অক্ষমতা ঢাকতে

প্রবালকুমার বসু

নিজের অজান্তেই মানুষ আবিষ্কার করেছিল মুখোশ

বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনমতো যাতে নিজেকে আড়াল করতে পারে –

মানুষের প্রতিটি সম্পর্কই সেই থেকে মুখোশের সঙ্গে

আড়ালে কী আছে আমরা জানি না

 

যে-মেয়েটির ঠোঁটে কিছুক্ষণ আগে চুমু খেলাম

সে-ও কি মুখোশ পরে ছিল?

মুখোশ কেন মানুষকেই পরতে হয় শুধু

 

অ্যাকোয়ারিয়ামে দুটো গোল্ড ফিশ ঠোঁটে ঠোঁট ঘষছে

ওরা নিশ্চয়ই মুখোশ পরে নেই

 

বাড়ির পাশে একটা নয়নতারা গাছ

তার ডালে-ডালে ফুটে উঠছে ফুল

ওই ফুলগুলোকে নিশ্চয়ই বিশ্বাস করা যায়

নাকি ফুলের আড়ালে লুকিয়ে থাকে অন্য কোনো ফুল

যাকে আমরা দেখতে পাই না?

 

একটা দোয়েল পাখি সকাল থেকে ডাকছে

তার ঘন গভীর চোখে নির্জন দুপুরের মতো মমতা

পাখিটির গোপন করার কিছু নেই

মুখোশ খুলে রাখলে মানুষের চোখেও এই মমতা ধরা পড়ে

তবু মানুষকেই কেন গোপন করতে হয় অনেক কিছু?

 

মানুষ কি জানে কার কাছ থেকে গোপন করার এই প্রয়াস?

এই অবিচ্ছিন্ন পৃথিবীতে কারো কিছু গোপন করার নেই

শুধু মানুষের ছাড়া

যা তাকে কিছুতেই সহজ থাকতে দেয় না

নিজের এই অক্ষমতা ঢাকতেই কি

সবসময় মুখোশের প্রয়োজন হয় মানুষের?