মাজাহারুল ইসলাম

  • বিপরীত প্রবৃত্তির সংবেদনশীল সমন্বয়ক

    আবুল মনসুর ১৯৯৫ সালে প্রথম বিলেত ভ্রমণে গিয়ে অনেক কষ্ট করে স্টোনহেঞ্জ দেখতে গিয়েছিলাম। মানুষের আদিতম বৃহৎ স্থাপত্য-প্রয়াসের অন্যতম এ-স্থাপনা বইয়ের পাতার ছবিতেই তার সমুন্নত গরিমা ও রহস্যের ঘেরাটোপ দিয়ে তৈরি করে রেখেছিল এক ধরনের ব্যতিক্রমী আকর্ষণ। সল্সবেরি অঞ্চলের সমতল পটভূমির মাঝখানে আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে নির্মিত বিশাল নিরেট পাথরের মণ্ডলাকারে পরিকল্পিত…

  • কাছ থেকে দেখা

    ইয়াফেস ওসমান স্থপতি মাজহারুল ইসলামের নাম ও কাজের সঙ্গে পরিচিত নন, এমন স্থপতি বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। স্বদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের বহু দেশেও তিনি ছিলেন একজন সুপরিচিত নাম। আমরা তখন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য অনুষদের উঁচু ক্লাসের ছাত্র। ইসলাম সাহেব মাঝে মাঝে ফ্যাকাল্টিতে আসতেন লেকচার দিতে। তাঁর জ্ঞানগর্ভ ফিলসফিক্যাল ভাষা আমাদের অনেকের কাছেই দুর্বোধ্য বলে মনে…

  • চারু ও কারুকলা ইনস্টিটিউটে

    রফিকুন নবী রেসকোর্স ময়দানের উত্তর-পশ্চিম কোণে জিমখানা ক্লাবের দালানকোঠা। ওখানটা ঘোড়দৌড়-রেসের স্টার্টিং পয়েন্ট। তার পশ্চিম পাশে রাস্তাঘেঁষে ছড়িয়ে থাকা খোলা জমি (এখানটায় এখন জাতীয় জাদুঘর)। জমির মধ্যিখানে একটি বড় পুকুর। ঢাকার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নওয়াবদের বাগান। সেখানে বিশাল একটি অশথ বৃক্ষের কাছাকাছিতে ভগ্নপ্রায় জরাজীর্ণ একটি পুরনো দালান, ‘কাটরা’ সদৃশ গেট মতন। তাতে ছোট ছোট চায়ের দোকান…

  • সৃষ্টি ও স্রষ্টা : বাংলাদেশের প্রথম আধুনিক স্থাপত্য

    সৃষ্টি ও স্রষ্টা : বাংলাদেশের প্রথম আধুনিক স্থাপত্য

    সত্য ও সুন্দরের প্রতি আসক্তি মাজহারুল ইসলামের জীবন-সংগীতের মূল সুর

  • ত্রিমাত্রিক বাস্তু-উন্নয়ন চিন্তক

    নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের পথপ্রদর্শক মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় বা সান্নিধ্যলাভের অনেক আগেই আমি তাঁর স্থাপত্যকৃতিকে অভিজ্ঞতায় ধারণ করার সুযোগ পেয়েছিলাম, যেমন পেয়েছিলেন আমার মতো আরো অনেকে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ক্লাসের ছাত্র হয়ে ঢুকি ১৯৫৮ সালে। আমাদের ভূগোল বিভাগটি ছিল কার্জন হল সংলগ্ন একই স্টাইলে নির্মিত ছোট একটি দোতলা ভবনের একতলায়।…

  • গৃহ ও গৃহীর স্থপতি

    বুলবন ওসমান মজুভাই, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম, আমার চেয়ে এক প্রজন্ম বড় হবেন; কিন্তু দেশ বিভাগের ঘটনাচক্রে তিনি ভাই হয়ে গেছেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ হলে বাবা শেখ আজিজুর রহমান ওরফে সাহিত্যিক শওকত ওসমান কলকাতা ত্যাগ করে যোগ দেন চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজে। আর মজুভাইয়ের বাবা চট্টগ্রামবাসী অধ্যাপক ওমদাতুল ইসলামকে বাবা ডাকতেন ভাইসাহেব, তাই মাজহারুল ইসলাম…

