ভবেশরঞ্জন মিত্র মহাশয় আজ ভোর সাড়ে ছয়টায় হাসপাতালে মারা গেলেন।

আমরি হাসপাতালের কলকাতায় আরো কয়েকটা শাখা থাকলেও সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের হাসপাতালটা দেশপ্রিয় পার্কের ওদের বাড়ির কাছে বলে এ-হাসপাতালটাতেই ভর্তি করা হয়েছিল ভবেশবাবুকে। তাছাড়া এ-হাসপাতালে মিত্র পরিবারের মেজ ছেলে সুমিত মিত্রের বিশেষ বন্ধু ডা. রঞ্জন হালদার রয়েছেন। ফলে হাসপাতালের ছোটখাটো নানা বিষয়ে অনেক সহায়তা ও রোগীর চিকিৎসার ব্যাপারে ভালো পরামর্শ এখানে পাওয়া গেছে; কিন্তু এত চেষ্টার পরও শেষমেশ ভবেশবাবুকে তো আর বাঁচিয়ে রাখা গেল না। তবে বিরাশি বছরের একজন মানুষের মৃত্যু হলে তো আর অভিযোগ করা চলে না। আর অভিযোগও বা কার কাছে? ওরা তো দেখেছেন যে ডা. রঞ্জনের বন্ধুর

বাবা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, বা  অন্য ডাক্তাররা, বিশেষ করে তরুণ ডাক্তার ও নার্সরা, কত আন্তরিকতার সঙ্গেই না রোগীকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছে।

ভবেশবাবুর তিন ছেলে। তবে দেশে আছে এখন বড় ছেলে অমিত ও মেজ সুমিত। ছোট ছেলে নবারুণ মিত্র বর্তমানে আমেরিকায় থাকে। সুমিতও চাকরির সুবাদে
বছর-দুই হলো কলকাতা ছেড়ে ব্যাঙ্গালোরে থিতু হয়েছে। আর ওদের একমাত্র বোন সরলা স্বামীর সঙ্গে দুর্গাপুরে থাকলেও বাবার অসুস্থতা খুব বেড়ে যাওয়ায় দু-সপ্তাহ ধরে কলকাতায় দেশপ্রিয় পার্কের বাড়িটাতে এসে রয়েছে। শেষের দিনগুলোতে হাসপাতালে ছোটাছুটি, অসুস্থ বাবার খাওয়া-দাওয়া, সঠিক সময়ে ইনজেকশন দেওয়ার ব্যাপারগুলো সরলাই দেখাশোনা করেছে।

ভবেশবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে সুমিত সকালের ফ্লাইটেই ব্যাঙ্গালোর থেকে কলকাতায় রওনা হয়ে গেছে। তবে নবারুণ আমেরিকা থেকে এখন আসতে পারছে না বলে জানিয়েছে। সেই সামারের আগে ওর আর ছুটি নেই। আর এখন তো সবে ফেব্রুয়ারি মাস চলছে। শীতের মাত্র শেষ। তবে নবারুণ আসতে না পারলেও তিন ভাই ও বোনের সমানে টেলিফোনে কথাবার্তা চলছে। সুমিত তো ব্যাঙ্গালোর এয়ারপোর্ট থেকে ওর প্লেনটা ছাড়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত ফোনে কথা বলেছে। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই ও কলকাতায় পৌঁছে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

