ক্রোড়পত্র

  • প্রসঙ্গ : গোলাম মুরশিদ-সম্পাদিত বিদ্যাসাগর

    প্রসঙ্গ : গোলাম মুরশিদ-সম্পাদিত বিদ্যাসাগর

    পিয়াস মজিদ ১৯৭০-এর ডিসেম্বরে অর্থাৎ প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে গোলাম মুরশিদের সম্পাদনায় প্রকাশ পায় বিদ্যাসাগর সার্ধশতবর্ষ স্মারকগ্রন্থ বিদ্যাসাগর। ২০২০ সালে বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে যখন এ-আলোচনা লিখছি তখন আমাদের হাতে রয়েছে ফেব্রুয়ারি ২০১১-তে শোভাপ্রকাশ-প্রকাশিত এই গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ। উৎসর্গিত হয়েছে ‘বিদ্যাসাগরের পুণ্যস্মৃতির উদ্দেশে।’ অন্তর্ভুক্ত লেখক যথাক্রমে – আহমদ শরীফ, সুনীলকুমার মুখোপাধ্যায়, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, রমেন্দ্রনাথ ঘোষ, মুখলেসুর…

  • বিদ্যাসাগর-বঙ্কিম : তুলনামূলক বিচার

    বিদ্যাসাগর-বঙ্কিম : তুলনামূলক বিচার

    এম আবদুল আলীম উনিশ শতকের বাঙালি-সমাজে গভীর প্রভাবসঞ্চারী দুই মনীষী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-৯১) এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-৯৪)। আধুনিক জীবনবোধ তথা রেনেসাঁসের আলোয় আলোকিত হলেও পাণ্ডিত্য, সৃজনশীলতা, দেশ-কাল-সমাজভাবনায় দুজন ছিলেন দুই মেরুর বাসিন্দা। একজন ব্রাহ্মণ-সন্তান হয়েও ব্রাহ্মণ্য অনুশাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন খড়্গহস্ত; আরেকজন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এবং চিন্তা-মননে আধুনিক হলেও ছিলেন সমাজের শাশ্বত মূল্যবোধে বিশ্বাসী এবং সময়…

  • আগুনটা আজো সমাজ-আশ্রয়ী

    আগুনটা আজো সমাজ-আশ্রয়ী

    দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় ‘নন্দন কানন’ থেকে মানুষটা হেঁটে চলেছেন। মাথার ওপর অমলিন নীল আকাশ। পায়ের নিচে লাল মাটির বুকে জুতোর মশমশ। চাদর জড়ানো বুকের নিচে কত যে আঘাত – ক্রুশের চিহ্ন! দৃঢ়মনস্ক ঈশ্বর পথাশ্রয়ী। দূরে দাঁড়িয়ে দেহাতি মানুষগুলোর ডাক্তার দেবতা। বারে বারে আঘাতও তাঁর পরোপকারে বাধা হয়নি।     পায়ে বিঁধেছে কাঁটা         ক্ষতবক্ষে পড়েছে রক্তধারা         …

  • বিদ্যাসাগরের প্রশ্নে

    বিদ্যাসাগরের প্রশ্নে

    শহীদ ইকবাল তখন আর এখনকার কাল এক নয়। দুশো বছর পেরুল। বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ, কাল গুনলে দিবস-রজনীর মাপে খুব বেশি সময় নয় হয়তো। কিন্তু মানবজীবনের হিসাবে তা নেহায়েত কম বলি কী করে! তবে প্রশ্ন, এতদিন পর কেন বিদ্যাসাগর? তাঁকে কী শ্রেষ্ঠ মানুষ ভেবে, একপ্রকার বিশাল দেবমূর্তি বানিয়ে, ভক্তির ভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য – নাকি তাঁর কর্মপরিধি, কর্মের…

  • বিদ্যাসাগরীয় নারীবাদ

    বিদ্যাসাগরীয় নারীবাদ

    ফারজানা সিদ্দিকা ১৮৫০-এ সর্ব্বশুভকরী পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় বিদ্যাসাগরের ‘বাল্যবিবাহের দোষ’। সেখানে সৃষ্টিকর্তা যে জগতের সকল প্রাণীর মধ্যেই নারী ও পুরুষ সৃষ্টি করে সমতা বিধান করেছেন এবং মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই যে বিবাহের প্রচলন ছিল না, সে-বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। বিবাহের উৎস সম্পর্কে লিখেছেন, ‘জগৎসৃষ্টির কত কাল পরে মনুষ্যজাতির এই বিবাহসম্বন্ধের নিয়ম চলিত হইয়াছে, যদ্যপি…

  • উনিশ শতকের মিথ ও বিদ্যাসাগর পাঠ

    উনিশ শতকের মিথ ও বিদ্যাসাগর পাঠ

    আহমেদ মাওলা উনিশ শতক আমাদের বর্তমানতার মধ্যে কীভাবে, কতটা তাজাভাবে, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ভাব-প্রভাব নিয়ে হাজির হয়েছে, সেটা একটু দেখা দরকার। উনিশ শতক সম্পর্কে যে মেটান্যারেটিভস প্রচারিত-প্রতিষ্ঠিত, তা নিয়ে ঢাকার বাঙালি সমাজে কোনো ক্রিটিক্যাল রিডিং চোখে পড়ে না। কাণ্ডজ্ঞান বা বুদ্ধিবৃত্তিক অভিনিবেশ দিয়েও যে পাঠ বা চর্চা করা হয়েছে, তা নয়। কলকাতায় বরং উপনিবেশ-উত্তর সময়ে কিছু জিজ্ঞাসা,…

