‘Men are not afraid of things, but of how they view them.Õ― Epictetus
শিল্পী মারিনা আব্রামোভিচকে একবার একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তিনি নারীবাদী কি না। তিনি সরাসরি উত্তর দিয়েছিলেন – না, তিনি তা নন। তবে তিনি কী? মারিনা আব্রামোভিচকে ‘পারফর্মিং আর্টের গ্র্যান্ডমাদার’ বলা হয়। মারিনা খুব সোজাসাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করেন এবং আমরা জানি একজন আপাদমস্তক সৎ মানুষই তাঁর মুখে ও মনে এক হতে পারেন। মারিনা শুধু কথায় নন, কাজেও অসম্ভব সৎ এবং সাহসী একজন শিল্পী। মারিনার জন্ম ১৯৪৬ সালের ৩০ নভেম্বরে ইউরোপের সার্বিয়ার বেলগ্রেদে। ৭৪ বছর বয়সী এই শিল্পী আজো তারুণ্যে ভরপুর। সমসাময়িক উত্তরাধুনিক শিল্পকলার জগতে তিনি এখনো কর্মরত রয়েছেন। শিল্পী মারিনার হাত ধরেই পারফর্মিং আর্ট আজকের অবস্থানে এসেছে। পারফর্মিং আর্ট শুধু নয়, তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করেছেন, এমনকি আত্মজীবনীও লিখেছেন, সমগ্র শিল্পকলার ইতিহাসে তাঁর অবদান অপরিসীম।
শিল্পকলার মাধ্যমে শারীরিক সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করে, মানসিক শক্তি পরিবর্ধন করার মাধ্যমে সেই সীমাবদ্ধতাগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে কর্মোদ্যমী এই শিল্পী ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছেন। মৃত্যুঞ্জয়ী হওয়া সম্ভব না হলেও মৃত্যুভয়কে জয় করা সম্ভব। মারিনা তাঁর শিল্পচর্চার মাধ্যমে সেই প্রচেষ্টাই করে যাচ্ছেন। তিনি মৃত্যুভয়কে জয় করতে চান এবং মৃত্যুকে নির্ভয়ে আলিঙ্গন করতে চান। শুধু তাই নয়, তিনি জীবনের বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভয়কে জয় করেছেন, বৃহত্তর ভয়কে জয় করার উদ্দেশ্যে। যেমন তিনি শৈশবে সাপকে ভয় পেতেন, শিল্পীজীবনে তিনি সাপ নিয়ে পারফর্মিং আর্টের মাধ্যমে সেই ভয়কে জয় করেছেন। সাপকে তিনি এখন বন্ধু ভাবেন, ভয় নয়।
সত্যকে সত্যিকারভাবে প্রকাশ করার সাহসিকতা সব শিল্পীর থাকে না। মারিনা অসম্ভব সাহসী একজন শিল্পী, যিনি সততার অস্ত্র দিয়ে ধার করে গেছেন তাঁর সৃষ্টির পেনসিল। তিনি নিজের শরীরকে তাঁর শিল্পকলা চর্চা এবং প্রদর্শনের পরিসর বা বাহন মনে করেন। শরীরে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রণা সহ্য করে তিনি তাঁর মনকে করেছেন ইস্পাতের মতো শক্ত। তবে এই কঠিন শরীর এবং ইস্পাত-হৃদয়ের আড়ালে লুকিয়ে আছে সৃষ্টির নেশায় মত্ত এক শিশুসত্তা। মারিনা এই সুদীর্ঘ পেশাগত জীবনে পারফর্মিং আর্টের মতো মানুষনির্ভর শিল্পকলায় – যেখানে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ – আজো পারফর্মিংয়ের আগে শিশুর মতো ভীত হয়ে পড়েন। কিন্তু তাঁর সৃষ্টি ভয়কে তাড়ানোর জাদুবিদ্যা, ভয় পেলে তো চলবে না। তিনি প্রতিবার সেই ভয় এবং উৎকণ্ঠাকে জয় করে সফলভাবে পারফর্ম করেন এবং এভাবে তিনি দশকের পর দশক সার্থকভাবে শিল্পচর্চা করে যাচ্ছেন। সর্বংসহা মারিনার সৃষ্টির রহস্যের নেপথ্যে রয়েছে তাঁর দৃঢ় ব্যক্তিত্ব, শিশুসুলভ অনুসন্ধিৎসু মন এবং একাগ্রচিত্তে ধ্যানের চর্চা।
