ভ্রমণ

  • বিলেতে প্রথমবার

    বিলেতে প্রথমবার

    ইকতিয়ার চৌধুরী ডোভার উপকূলে ফেরির তীব্র ভেঁপুতে ঘুম ভাঙলে চোখ কচলিয়ে কেবিন থেকে বাইরে এসে দাঁড়ালাম। ইংলিশ চ্যানেলের ওপর হালকা কুয়াশা। রেলিং ভিজে আছে। অল্প অল্প শীত। পাড়ে ভিড়ছে আমাদের বহুতল ফেরিটি। ফেরিটি যেন একটি বিশাল পস্নাজা। তাতে একাধিক রেসেত্মারাঁ, শুল্কমুক্ত বিপণি, বসার জায়গা, যেখানে চলছে একঘেয়ে বিরক্তিকর টিভি প্রোগ্রাম, পরিচ্ছন্ন টয়লেট ইত্যাদি। রাতের অনেকটা…

  • হারলেমের হৃদয় হতে

    হারলেমের হৃদয় হতে

    হারলেম না গেলে আমার নিউইয়র্ক দেখা কত অসম্পূর্ণ থেকে যেত

  • নির্জন দ্বীপের দিগন্তে আগুনপাহাড়

    নির্জন দ্বীপের দিগন্তে আগুনপাহাড়

    নেকলাইনে প্রকৃতির বন্দনা হয়ে জড়িয়ে আছে সারসের শুভ্র পালকের মতো রাশি রাশি মেঘ

  • পাইনের ছায়ে হাইডির গাঁয়ে

    পাইনের ছায়ে হাইডির গাঁয়ে

    হাইডির গল্পের কথা আমি প্রথম শুনি আমার শিল্পীবন্ধু নীলার কাছে। সুইজারল্যান্ডের উত্তর-পূর্বদিকে পাহাড়ের গায়ে একটি গ্রাম। সেখানে এক অনাথ ছোট্ট শিশু হাইডি তার মাসির কাছে বড় হচ্ছিল। কিন্তু মাসি যখন চাকরির জন্য বাড়ি থেকে দূরে (ফ্রাঙ্কফুর্ট) চলে গেলেন, তখন তাকে তার দাদুর কাছে রেখে যান দেখাশোনার জন্য। দাদু প্রথমে ব্যাপারটা পছন্দ না করলেও একটু একটু…

  • হেসে পরিক্রমা একটি তীর্থভ্রমণের অভিজ্ঞতা

    মার্টিন কেম্পশেন অনুবাদ : জয়কৃষ্ণ কয়াল বিশ শতকের যে-কোনো জার্মান লেখকের চেয়ে হেরমান হেসের পাঠকসংখ্যার ব্যাপ্তি অনেক বেশি। তাঁর গল্প, উপন্যাস, কবিতা ও নিবন্ধের অনুবাদ বাংলা-হিন্দিসহ সব মুখ্য ভাষাতেই পাওয়া যায়। জীবন সম্পর্কে রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামাজিক দুষ্টক্ষত তথা মানুষের দুর্দশার জন্য গভীর উদ্বেগের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন তিনি। জন্মসূত্রে রক্ষণশীল প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টান; কিন্তু সেই ধর্মীয় পরিসর…

  • লংকাপুরীর দিনরাত্রি

    নওশাদ জামিল কলম্বোতে যাঁরা বেড়াতে আসেন, তাঁদের জন্য গল ফেস সৈকতে যাওয়াটা ফরজ কাজ! কলম্বোর প্রাণকেন্দ্রে ফুরফুরে হাওয়া বিলিয়ে দিচ্ছে অনিন্দ্যসুন্দর এই সৈকত। পাশেই দাঁড়িয়ে কলম্বোর বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক এলাকা। ঠিক সামনেই পুরনো পার্লামেন্ট ভবন। খানিক এগোলেই সৈকতঘেঁষে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর বিখ্যাত গল ফেস হোটেল। কলম্বোর বেশকিছু দর্শনীয় জায়গা ঘুরে একদিন বিকেলে হাঁটতে-হাঁটতেই আমরা চলে আসি…

  • সিকিমের ডাকে

    জয়ন্ত সরকার মনপাখির ডানায় সেবক রোড এসে পড়লেই মনপাখিটা আমার বুকের পিঞ্জর থেকে বেরিয়ে এসে এদিক-ওদিক উড়তে শুরু করে। কখনো উত্তুঙ্গ পর্বতশীর্ষ, কখনো বনানীর সবুজাভ হিন্দোল, কখনো-বা স্নিগ্ধ প্রপাতের ধ্বনি ওর ডানায় প্রাণের সঞ্চার ঘটায়। এক টুকরো নীল আকাশ, তুষারের সান্নিধ্যে গড়ে ওঠা কোনো সূর্যাস্ত কিংবা পাহাড়ঘেরা জলাশয়ের অনাবিল সৌন্দর্যে সে তার নিজস্ব পৃথিবী গড়ে…