  • বিদ্যাসাগর : নিঃসঙ্গ প্রমিথিউস

    বিদ্যাসাগর : নিঃসঙ্গ প্রমিথিউস

    রাজীব সরকার ইউরোপীয় রেনেসাঁসের যুগকে অভিনন্দন জানিয়ে এঙ্গেলস লিখেছিলেন – ‘আজ পর্যন্ত মানুষ যা দেখেছে তার মধ্যে এটি সবচেয়ে প্রগতিশীল বিপ্লব, এ যুগের প্রয়োজন ছিল অসাধারণ মানুষের এবং তার সৃষ্টিও হয়েছিল – যাঁরা ছিলেন চিন্তাশক্তি, নিষ্ঠা, চরিত্র, সর্বজনীনতা এবং বিদ্যায় অসাধারণ।’ বুর্খহার্ট তাঁর রেনেসাঁস সংক্রান্ত বিখ্যাত বইয়ে রেনেসাঁসকে ব্যক্তিপ্রতিভার বিস্ফোরণের যুগ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। উনিশ…

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়

    ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়

    তারিক মনজুর শিশু সহজাতভাবেই মুখের ভাষা আয়ত্ত করে ফেলে; অর্থাৎ কোনো রকম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই মাতৃভাষায় কথা বলতে শিখে যায়। কিন্তু ভাষার পঠন ও লিখন দক্ষতা আনুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে ঘটে। এই পঠন ও লিখন দক্ষতা যত দ্রুত তৈরি করা সম্ভব হয়, তত দ্রুত শিক্ষার্থীকে কার্যকরভাবে অন্য বিষয়ের পাঠের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যায়। বিশ্বজুড়ে এটি বড়…

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও আদালত খান : বেতালপঞ্চবিংশতি বনাম BETAL PUNCHABINSATI

    ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও আদালত খান : বেতালপঞ্চবিংশতি বনাম BETAL PUNCHABINSATI

    জ্যোৎস্না চট্টোপাধ্যায় ঊনবিংশ শতকের পরাধীন ভারত। এরই মধ্যে নবজাগরণের তরঙ্গে জেগে উঠেছিল বিবিধ চিন্তন। শিক্ষা, সমাজসংস্কার, নারীমুক্তির ভাবনায় ব্যাপৃত সমাজের একদল মানুষ দীর্ঘদিন পালিত অন্ধ কুসংস্কার ও প্রথা ভেঙে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর; তাঁর জন্ম ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ খ্রিষ্টাব্দে মেদিনীপুর (তৎকালীন হুগলী জেলা) জেলার বীরসিংহ গ্রামে। পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মাতা…

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর : একটি সাধারণ পর্যালোচনা

    ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর : একটি সাধারণ পর্যালোচনা

    সৌভিক রেজা অধ্যাপক অশোক সেন মনে করতেন যে, ‘নানা গরমিলে শিক্ষিতজনের আগাপাশতলায় স্ববিরোধের অভাব নেই।’ কথাটি খুবই সত্যি বলে মনে হয়। সেই অশোক সেনই বিদ্যাসাগর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘V idyasagar loved his ego responsibly, conceived of it as a social task, and was greedless in its pursuance; such were his bonafides.’ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘দয়ার সাগর’ নামেও…

  • বাংলায় ব্রিটিশ শিক্ষা-তৎপরতা এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান

    বাংলায় ব্রিটিশ শিক্ষা-তৎপরতা এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান

    মহীবুল আজিজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চার বছর বয়সে কলকাতা থেকে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয় – চার্লস লুসিংটনের দ্য হিস্ট্রি, ডিজাইন অ্যান্ড প্রেজেন্ট স্টেট অব দ্য রিলিজিয়াস, বেনেভোলেন্ট অ্যান্ড চ্যারিটেবল ইনস্টিটিউশন্স, ফাউন্ডেড বাই দ্য ব্রিটিশ ইন ক্যালকাটা অ্যান্ড ইট্স ভিসিনিটি। ততদিনে বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভূমি সংস্কারের পরিণতি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে জমিদারশ্রেণির প্রজন্মান্তর ঘটে গেছে। বস্তুত ভারতবর্ষে…

  • ঔপনিবেশিক শিক্ষা-প্রশাসন ও বিদ্যাসাগরের যুদ্ধ

    ঔপনিবেশিক শিক্ষা-প্রশাসন ও বিদ্যাসাগরের যুদ্ধ

    বিশ্বজিৎ ঘোষ উপনিবেশিত বাংলাদেশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (১৮২০-৯১) জন্ম, বেড়ে ওঠা, জীবনসাধনা এবং মৃত্যু। হুগলির অজপাড়াগাঁয়ে জন্ম নিলেও তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত হয়েছে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশের শাসনাধীন ভারতবর্ষের রাজধানী শহর কলকাতায়। তাঁর কর্মস্থল প্রধানত ছিল কলকাতা, চাকরি করতেন কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ম (১৭৮১) এবং সংস্কৃত কলেজে (১৮২৪), চাকরি-সূত্রে সম্পর্কিত ছিলেন ঔপনিবেশিক প্রশাসনের অনেকের সঙ্গে। ঔপনিবেশিক শাসনাধীনে চাকরি…