মারিনার শিল্পকলার শিক্ষার শুরু হয়েছিল শৈশব থেকে এবং গতানুগতিক ধারায়। মায়ের উৎসাহ, সমর্থন ও সহযোগিতায় তিনি শিল্পশিক্ষা চালিয়ে যান। তবে তাঁর মায়ের ইচ্ছা ছিল তিনি প্রথাগত শিল্পী হবেন। মারিনা জীবনভর রং-তুলি নিয়ে ইজেলের সামনে দাঁড়িয়ে শিল্প নির্মাণ করে যেতে চাননি। চিত্রকলা প্রদর্শনশালা বা সংগ্রহশালার দেয়ালে ঝুলিয়ে দিয়ে দায়িত্বমুক্ত হতে চাননি। তিনি জীবনে, শিল্পশৈলী ও শিল্পচর্চায় আরো নাটকীয়তা আনতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি মায়ের কঠোর শাসন ভেঙে ঘর পালিয়ে, নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন শিল্পকলার জগতে। তিনি প্রথার শিকল ভেঙে নতুনত্বের জন্ম দিয়েছেন। মঞ্চনাটক এবং শিল্পকলার সমন্বয়ে সৃষ্টি করেছেন অসাধারণ শিল্পশাখা ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ‘পারফর্মিং আর্ট’। মারিনা শিল্পনৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন পৃথিবীর বিখ্যাত মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে। মারিনার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাকে সেলিব্রেটি শিল্পী জেফ কুনের সঙ্গে তুলনা করা গেলেও তাঁদের দুজনের সৃষ্টি ও দর্শনের মধ্যে রয়েছে বিরাট ব্যবধান।
মারিনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন সচ্ছল পরিবারে। মা-বাবা ছিলেন জাতীয় বীর। একমাত্র ছোট ভাই, সংসারে মানুষ কম; কিন্তু সম্পর্কগুলো ছিল খুব শিথিল। মারিনার ব্যক্তিগত জীবন সুখের ছিল না কখনো। পারিবারিক সুখ-শান্তি থেকে তিনি আজীবন বঞ্চিত। মা অত্যন্ত কঠোর এবং নিয়মতান্ত্রিকতায় আবদ্ধ করে রাখতে চেয়েছিলেন মেয়েকে; কিন্তু মারিনা তো জাতশিল্পী, মুক্তমনা, স্বাধীনচেতা। তিনি পারিবারিক সংস্কার, সমাজের কুসংস্কার সব ভেঙে-গুঁড়িয়ে দিতে শিল্পকলাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তিনি বারবার তাঁর হাতিয়ার দিয়ে সমাজের পচাগলা প্রথাগুলোকে আঘাত করেছেন। তাঁর মা প্রতিনিয়ত তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করে গেছেন। বাবার সঙ্গে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক থাকলেও মা-বাবার বিচ্ছেদের কারণে, মারিনার পক্ষে পারিবারিক শান্তি ভোগ করা সম্ভব
হয়নি বেশিদিন। তবে পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের প্রতি তিনি তাঁর কর্তব্য পালন করে গেছেন আজীবন। মারিনা তাঁর
মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে ‘বলকান বারোক’ নামে একটি শিল্প সৃষ্টি করেন, যার জন্য তিনি ১৯৯৭ সালে ভেনিস বিয়েনালে ‘গোল্ডেন লায়ন’ পুরস্কার জিতে নেন।
২০০০ সালে তিনি ইউরোপের গণ্ডি পেরিয়ে নিউইয়র্কের শিল্পজগতে পা রাখেন। নিজে ঋদ্ধ হন এবং সমৃদ্ধ করেন বিশ্বশিল্পজগৎকে। এযাবৎকাল মারিনার সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজটি ছিল, নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে প্রদর্শিত ‘দ্য আর্টিস্ট ইজ প্রেজেন্ট’। তিন মাস ধরে, মোট ৭০০ ঘণ্টা তিনি একটানা মিউজিয়ামে বসেছেন। হাজার হাজার মানুষ এসে তাঁর সামনে বসেছে। নিয়ম হলো, কোনো কথা বলা যাবে না, শুধু শিল্পীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। মানুষ যখন নির্বাক তাকিয়ে থাকে, তখন মানুষের চোখে ফুটে ওঠে মনের সব গোপন কথা। সেই প্রদর্শনী নিয়ে পরবর্তী সময়ে মারিনা বলেছেন, মানুষের মনের গভীরে কত কষ্ট লুকানো আছে তা তিনি এই পারফর্মিংয়ের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন।