  • গঙ্গার উৎস, আমার সভ্যতার উৎসমুখ

    কৃষ্ণেন্দু পালিত নদীর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সভ্যতার আদিলগ্ন থেকে। নদীকে কেন্দ্র করে সে বসতি গড়েছে, গড়ে উঠেছে সভ্যতা। নদীও নানাভাবে প্রভাবিত করেছে মানুষের সমাজজীবন, সমৃদ্ধ করেছে, জন্ম দিয়েছে সভ্যতার। যুগে-যুগে বদলে দিয়েছে সভ্যতার ইতিহাস। নদীকে নিয়ে তাই মানুষের রোমান্টিসিজমের শেষ নেই। সৃষ্টি হয়েছে গান-গল্প-কবিতা, গড়ে উঠেছে হাজার আখ্যান। সেসব আখ্যান কখনো ধর্মের আধারে, কখনো ইতিহাস-আশ্রয়ী,…

  • জলপাই হাওয়া

    ফেরদৌস সাজেদীন সকালের খোলা রোদের রাস্তা সামান্য উঁচুতে উঠে গেছে। আপহিল, একটু ঝুঁকে হাঁটতে হচ্ছে। চোখেমুখে বাতাসের ধাক্কা। এক বস্নলক এগুলেই বাঁয়ে মোড় নিয়ে আরেকটা বস্নক, তারপর বড় রাস্তা পার হলেই ‘মেট্রো’। বেরুবার আগে হোটেলের ফ্রন্ট ডেস্কে জিজ্ঞেস করে পরিষ্কার বুঝে নিয়েছি, কী করে যেতে হবে শহরের প্রাণকেন্দ্রে। পৃথিবীর সব শহুরে ব্যস্ততার মেজাজ ও আয়োজন…

  • বজ্র ড্রাগনের দেশে

    কৃষেন্দু পালিত রাজার বিয়ে বলে কথা, হেলাফেলা তো নয়। বাঁধুনি তাই বজ্র আঁটুনি। আর আমরাও আহাম্মক, খোঁজখবর না নিয়েই বিয়ের ঠিক এক সপ্তাহ আগে সীমান্ত শহর জয়গাঁও এসে হাজির হয়েছি। জয়গাও থেকে হাঁটাপথে ভুটানের প্রবেশদ্বার ভুটান গেট, ওপাশে রয়্যাল ভুটান রাষ্ট্র বা বজ্র ড্রাগনের দেশ। পারাপারে কোনো বিধিনিষেধ নেই। গেট পেরোলেই ফুন্টশেলিং। পারমিশন করাতে হবে…

  • লিসোটোতে ভ্রমণ : কারাবন্দি কামাহেলো ও ঘোড়া পালামা

    মঈনুস সুলতান কিছুদিন হলো আমি আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের একটি ছোট্ট রাজতান্ত্রিক দেশ লিসোটোতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ঊর্ধ্বে এ দেশটিতে আছে প্রচুর পাহাড়, নীলাভ জলের দৃষ্টিনন্দন হ্রদ, সবুজ ঘাসে নিবিড় প্রান্তর ও দিগন্ত-ছোঁয়া বিশাল সব উপত্যকা। লিসোটোর রাজধানীর নাম মাসেরু। আমি ওখানে সাময়িকভাবে ডেরা বেঁধেছি। কোনো দেশে দীর্ঘদিন ভ্রমণের একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে – ক্রমাগত…

  • বনভূমির ভগ্ন ইমারতে চিত্রশিল্পী

    মঈনুস সুলতান পানে লেপটানো চুনের মতো সাদা-সাদা দাগওয়ালা একটি সবুজাভ পাথরে বাতাস-পোরা বালিশে ঠেক দিয়ে বসি। রোদ চড়ছে, তাই ফ্রোজেন কমলার কোয়াগুলো খেতে বেশ ভালো লাগে। আমার কাছেপিঠে কেবল পাতাহীন একটি গাছ। তার সরম্ন ডালে বসে একঝাঁক সুদর্শন সিডার ওয়াক্স উইং পাখি। আমি গুছিয়ে বসে পড়াতে তারা কাকলি স্টপ করে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে শ্যানানডোয়া…