  • শুদ্ধাচারী মাজহারুল ইসলামকে সালাম

    বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ঢাকাকে স্থাপত্যের দিক থেকে আধুনিক করেছেন মাজহারুল ইসলাম। পাকিস্তান আমলের কিংবা কোম্পানি আমলের ভারি, ওজনদার আলঙ্কারিক স্থাপত্যের জায়গায় তিনি রোদ ও হাওয়ার ভেতর গড়েছেন তাঁর কাজ। তাঁর বিভিন্ন নির্মাণ : গৃহ হোক, ইনস্টিটিউট হোক এবং বহুব্যাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় হোক, সব ফেলে তিনি মিলিয়ে দিয়েছেন রোদ ও হাওয়ার মধ্যে তাঁর বিভিন্ন নির্মাণ। এসব নির্মাণ…

  • মাজহারুল ইসলাম : চলে যাবার পর

    মাজহারুল ইসলাম : চলে যাবার পর

    মেঘদলের ওই গম্ভীরতা আমি অনুভব করতাম তাঁর সাক্ষাতে।

  • নিজের মতামতে অনড় একজন নিভৃতচারী

    স্ট্যানলি টাইগারম্যান ১৯৬০-এর সেপ্টেম্বর, আমি ক্লান্ত। বিগত শিক্ষাবছর (ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার স্নাতক থিসিসের বছর) আমাকে কাঁদিয়েছে। আসলে মাস্টার্স প্রোগ্রাম আবারো একইভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ক্লাসে নতুনদের আগমন নিশ্চিত করল যে, বছরটি ভালো যাবে না। অধিকাংশই, যাঁদের আমি বলতে পারি ‘শ্রেষ্ঠ ফসল’, তাঁরা কেউই সেরকম নন। তখন ব্রিটিশ টুইডের স্যুটপরিহিত এক ভদ্রজনের…

  • মাজহারুলদা

    সন্তোষ ঘোষ মাজহারুলদা চলে গেলেন, খবরটি পরে পেলাম। মর্মাহত হয়ে অনেক স্মৃতি এসে গেল। মাজহারুল ইসলাম আমার চেয়ে দশ-বারো বছরের বড় ছিলেন বয়সে। আমরা দুজনেই বিখ্যাত বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়েছি। মাজহারুলদা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলেন, পরে আমেরিকায় স্থাপত্যবিদ্যা নিয়ে পড়েন। তাঁর সহপাঠী বন্ধু বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি বিশুদা নামেই সর্বজনবিদিত ছিলেন তিনিও তাই করেছিলেন। মাজহারুলদা ছিলেন ঢাকায়…

  • স্মৃতি অম্লান

    মীর মোবাশ্বের আলী এ অঞ্চলে স্থাপত্যের ভুবনে এক কিংবদন্তির নায়ক মাজহারুল ইসলাম। ১৯১২ সালের ১৫ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। যদিও তিনি বিগত দুই দশক ধরে স্থাপত্য পেশায় সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত ছিলেন না, তবু তাঁর তিরোধান স্থপতিকুলের জন্য এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। একটা পরিবারে এক বর্ষীয়ান গুরুজনের অবস্থান বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং মনে…

  • সৃষ্টি ও দেশাত্মবোধের সম্মিলন

    শামীম আমিনুর রহমান ১৯৮০ সালের প্রথম দিকের কোনো একদিন হঠাৎ করেই নামটি শুনেছি। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে স্থাপত্যে ভর্তি হওয়ার আশায় বুয়েটে গিয়েছি। স্থাপত্য ফ্যাকাল্টির নিচতলার খোলা পাকা জায়গাটিতে বসে আলাপ করছিলাম কোনো জ্যেষ্ঠ স্থাপত্যের ছাত্রের সঙ্গে। পরামর্শ চাইছিলাম তাঁর কাছে ভর্তি-সংক্রান্ত বিষয়ে। নানা কথার ফাঁকে বললেন, আমি যেন এদেশে কাজ করেছেন এমন কয়েকজন স্থপতি…