তবে মারিনা তাঁর শিল্পজীবন একা শুরু করেননি, প্রথম স্বামী নেসা তাঁর সহশিল্পী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর প্রেমিক উলাইয়ের সঙ্গে কাজ করতেন। ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে তিনি ভ্যানে করে যাযাবরের মতো ঘুরে ঘুরে পারফর্ম করে বেড়িয়েছেন। গভীর ভালোবাসার দিনগুলোতে তাঁরা জীবনকে বুঝতে শিখেছেন শিল্পকলার মাধ্যমে। মারিনা সংসারী হতে চাননি, চাননি শিশুর জন্ম দিয়ে অবহেলা করতে, শিশু ও শিল্পের মধ্যে শিল্পকলাকে বেছে নিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্তে উলাই খুশি ছিলেন না বলে বিচ্ছেদের বাঁশিটি তিনিই বাজিয়েছিলেন। তবে এই মহান দুই শিল্পী তাঁদের বিচ্ছেদের মুহূর্তটিকেও একটি শিল্পকর্মে রূপান্তরিত করেন। ১৯৯৮ সালে ‘দ্য লাভারস’ নামে একটি পারফর্মিং আর্ট করেন, তাঁরা চীনের গ্রেট ওয়ালের ওপর দিয়ে দুজন দুদিক থেকে হেঁটে এসে এক স্থানে মিলিত হন, চিরতরে বিদায় নেওয়ার জন্যে। বিষয়টি যতটা রোমান্টিক ততটাই কষ্টদায়ক। আমরা দেখি দুই প্রেমিকের মাঝে চীনের দেয়ালের মতো অহংকার দাঁড়িয়ে থাকে। তাঁরা আবার দুজন দুদিকে হাঁটতে থাকেন এবং তাঁদের জীবনের পথ বিভক্ত হয়ে যায়। মারিনা চলতে থাকেন শিল্পকলার পথে, উলাই আটপৌরে জীবনের পথে। সম্প্রতি দীর্ঘ ২০ বছর পরে তাঁদের পুনর্মিলন ঘটে।
মারিনার উল্লেখযোগ্য কাজ ‘রিদম জিরো’ (১৯৭৪), সেখানে ৭২টি বস্তু সাজিয়ে রাখা ছিল। যেমন কাঁটাসহ গোলাপ ফুল, পিস্তল, ছুরি, কাঁচি, গলার চেইন, ব্লেড ইত্যাদি। তিনি গ্যালারিতে ছয় ঘণ্টা ধরে একা দাঁড়িয়ে ছিলেন। দর্শকরা ইচ্ছা করলে সেই বস্তুগুলো ব্যবহার করতে পারবে এবং তারা করেও ছিল। প্রথমে বলেছিলাম মারিনা নিজেকে নারীবাদী বলে দাবি করেন না। তিনি বলেন, সেদিন গ্যালারিতে উপস্থিত নারীরা তাদের পুরুষসঙ্গীদের মারিনাকে আঘাত বা অপদস্থ করার জন্য উস্কে দিচ্ছিল এবং পুরুষসঙ্গীরাও সেসব নির্দেশ পালন করছিল। মারিনা যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু তাঁকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেই হবে। এমনকি একজন তাঁর দিকে তাক করে পিস্তলের ট্রিগারে চাপ দেন তখন বাকিরা সেই ব্যক্তিকে বাধা দেন। মারিনার পারফর্ম্যান্স শেষ হওয়া মাত্রই কোনো মানুষ লজ্জা আর অপরাধবোধে তাঁর চোখের দিকে তাকাতে পারেনি, সবাই দৌড়ে পালিয়ে যায়, মারিনা হাঁটা শুরু করলে। সেদিন শিল্পী বুঝে যান, মানুষ সবই করতে পারে। মানুষ সত্যি তার সীমানা ছাড়িয়ে অনেকদূর যেতে পারে যখন মানুষ দলবদ্ধ থাকে এবং যখন তাকে দেওয়া হয় ক্ষমতা বা স্বাধীনতা।
শরীরনির্ভর শিল্পকলা সব পারফর্মিং শিল্পীই সৃষ্টি করেন; কিন্তু মারিনা সেটিকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যেতে পেরেছেন। নিজেকে একাধারে বেত্রাঘাত করেছেন, জ্বলন্ত স্টারের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুয়ে থেকেছেন, বরফের মধ্যে নগ্ন হয়ে শুয়ে থেকেছেন, জীবন্ত সাপ পেঁচিয়ে বসে থেকেছেন, পচা রক্তমাংসওয়ালা হাড়গোড় পরিষ্কার করেছেন একটানা দিনের পর দিন, নগ্ন হয়ে দেয়ালে ঝুলে থেকেছেন, নিজেকে দেয়ালে আছড়ে ফেলেছেন, ক্রমাগত অন্যের শরীরে