ধারাবাহিক উপন্যাস

  • কাল

    কাল

    ১ দেবকুমার ঠাকুরকে লোকে বলে দেবু ঠাকুর। গেল বর্ষায় সেই দেবু ঠাকুরের সঙ্গে রতনপুর গ্রামটিও খুন হয়ে গেল। খুনের রাতে গ্রামের লোকজন একত্র হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করছিল। চারদিককার বাড়ি থেকে ডিঙিনাও, কোষানাও, হারিকেন, কুপিবাতি আর টর্চলাইট নিয়ে লোকজন ছুটে এসেছিল। গাছপালা-ঝোপজঙ্গল-বাঁশঝাড়ে ঘুটঘুটে অন্ধকার ঠাকুরবাড়ি কিছুটা আলোকিত হয়েছিল। সেই আলোয় দেখা গেল বড় ঘরের দরজায় পড়ে আছেন…

  • জলের অক্ষরে লেখা   

    জলের অক্ষরে লেখা   

    পর্ব : ২১ ঢাকায় ফিরে আরিয়ানা জানালো, বাকি কয়েকদিন আর বাইরে বেরোতে চায় না সে। বাসাতেই থাকবে। এই বাসা আর আরিয়ানার বাড়ির মধুর স্মৃতি নিয়ে সে ফিরে যেতে চায়। তাই হলো। আরিয়ানা বাসার প্রতিটি রুমে ঘুরে বেড়ালো, খুঁটিয়ে দেখলো এটা-ওটা সবকিছু – যেন নিজের স্পর্শ রেখে যেতে চায় সর্বত্র, চাচির কাছে বসে বাংলা রান্না শিখলো,…

  • জলের অক্ষরে লেখা   

    জলের অক্ষরে লেখা   

    পর্ব : ১৯ নাস্তার টেবিলে বসে ঋভু খেয়াল করলো, দুজনেই বেশ চুপচাপ। এর মধ্যে কী হলো আবার? মা-মেয়েতে মনোমালিন্য? নাকি অন্য কিছু? কিছুক্ষণ পর সোফিয়া বললো, একটা কথা জিজ্ঞেস করি বাবা? – করো। – এই দেশে কাজের সুযোগ কেমন? – কাজ মানে? – মানে আমি যদি পড়াশোনা শেষ করে এখানে আসি তাহলে কাজ পাবো? –…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ১৮ দিনগুলো যেন দ্রুত যাচ্ছে এখন। অংশু হঠাৎ করেই কাজের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি শুক্রবার যাওয়ার কথা থাকলেও দুদিন পরপরই মানিকগঞ্জ যাচ্ছে ও। ঋভুও সুযোগ পেলেই সঙ্গী হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেউথা থেকে টিন-কাঠের তৈরি দুটো রেডিমেড ঘর এনে জমির এক পাশে স্থাপন করা হয়েছে। একটা শ্রমিকদের জন্য, অন্যটা অংশু এবং শুভর জন্য, যখন যে…

  • জলের অক্ষরে লেখা 

    জলের অক্ষরে লেখা 

    পর্ব : ১৭ অবন্তির যাওয়ার দিন ঘনিয়ে এলো। তার আগে একদিন অংশুর বাসায় আড্ডা হলো খুব। বিকেলেই সবাই হাজির হয়ে গিয়েছিল। ঋভু অফিস থেকে আগেভাগে বেরিয়ে অবন্তিকে নিয়ে এসেছিল। সন্ধ্যার পর সাততলার গেস্টরুমে পানাহার আর আড্ডা চললো ঘণ্টাতিনেক ধরে। তারপর নিচে নেমে ডিনার সারলো সবাই। অপলা নিজেই রেঁধেছে আজকে। দেশি কই মাছের দোঁপিয়াজি আজকের প্রধান…

  • জলের অক্ষরে লেখা   

    জলের অক্ষরে লেখা   

    পর্ব : ১৬ আড্ডা আর জমলো না। টুকিটাকি কথাবার্তা হলো, একটু-আধটু দুষ্টুমি, ডিনার শেষ হলো প্রায় নিঃশব্দে। ঠিক হলো, অংশু আর অপলা বাসায় চলে যাবে, ঋভু অবন্তিকে নামিয়ে দিয়ে আসবে। বিদায়ের সময় অপলা বললো, কালকে আপনারা আমার বাসায় আসেন। কই মাছের ভুনা খাওয়াবো। – কালকে না। আমার অন্য একটা কাজ আছে। বললো অবন্তি। – তাহলে…