ভবেশবাবু বিপত্নীক হয়েছেন প্রায় আট বছর। ওর স্ত্রী নিরুপমা দেবী কিছুটা কম বয়সেই মারা গিয়েছিলেন। মাত্র  চৌষট্টি বছর বয়সে। পূর্ববঙ্গের এক উদ্বাস্তু পরিবারের মেয়ে ছিলেন নিরুপমা। ওদের আদি দেশ ছিল যশোরের মাগুরায়। এদেশে চলে আসার পর বিভিন্ন উদ্বাস্তু ক্যাম্পে থেকে অবশেষে ওরা থিতু হন ইছামতী নদীর পারে সীমান্ত শহর টাকীতে। ওখানেই ভবেশবাবুর সঙ্গে বিয়ে ও সংসার পাতা। নিরুপমা দেবী অবশ্য ফেলে আসা দেশের কথা খুব একটা বলতেন না। আসলে স্বামীর স্বল্প আয়ের সংসারটা সামলানো, চার চারটে সন্তানকে শিক্ষিত ও মানুষ করা, এসব কাজেই ওকে এত ব্যস্ত থাকতে হতো যে, পুরনো দিনের কথা ভাবার
সময়-সুযোগ তেমন ছিল না ওর। বরং ওদের বাবা ভবেশরঞ্জনবাবুই প্রায় বলতেন ইছামতীর ওপারে ফেলে আসা সাতক্ষীরায় ওদের পূর্বপুরুষদের গ্রাম দওডাঙ্গার কথা। গ্রামটা টাকী থেকে বেশি দূরেও নয়। মাত্র আঠারো কিলোমিটার। আর বর্ডারের ওপারে হলেও এক্কেবারে ইছামতী নদীর গা-ঘেঁষে। কতদিন বিকেলে টাকীর ইছামতীর পারে বেড়াতে গিয়ে ভবেশবাবু ছেলেমেয়েদের বলেছেন, জানিস তো, ওই যে ইছামতীর বড় বাঁকটা দেখছিস, ওরকম আর দুটো বাঁক ঘুরলেই আমাদের দওডাঙ্গা গ্রামটা। ওরকম সুন্দর গ্রাম তোরা জন্মেও দেখিসনি! তারপরেই শুরু হয়ে যেত দওডাঙ্গা গ্রামের হাজারো গল্প।

দওডাঙ্গা গ্রামে ওদের ফেলে আসা পূর্বপুরুষদের একতলা দালান বাড়িটা, ইছামতী নদীর পারে ও-বাড়ির ঘাটটা, বাড়ির পেছনের পুকুরটা, কাছেই বৈষ্ণবেব চালার পাশে মস্ত বড় বটগাছটার নিচে গ্রামের পুরনো পাঠশালাটা ও অল্প একটু দূরেই স্কুলের বড় দালানবাড়িটা, আর সে-স্কুলের মাঠে বাল্যে-কৈশোরে ফুটবল খেলা, সারি সারি নারকেল আর সুপারি গাছ, অলস দুপুরগুলোতে এক সুপারি গাছ থেকে শূন্যে লাফ দিয়ে আরেক সুপারি গাছকে জড়িয়ে ধরা, ছেলেবেলায় ইছামতী নদীতে গামছা দিয়ে ছোট ছোট মাছ ও পরে বড় হয়ে ছিপ দিয়ে বড় মাছ ধরা, গল্পের কী আর শেষ আছে! ছেলেবেলা থেকে এসব গল্প শুনতে শুনতে ভবেশবাবুর ছেলেমেয়েদের প্রায় মুখস্থই হয়ে গেছে। শেষ বয়সে গল্প বলার প্রবণতা যেন ভবেশবাবুর আরো বেড়ে গিয়েছিল। তবে বৃদ্ধ বাবার এসব আবেগময় কথাবার্তায় ছেলেমেয়েরা কেউ তেমন বাধা দিত না। ভবেশবাবুর ছেলেরা ছিল ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের। চুপ করে বাবার এসব কথা শুনে যেত। কেবল মেয়ে সরলা নানা প্রশ্ন করে আরো জানতে চাইত। অবশ্য সেটা কতটা পূর্বপুরুষদের দত্তডাঙ্গা গ্রামটার প্রতি ভালোবাসা আর কতটা বা বৃদ্ধ বাবার প্রতি মমতা, সেটা ঠিক বলা যাবে না। তবে সরলার ওসব সরল প্রশ্নে ভবেশবাবু আরো অনুপ্রাণিত হতেন এবং খুবই বিশদভাবে দত্তডাঙ্গা গ্রামের হাজারো খুঁটিনাটি বলতে থাকতেন।