নিজের শরীর দিয়ে বাড়ি দিয়েছেন, ঘণ্টা ধরে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করেছেন, ছুরি দিয়ে নিজেকে জখম করেছেন, একই পারফরম্যান্সে বহুবার অর্গাজম করেছেন, নগ্ন হয়ে নৃত্য করেছেন, যৌন আবেদনময়ী সেজেছেন, বীর সেজেছেন, নারী সেজেছেন, নান সেজেছেন, ডাক্তার সেজেছেন। বহু রূপে তাঁর শিল্পকর্মগুলোতে আমরা তাঁকে অবতীর্ণ হতে দেখি। মারিনা বাস্তবে আমাদের দেখিয়ে দেন যে, শরীর সীমাবদ্ধ হলেও মানুষের মনের ক্ষমতা অসীম।
একজন শিল্পীর শিল্পের মাধ্যম হতে পারে তাঁর নিজের শরীর, মন এবং আত্মা, কে ভাবতে পেরেছিল? কিন্তু একজন শিল্পীর যাপিত জীবনই স্বয়ং একটা শিল্পকর্ম। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিও শখ করে কারুকার্যখচিত পোশাক পরতে পছন্দ করতেন। রেমব্রাঁ নানা ধরনের নাটকীয় পোশাকে নিজেকে সাজাতেন,
পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতেন, তাঁর চিত্রকলার জন্য। মারিনা তাঁর গোটা জীবনকেই একটি শিল্পকলারূপে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। আর কোনো শিল্পী এতো সার্থকতার সঙ্গে কাজটি করতে পেরেছেন বলে জানা নেই। কারণ তিনি শিল্পকলার প্রতি সৎ ছিলেন আজীবন, সে-কারণে তিনি মা-বাবা, পরিবার, দেশ, ভালোবাসা, সংসার, ভবিষ্যৎ সন্তান – সবকিছু ত্যাগ করেছেন, শুধু শিল্পকলাকে আপন করে নিয়েছেন। শিল্পের জন্য এমন উৎসর্গকৃত জীবন সত্যি বিরল।
মারিনা সেই অসম্ভবের নাম, যিনি বহু অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। মারিনা জীবনের সেই অন্ধকার ঘরটি আলোকিত করেছেন, যে-ঘরে যেতে আমরা অনেকেই ভীত হবো, অস্বীকৃতি জানাব। মারিনা আমাদের মনের সেই অন্ধকারতম ঘরে জ্বেলে দিয়েছেন শিল্পের আলো। সেই উজ্জ্বল আলোয় আমরাও উদ্ভাসিত হই। শিল্পকলার প্রতি তিনি আমাদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছেন। আমরা মৃত্যুভয়ে ভীত হই না, আমরা ভিন্নধর্মী শিল্পকলাকে মৃত্যুর সমতুল্য মনে করি না, বরং আমরা বুঝতে পারি মৃত্যু মানেই নতুন জন্ম। মৃত্যু এবং আমাদের মাঝে দেয়ালের মতো যা দাঁড়িয়ে থাকে তা হলো মৃত্যুভয়। শিল্পী সেই ভয়কে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের শক্তি জোগাবেন তাঁর শিল্পকলার মাধ্যমে।
মহাকাব্যের মতো মারিনার জীবনদর্শন ও শিল্পকলাকে এই হাজারখানেক শব্দের গণ্ডিতে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। মারিনার শিল্পকলাকে আমাদের দেখতে হবে মুক্তমন ও নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। মারিনার শিল্পকর্ম আজ পৃথিবীর বিখ্যাত প্রদর্শনশালা এবং সংগ্রহশালাগুলোতে প্রদর্শিত হয় এবং সংগৃহীত রয়েছে। পারফর্মিং আর্টের এই গ্র্যান্ডমাদারকে শিল্পরসিকরা মনে রাখবেন যুগ যুগ ধরে, শুধু তাঁর সৃষ্টির জন্য নয়, তাঁর সাহসিকতার জন্যও। তিনি শিল্পকলার সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার যে-অপূর্ব সঙ্গম ঘটিয়েছেন, তাতে সৃষ্ট হয়েছে এক নতুন ধারা। তিনি তাঁর সাহসিকতা দিয়ে মৃত্যুভয়কে জয় করবেন; তাঁর সমস্ত বিসর্জন স্মারকস্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে চিরকাল। তাঁর এপিটাফে হয়তো লেখা থাকবে – ‘এই সমস্ত কিছুই জীবনের অংশ ছিল!’
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.