সন্ধিক্ষণ

রেজাউদ্দিন স্টালিন

 

যার আসবার কথা ছিলো সে আসেনি

আসবে কি না জানি না

আমার মন বলছে সে আসবে

এখন আমি ইচ্ছাশক্তির কাছে সম্পূর্ণ সমর্পিত

কিন্তু এমন উন্মূল সময়ে কোন মানুষ সমর্পণ সহ্য করবে

যার মধ্যে ব্যক্তিত্বের বিন্দুমাত্র আছে

 

একবার মনে হলো আজ কেউ আসবে না

একথা ভাবতেও কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে আমার

বাইরে দুঃখভারানত মেঘের মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে

কোথাও যেন বজ্রপাত হলো

এ-মুহূর্তে কেউ না কেউ মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলো

কেউ না কেউ জন্মকে

তা না-হলে চিৎকার কিংবা নৈঃশব্দ্যের অর্থ কী

কেনই-বা কবিরা কোটি কোটি বছর ধরে প্রতীক

প্রযুক্ত করছেন

 

 

দ্বন্দ্বসন্দেহে আমি যেন নিজেকে নিজেই পাহারা দিচ্ছি

অপেক্ষার জলরাশি ক্রমান্বয়ে প্রতীক্ষার সমুদ্রে ঢলে পড়ছে

আমার মনের মধ্যে পৃথিবীর মহত্তম ব্যক্তিদের

বাণীসমূহ বিকীর্ণ হচ্ছে

কিন্তু কিছুতেই উত্তেজনার হাত থেকে

রেহাই পাচ্ছি না

শুধু দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া, শুধু তাকিয়ে থাকা ছাড়া

আমার আর কী করার আছে

 

হঠাৎ ধারাবর্ষণের ধাক্কায়

বহুদিনের বিশ্রুত একটি রবীন্দ্রসংগীতের ধ্বনি

সমস্ত ইন্দ্রিয়কে ভিজিয়ে দিয়ে

আমার জিহবার সলতের ওপর সুরাগ্নি সংযোগ করতেই

তা উদ্দীপিত হলো – যারে সঁপিলাম এই প্রাণ মন দেহ

সে তো এলো না, সে তো এলো না

এখন আমার অস্তিত্বের সমস্ত অহংকার

অপেক্ষার আগুনে সমর্পিত

আমি আর পালাতেও পারছি না