মুহূর্তপুরাণ

মুহম্মদ নূরুল হুদা

মুহূর্তের গর্ভ-জাত, তোমার তো অন্য কোনো পরিচয় নাই;

সময়ের গর্ভ ছেড়ে চিরকাল সময়ের গর্ভে থেকে যাই।

কে গেছে তোমাকে ছেড়ে? সে কি তবে অধরা পালক?

যে গেছে তোমাকে ছেড়ে তার সাথে তোমার তো লেনদেন নাই।

 

যেতে যেতে ফিরে আসি, ফিরে ফিরে দেখি সব পথ,

শ্বেত বলো কৃষ্ণ বলো সব পথে সমুড্ডীন সব শূন্য রথ

তোমার শরীর নিয়ে পৌঁছে যায় তোমার আত্মায়, –

আত্মা কি বসত করে ভিন্ভুবনের ভিন্ লালন খাঁচায়?

 

কিছুই জানি না, হায়, জানি না কিছুই;

শুধু শুনি আর মানি মনকথা :

জেনেছি জন্মের সত্য, মুহূর্তে মুহূর্তে তাই খুঁজি অমরতা;

একটি মুহূর্ত পেলে তাকে আমি অনন্তের দৈর্ঘ্য দিতে চাই;

ভাবি : মুহূর্ত জনক আর মুহূর্ত জননী

সময় পুরুষ যদি, সুনিশ্চিত, সময় রমণী।

তোমার-আমার সত্য এক-সত্য, আমাদের ভিন্ন সত্য নাই।

 

শূন্যের চেতন থেকে জেগে ওঠে মুহূর্তের মন

মুহূর্তের মন থেকে জেগে ওঠে শূন্যের চেতন

তুমি-আমি মুহূর্ত শূন্যের

আমরা সমান ভাগি পাপ ও পুণ্যের;

ব্রহ্মা – সমান এক শাম্পানের আমরা তো আজন্ম সোয়ারি

মুহূর্ত-ঔরসজাত, মুহূর্তেই ব্রহ্মান্ডের বুকে দেই পাড়ি।

আমরা হারি না :

যুক্ত হতে পারি শুধু, মুক্ত হতে কখনো পারি না।