পারি না।

: তোমার কাছে উনি কখন কখন আসেন?

: যেদিন আমার চোখের পাতা ভারী হয়, যেদিন আমি চলি�শ বছর আগে আবেগের বশে করে ফেলা একটি কাজের জন্য অনুশোচনায় ডুবি এবং যেদিন আমার চোখের সরোবর থেকে টপটপানো জল উপচে পড়ে বড় অবাধ্যতায়, সেদিন তিনি আসেন, গভীর রাতে আসেন, আমার পাশে বসেন, বাছাবাছা কিছু রবীন্দ্রসংগীত আমাকে শোনান। আমাকেও তাঁর সঙ্গে গাইতে বলেন; বলেন, ধরো আমার সঙ্গে। আমি পারি না, অসুরের গলায় সুর থাকে না বলে আমি গাইতে পারি না, তাঁর সাহস পেয়েও আমি ধরতে পারি না।

: তোমার বিধাতা এতো কাজ করার সময় পান কখন?

আবারো ‘তোমার বিধাতা’! তোমার হবে না; অথবা হলে তোমারই হবে। তুমি তোমার প্রকোষ্ঠে ইউনিক। সময়ের কথা যখন তুলছো, বলি। যারা নিজের ভুলেভালে ভোগে ও যারা নিজের আওতার বাইরের কারণে অথবা অন্যের ভূমিকায় ভোগে, তাদের কাছে আসার জন্য সকল ব্যস্ততার মাঝেও তিনি সময় বার করে নেন। আমার কাছে তিনি একটু বেশি আসেন, কারণ উভয় বৈশিষ্ট্যই আমার আছে। আমি নিজের কারণেও ভুগি, ভুগি অন্যের কারণেও, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক ছদ্মসাম্প্রদায়িক ও অসূয়াকাতর লোকদের ষড়যন্ত্রের কারণে।

: তাহলে তোমার কাছে তিনি বেশি আসেন!

: আসেন। তাঁকে আসতে হয়। আসাটাকে তিনি কর্তব্য মানেন ও দায়িত্বভুক্ত রাখেন। হি ইজ ভেরি ডিসেন্ট।

: ‘হি’ কেন! ‘শি’ও তো হতে পারেন!

: সে-বিতর্ক খুব লম্বা করে আরেকদিন করবো। আজ প্রয়োজনীয় কথাগুলো সেরে নিই।

: তার আগে আমার আরেকটা প্রশ্ন। তিনি যে তোমার পিঠে হাতে বোলাতে আসেন, তিনি যে মধ্যরাতে বাছাবাছা রবীন্দ্রসংগীত তোমাকে শুনিয়ে যান, আমি তো তোমার পাশে থাকার পরও একদিনও শুনি না! একদিনও দেখি না!

: তারও কারণ আছে। তাঁকে দেখা যায় না, শোনা যায় না, অনুভব করা যায়। তিনি ‘অবাঙমনসগোচর’। তাঁকে বাক্যে প্রকাশ করা যায় না, মনে মনে শুধু অনুভব করা যায় ও গোচরে আনা যায়।

: তো, তিনি তোমাকে কী কী বলে যান?

: বলেন, দেখো বালক, তোমার স্ত্রী যে তোমাকে বলেন, ডিরেক্ট-ডিরেক্ট কথা তুমি বলো না কেন! আমার মতো সাহস তুমি দেখাও না কেন (!), ভুলেও তুমি সে-পথ মাড়াবে না। মারা পড়বে, বেঘোরে প্রাণ হারাবে, সরাসরি কথা শোনার ধৈর্য সংসারে সবার থাকে না। তুমি সবাইকে তোমার মতো মনে করো না। ঠকবে।

