শব্দ ও উপাধি

সুধীর দত্ত

 

রাশি রাশি ঢেকে আছে এক লজ্জা-কাতরতা, খুলি –

খুলে ফেলি উপায় ছিল না, আজো নেই।

উপাধি জড়িয়ে যায়, কাশ্মির থেকে আনা বহুমূল্য

মেষশাবকদের তৃণ, আলোয়ানগুলি।

 

বাতাসও সম্ভ্রান্ত বড়। আগুনের কাছে তাই রেখে আসি

পশু-মাংস, ম ম করবে পুড়তে পুড়তে, না হয় তখন

যাওয়া যাবে, একা একা, সমুদ্রের ধারে, প্রেয়সীর

চুল ওড়ে, বাতাবিলেবুর মতো স্তন থেকে

খসে পড়ে তুমুল যৌনতা।

 

না, আর হলো না – যাওয়া, বোধহয়, আরো বেশি

বল্কলেরা পুরু,

আমাকে জড়িয়ে ধরে, ঢেকে দেয় লিপ্সা ও ডালিম

 

দুই

অন্ধকারে অবাধ ঢেউয়ের মতো বাসনারা আরো ঢের রূপান্তরকামী

লাল কাঁকড়া। সৈকতে ও জলের ভিতর চরে, চরাচরব্যাপী

তাদের মসৃণ দাঁড়া ধারালো ও তীক্ষন ঢুকে যায়।

আমি ভাবি, পিছনে জলের নিচে যেখানে তরঙ্গ নেই,

নিস্তরঙ্গ যেখানে মাছেরা থাকে – সরীসৃপ,

যেখানে হাওয়ারা নেই, হাতিয়ারও নেই,

আমি আছি, জলতলহীন, স্থির – দেখছি আমাকেই

কীরকম অবিভক্ত, টুকরোগুলির মধ্যে, নিজেকে জড়িয়ে।

 

তিন

শব্দরা স্টেশনে নামল এইমাত্র। এবং তৎপর

ব্যাগ মাথায় হেঁটে যাচ্ছে

হনহনিয়ে মাচান তলায়; পথে সিঁড়ির ওপর

এনামেল বাটি পেতে খঞ্জ আর ভিখিরিরা;

সমবেত প্রতিদ্বন্দ্বী, তাদের এড়িয়ে, কীভাবে নিজেকে

বিশেষত ছায়াদের, চলো

রুটি তড়কা ওদের খাওয়াই, সাড়ে ছত্রিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস

হয়তো বা বৃষ্টি নামবে, শুনছি তো চন্দ্রকোনা শালবনি পেরিয়ে

এদিকেই ধেয়ে আসছে মেঘের সন্ত্রাস।

শব্দরা এ ভ্যাপসা গরমে

প্যাচপেচে ঘামে ভিজে আর বেশিও মানবিক

সাধারণ হবে।