  • জলের অক্ষরে লেখা   

    জলের অক্ষরে লেখা   

    পর্ব : ১৫ অংশু আর অবন্তির দেখা হলো পরের দিন, অংশুর অফিসে। অবন্তি বেশ গম্ভীর, মনে হচ্ছে কোনোকিছু নিয়ে খুব চিন্তিত। সবসময় যে হাসি-আনন্দ-উচ্ছলতায় মেতে থাকে, তার এই গাম্ভীর্য মোটেই ভালো লাগছে না। অংশু বললো, কী হয়েছে তোর? – কই কিছু হয়নি তো! – তাহলে এরকম ঝিম মেরে আছিস কেন? – মাথার ভেতরে সব জট…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ১৪ সারাদিন অবন্তির সঙ্গে যোগাযোগ হলো না বলে মন খারাপ লাগছিল ঋভুর। কথা তো হয়ইনি, এমনকি মেসেজেরও উত্তর দেয়নি অবন্তি। আজকে ও ব্যস্ত থাকবে, জানে ঋভু। তাই বলে এতটা? অংশুও সারাদিনে একবার খবর নিল না! অবশ্য ছুটির দিনে সেও নানা পারিবারিক বিষয়-আশয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ওদের জীবন আমার থেকে আলাদা, অন্যরকম – ভাবলো…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ১৩ অবন্তি কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল জানে না, সকালে ঘুম ভাঙলো আফসানার ডাকাডাকিতে। এই সুসান, ওঠো তো। অনেক বেলা হয়েছে, ওঠো। অবন্তি ঘুম-জড়ানো কণ্ঠে বললো, এত ভোরে ডাকাডাকি শুরু করেছ কেন ভাবি? কী হয়েছে?  ভোর না, দশটা বাজে। ওঠো। তোমার জন্য না খেয়ে বসে আছি। অবন্তি উঠে বসলো। শরীর জুড়ে কেমন এক অদ্ভুত অনুভূতি।…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

      পর্ব : ১২ ঋভু আর অবন্তি চলে যাওয়ার পর কেমন যেন খালি খালি লাগছিল বাসাটা, এই অসময়ে কী যে করা যায় বুঝতে পারছিল না অংশু। সাধারণত এরকম ভরসন্ধ্যায় বাসায় ফেরে না সে, ফেরে একটু দেরি করে। আর বৃহস্পতিবার রাত হলে তো কথাই নেই। এখন অবশ্য আবার বেরিয়ে পড়া যায়, অপলাকে নিয়ে রাতের বেলা বের হওয়া…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ১১ অবন্তিকে বিদায় দিয়ে ফের বেডরুমে এলো ঋভু। বিছানাটা এলোমেলো হয়ে আছে। মুচকি একটু হাসলো সে, অনেক ঝড় বয়ে গেছে বেচারা বিছানার ওপর দিয়ে, বহুদিন পর। থাকুক, ওভাবেই থাকুক আজকে। ঘর জুড়ে একটা সুগন্ধ, অবন্তির শরীরের গন্ধ, থাকুক ওটাও। সে এলোমেলো বিছানাতেই সুগন্ধির ভেতরে ঘুমাবে আজ। কিন্তু এখন তো ঘুম আসবে না, কী…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ১০ আড্ডা আর তেমন জমলো না। হাসি-ঠাট্টা-তামাশা-দুষ্টুমি সবই হলো, কিন্তু ঋভু ঠিক অংশ নিতে পারলো না। সেও হাসলো বটে, কথার পিঠে কথাও বললো, কিন্তু বারবার মনে হতে লাগলো, এসবের কোনো মানে নেই। অবশ্য কিসেরই বা মানে আছে? এই প্রশ্ন মনে এলে কোনো উত্তর খুঁজে পেল না নিজের ভেতরে। সে বরাবরই বলে কম, শোনে…