ভাষান্তর : মঈনুস সুলতান
নিশিরাতের হে ঘোড়সওয়ার –
আমার নিবাস এখানে, বালুচরে ছোট্ট ঘর
নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছি বুকে নিয়ে তৃষ্ণা অপার।
শুধু একবার –
এখানে এসে কড়া নাড়ো, মৃদু স্বরে দাও শিস,
নরোম সবুজ স্বপ্ন রেখে যাও আমার হৃদয়ে
তোমার প্রতীক্ষায় জেগে আছি অহর্নিশ।
অপেক্ষায় একাকী দাঁড়িয়ে আছি আমি দরোজার পেছনে
মথিত যদি হয় আজ রাতে জোড়া ফুল
এ প্রত্যাশায় শরম শিহরণে ঈষৎ সন্ত্রস্ত,
… কী বলবো… বড় দীর্ঘ এ নিশীথ
এসো… ডাকছি আকুল স্বরে… হয়ো না দ্বিধাগ্রস্ত।
অজানা আগন্তুক – ঠের পাও কী
দাঁড়িয়ে আছি আমি কপাটের আড়ালে,
কী-বা ক্ষতি হবে তোমার – অজানা পথে একবার
না হয় পা বাড়ালে।
সুনসান এ-সন্ধ্যায় পোষা তোতাপাখিও হয়ে আছে নীরব,
সামান্য সময়ের জন্য হলেও এসো সুহৃদ অশ্বারোহী
স্পর্শ করো আমার অনুভব।
তুমি আসলেই নদীতে উথলে উঠবে জল,
বেনোজলে ভাসবে মাছ ও গোলাপ
জোয়ার ভাটায় ঊর্মি হবে প্রবল।
ভাসবে থোকা থোকা লালচে পত্রালি,
পাড়ি দিয়ে সাঁকো – চলে এসো আমার ঘরে
শুনতে পাবো ঠিকই – তোমার ধুকপুকে হৃদয়ের করতালি।
হে আমার বীজাঙ্কুরে জড়ানো সবুজ প্রত্যাশা
ঘাসে আমি শুনছি তোমার দ্বিধাগ্রস্ত পায়ের আওয়াজ,
জানো কী – দাঁড়িয়ে আছি আমি কপাটের আড়ালে
রেশমি রুমালে মুছে ফেলে পুষ্পিত লাজ।
পরে আছি খুব স্বচ্ছ সিল্কের নৈশ পোশাক,
মন আমার উন্মুখ হয়ে আছে
ভালোবাসার জন্য তৈরি হচ্ছে শরীরের প্রতিটি বাঁক।
আজ অন্ধকারহীন রাত্রির মতো রহস্যময় আমি
আমার নেকাবে জ্বলছে একটি তারকা সম্পূর্ণ সোনালি,
তোমার সারা দেহে তুতের থোকা থোকা সবুজ ফল
দীপ্ত অননে বাজছে আকাশের করতালি।
আমার হৃদয় দেহমন স্পর্শের সম্ভাব্য সুখে শিহরিত
নিশিরাতের অশ্বারোহী – কখন পাবো তোমার দেখা,
আয়নাময় পোশাকে কপাটের আড়ালে আমি সম্পূর্ণ একা।