শ্রদ্ধান্জলি

  • অচেনাবৃত্তের চেনা সন্ধ্যা

    অচেনাবৃত্তের চেনা সন্ধ্যা

    সংগীতজগতের বিস্ময় গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে ‘কিন্নরকণ্ঠী’ বলে ডাকতেন সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তারাশঙ্করের লেখা গান ‘মধুর মধুর বংশী বাজে কোথা কোন কদমতলিতে’ সন্ধ্যার কণ্ঠের অনবদ্য নিবেদনে সংগীতের দুনিয়ার এক চিরন্তন সম্পদ হয়ে আছে। গান গাইবার ক্ষেত্রে, গীতিকার, সুরকার, যন্ত্রশিল্পী প্রত্যেকের সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতেন বলেই হয়তো তাঁর প্রতিটি গান যুগ যুগ ধরে শ্রোতার হৃদয়ে একটা…

  • কবি কাজী রোজী

    কবি কাজী রোজী

    মাত্র কয়েকদিন আগে প্রয়াত হয়েছেন কবি কাজী রোজী। বেশ কিছু সময় শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। তাঁর মেয়ে কবি সুমী সিকান্দার এসব তথ্য আমাদের জানিয়েছেন। কবিতার জন্য তিনি একুশে পদক অর্জন করেন। এর আগে তিনি কবিতার জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। কবি কাজী রোজীকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম আমি। বহুদিনের চেনাজানা। হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বার সময় থেকে। হয়তো এরও…

  • চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হক

    চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হক

    শিল্পী মাহমুদুল হক, এদেশের একজন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী এবং প্রিন্টমেকার। গত ১১ই জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাদের ছেড়ে চির বিদায় নেন। আমি আমার একজন ঘনিষ্ঠজন এবং বন্ধুকে হারাই। ১৯৬৩ সালে আমরা চারুকলায় একসঙ্গে ভর্তি হয়েছিলাম। মাহমুদের একটা বড় গুণ ছিল, খুব সহজেই যে কাউকে আপন করে নেওয়ার আশ্চর্য ক্ষমতা। যতদিন গেছে আমরা…

  • মাহমুদুল হক : তাঁর বিমূর্ত শিল্পভুবন

    মাহমুদুল হক : তাঁর বিমূর্ত শিল্পভুবন

    বাংলাদেশের সমকালীন বিমূর্ত শিল্পকলার অন্যতম প্রধান প্রতিনিধি শিল্পী মাহমুদুল হক ষাটের দশকের শেষার্ধে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি তাঁর চিত্রকলায় যেমন সমকালীন বৈশিষ্ট্যকে সার্থকভাবে ধারণ করেছেন, তেমনি যুগপৎ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ভাস্কর একটি শিল্পভুবন নির্মাণেও সমর্থ হয়েছেন। মাহমুদুল হক পেইন্টিং এবং ছাপচিত্র – উভয় মাধ্যমে বিমূর্তরীতিকে সার্থকভাবে ব্যবহার করেছেন। তিনি তাঁর অধিকাংশ তেলরঙের ছবিতে প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি করেছেন…

  • বাংলা নাটকের বঙ্গবালা : শাঁওলী মিত্র

    বাংলা নাটকের বঙ্গবালা : শাঁওলী মিত্র

    বাবার মতোই। অবিকল নিঃশব্দে চলে গেলেন আরেক নারী শাঁওলী মিত্র। ইচ্ছাপত্র করে জানালেন, একান্ত গোপনে যেন হয় তাঁর শেষযাত্রা। থাকে না যেন কোনো অনুগামী। স্পর্শ করতে পারে না যেন তাঁর শেষযাত্রাকে কোনো মিডিয়ার আলো। তাঁর পিতা প্রবাদপ্রতিম অভিনেতাও ঠিক তাই করেছিলেন। সত্যিই তো কয়েকজন অনুমোদিত অতিব্যক্তিগত ছাড়া স্পর্শ করতে পারেননি তাঁর শেষযাত্রাকে। শুধু মৃত্যু নয়,…

  • শাঁওলী মিত্র : তাঁর অভিনয়

    শাঁওলী মিত্র : তাঁর অভিনয়

    প্রাক্কথন বাংলা নাটকের ঐতিহ্য ও গতিশীলতায় শাঁওলী মিত্র এক স্বতন্ত্র অধ্যায়। আধুনিক বাংলা নাটকের ইতিহাস যদি ১৮৬০- ৭০-এ রচিত নীলদর্পণ, সধবার একাদশী, শর্মিষ্ঠা, একেই কি বলে সভ্যতা ইত্যাদির মধ্যে নিহিত দেখি, অথবা ১৮৭২-এ গিরিশ চন্দ্র ঘোষের নীলদর্পণ অভিনয়ের পেশাদারিত্ব দিয়েই বিবেচনা করি, এর গতিজাড্য প্রায় এক শতাব্দী পর্যন্ত ব্যাপ্ত ছিল। আমরা জানি, ১৭৯৫-এর ২৭শে নভেম্বর…

  • শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতা ও কাব্যবোধ

    শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতা ও কাব্যবোধ

    তাঁর প্রয়াণের প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় আগে কবি শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘তথাকথিত পাপবোধ আমার নেই। যে কাজ অপরের অনিষ্ট করে তা অপরাধ। ধর্মীয় আচরণকে আমি অবহেলা করতে চাই, যে-কারণে আমার আঙুলে আংটি নেই, আমার গলা থেকে পইতে পরিত্যক্ত আর কিছুকাল বোহেমিয়ান জীবনযাপন করার পর অবশেষে একজন অসবর্ণ নারীর পাণিগ্রহণ করেছি।’ আর তার সঙ্গে তিনি…

  • ভাষাসংগ্রামী রফিকুল ইসলাম স্মরণে

    ভাষাসংগ্রামী রফিকুল ইসলাম স্মরণে

    রফিকুল ইসলাম। ভাষাসংগ্রামী রফিকুল ইসলাম। জাতীয় অধ্যাপক ডক্টর রফিকুল ইসলাম। দীর্ঘ ছয় দশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। আমাদের সংস্কৃতির, আমাদের সাহিত্যের, আমাদের জাতিসত্তার অনন্য এক ঠিকানা রফিকুল ইসলাম। আজ এই বিপন্ন মুহূর্তে স্যারকে নিয়ে কিছু লিখতে আমার কলম চলছে না। বিগত ১৯শে নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিতব্য স্মারক সংকলনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুল’…

  • হাসান আজিজুল হক : স্মৃতিতে সৃজনে অম্লান

    হাসান আজিজুল হক : স্মৃতিতে সৃজনে অম্লান

    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আমার সমবয়সী। এর কোলঘেঁষে পৈতৃক বসতভিটে, কাজলা তার নাম। দু-চোখ ভরে দেখেছি ও ভালোবেসেছি তরতর করে বেড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটি। স্বাধীনতার পর উপাচার্য শিক্ষাবিদ-সাহিত্যিক খান সারওয়ার মুরশিদ কয়েকজন গুণী শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেন। কবি আতাউর রহমান, হাসান আজিজুল হক ও আবুবকর সিদ্দিক তাঁদের অন্যতম। কবি আতাউর রহমান ইহকালে নেই। সিদ্দিক স্যার শয্যাশায়ী। কদিন আগে…

  • হাসান আজিজুল হকের মুক্তিযুদ্ধের গল্প

    হাসান আজিজুল হকের মুক্তিযুদ্ধের গল্প

    বাংলা কথাসাহিত্যের ইতিহাসে ছোটগল্পকার হিসেবে হাসান আজিজুল হকের অবদান অসামান্য। তিনি আমাদের ছোটগল্পে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অনন্য রূপকার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। ‘তারাশঙ্কর দ্বিতীয়বার পড়তে চাই না, কিন্তু মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সারাজীবন বারবার পড়বো।’ কথাটি বলেছেন বর্তমান সময়ের খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক (জন্ম ১৯৩৮, মৃত্যু ২০২১)। উক্তিটি থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে, তাঁর…

  • হাসানের আত্মজ্ঞান ও আত্ম-উপলব্ধির সীমানা

    হাসানের আত্মজ্ঞান ও আত্ম-উপলব্ধির সীমানা

    তাঁর গল্প-উপন্যাসের মতো অসীম রায়ের ডায়েরিও বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তো সেই ডায়েরিতে ষাটের দশকের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের তরুণ লেখকদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে অসীম রায় প্রশংসা করে হাসান আজিজুল হকের কথা লিখেছিলেন। বেশ জোরের সঙ্গেই তিনি বলেছিলেন যে, হাসানের ‘ভাষার উপর দখলটা বেশ ভালো।’ খুশিও হয়েছিলেন এইটা জেনে যে, তরুণ হাসান তো ‘আসলে বর্ধমানের…

  • হাসান আজিজুল হকের হেমিংওয়ে চর্চা ও অনুবাদ

    হাসান আজিজুল হকের হেমিংওয়ে চর্চা ও অনুবাদ

    মার্কিন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আর্নেস্ট মিলার হেমিংওয়ের (জুলাই ২১, ১৮৯৯ – জুলাই ২, ১৯৬১) জন্ম শিকাগো নগরের শহরতলির ছোট শহর ওক পার্কে। বাবা ক্লেয়ারেন্স এন্ডমন্ডস হেমিংওয়ে পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। তাঁর ছিল দুটি নেশা – শিকার করা আর মাছ ধরা। তাঁর মা গ্রেস হল ছিলেন চার্চ-গায়িকা। বাবা-মা দুজনই চাইতেন হেমিংওয়ে তাঁদের মতো হোক। ফলে বাবা কিশোর…