দ্বিতীয়ত, সরাসরি কথা তোমাকে বা আমাকে বলতেইবা হবে কেন! যার আকল আছে, সে তো এমনিতেই বুঝে নিতে পারে! বিরল সেই ব্যাপারটি তোমার কতটুকু আছে, আমি জানি। কিন্তু, তোমার জীবনের ‘হামসফরে’র কতটা আছে, অনেক চেষ্টার পরও জানার ব্যাপারে আমি উচ্চ সাফল্যে ব্যর্থ হয়েছি। তুমি গবেষণা করে যদি ধারণা করতে পারো, আমাকে জানিও; আমি খুব কঠিন কিংবা খুব কড়া কোনো দাওয়াইয়ের ব্যবস্থা করবো। তবে সময় লাগবে।

থার্ড, তোমার স্ত্রীর মধ্যে একধরনের ভয়াবহ সারল্য আছে। সেটি মেনে নিয়েই অস্বাভাবিক ঘাতসহ অবস্থায় তোমাকে চলতে হবে।

উন্মাদদের একটা বৈশিষ্ট্য থাকে, মন দিয়ে শোনো। তুমি যদি তাকে আঘাত করো, একটানা সে বলতে থাকবে – আমাকে আঘাত করলি কেন, আমাকে আঘাত করলি কেন? তারপর তুমি যদি তাকে কিছু খেতে দাও, সে বলতে থাকবে – খেতে দিলি কেন, খেতে কেন দিলি? তারও পরে, তুমি মনে করো, তার গায়ে জল ছিটিয়ে দিলে, তখন সে আগের দুটি বলে যাবে; তখন সে টানা চিৎকার করতে থাকবে – ছিটোলি কেন জল তুই, ছিটোলি কেন জল তুই!

আমি তোমার স্ত্রীকে এমন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী বলার জন্য খুব সাহস একাট্টা করতে পারবো না। তবে, তোমার একটা সুবিধা সবসময় থাকবে, তুমি কঠিন একটা বিপদে পড়ে যাওয়ার পরও সেখানে তোমাকে আটকে থাকতে হবে না। তুমি নতুন নতুন ও সহজ সহজ প্রশ্ন পেয়ে যাবে। যেমন ধরো, কোনো একদিন তিনি শুরু করবেন রাতের বেলা জোরে জোরে ফ্যান ছাড়ার অভিযোগ নিয়ে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোথায় তিনি ল্যান্ড করবেন, তুমিও জানো না, আমিও জানি না, আমার চেয়ে বড় কেউ যদি আবিষ্কৃত হন, আই অ্যাম শু্যয়র তিনিও জানবেন না।

ফোর্থ, সংসারের সর্বসুন্দর প্রেমের কবিতা কিংবা গান স্ত্রীকে কিংবা স্বামীকে নিয়ে রচিত হয়নি, হয়েছে প্রেমিক কিংবা প্রেমিকাকে নিয়ে অথবা অধিবৈবাহিক সম্পর্কের নায়িকা কিংবা নায়ককে নিয়ে।

ফিফথ, জীবনের সহযাত্রী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে দেখামাত্রই ঝাঁপাতে হয় না। বিভিন্ন স্পেসিম্যান পরখ করতে হয় এবং গুড থেকে বেটার ও বেটার থেকে বেস্টের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য আমার মতো বদান্য অস্তিত্ব তো তুমি সবসময় পাবে না বালক!

সিক্সথ অ্যান্ড লাস্ট, আমি সব থিওরি তোমাকে জানানোর পরও তোমাকে নিজের সমস্যা নিজেকে সামাল দিতে হবে। তোমার সমস্যার সমাধানে যতদিন লাগবে, ততোদিন আমার আয়ু আছে কিনা জানি না। শুধু পরামর্শ দিয়ে যাই, ফর্মুলা সব জায়গায় খাটাতে চেও না। ফল পাবে না। আমিও তেমন করার সাহস করি না। যে খেলে সে খেলোয়াড়, কিন্তু যে জানে সে জানোয়ার নয়; যে প্রেমের বার্তা আনে, সে আনোয়ারই হবে কথা নেই; রহিমা মনে মনে যাকে নিয়ে স্বপ্ন রচে, মনোয়ার সে নাও হতে পারে! ভালো থেকো। আমি গেলাম।