টাকীতে অবশ্য ভবেশবাবুর পরিবারের নিজস্ব কোনো বাড়ি ছিল না। ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। চাকরিসূত্রে জীবনে বহু জায়গাতেই ভাড়াবাড়িতে থেকেছেন ভবেশবাবুরা। কেবল চাকরি জীবনের শেষ দিকে প্রায় সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে দেশপ্রিয় পার্কের এই ফ্ল্যাটটা কেনেন। কিছু ব্যাংকঋণও নিয়েছিলেন। তবে ছেলেরা চাকরি পাওয়ার পর সেসব ঋণ শোধ হয়ে গেছে।

ভবেশবাবুর ছেলেমেয়েরা যে কেবল ভালো শ্রোতা ছিল তা নয়। মেধাবীও ছিল। ছাত্রজীবনে অমিত-সুমিত দুজনেই ভালো ছাত্র ছিল। ফলে ভালোভাবে পাশ করে চাকরি পেতে ওদের কোনো অসুবিধা হয়নি। তবে সবচেয়ে মেধাবী ছিল ছোট ছেলে নবারুণ। সারাজীবনই পরীক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট করেছে ও। যাদবপুর বিশ^বিদ্যালয়ে ওর বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিল। আর আমেরিকায় যে পড়তে গিয়েছিল সেটাও ছিল পূর্ণ বৃত্তিতেই। ভবেশবাবুকে একটা পয়সাও খরচ করতে হয়নি। সরলাও ভালো ছাত্রী ছিল। তবে কলেজে পড়ার সময়ই ভালো পাত্র পেয়ে ওর বিয়ে দিয়ে দেওয়ার ফলে উচ্চ শিক্ষাটা সরলার আর হয়নি। তা নিয়ে ভাইদের কিছুটা দুঃখবোধ রয়েছে। হয়তো সরলারও আছে। তবে সেটা ও প্রকাশ করত না। স্বামী ও ভাইদের সাফল্যেই খুশি থাকত সরলা।

ভবেশবাবু ওর চাকরিজীবনে, বা ব্যক্তিজীবনেও, ছিলেন বেশ গোছালো ও হিসেবি মানুষ। আর ছেলেরা তো এখন যথেষ্ট ভালো বেতনে চাকরি করছে। ফলে শেষ জীবনে অর্থের দুশ্চিন্তাটা ভবেশবাবুর তেমন ছিল না। এমনকি ওর শ্রাদ্ধ বাবদ খরচের টাকাটাও ভবেশবাবু ছেলেদের জানিয়ে ব্যাংকে আলাদা করে রেখে গেছেন। সেসব দিক নিয়ে এ-পরিবারটার কোনো সমস্যা ছিল না।

তবে সমস্যাটা ঘটল একেবারেই অন্য এক দিক দিয়ে। আগেও কয়েকবার বলেছিলেন ভবেশবাবু। কিন্তু ছেলেরা তখন কথাটায় অতটা গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু শেষবার হাসপাতালে যাওয়ার পর, বিশেষ করে গত দু-সপ্তাহ ধরে, বারবারই বৃদ্ধ ভবেশবাবু কথাটা বলেছেন। তা হচ্ছে, ওর মরদেহ যেন টাকীতে নিয়ে ইছামতীর পারে দাহ করা হয়। ছেলেরা সান্ত্বনার ভঙ্গিতে বলেছে : ‘ওসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না বাবা। এখন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে চলো তো।’ ভবেশবাবু আপাতত চুপ করে যেতেন।

মানুষ কী তার মৃত্যুর বিষয়টা আগে বুঝতে পারে? ভবেশবাবু হয়তো বুঝেছিলেন। কারণ শেষের দিকে ছেলেমেয়েরা কেউ হাসপাতালে দেখা করতে এলেই উনি এ কথাটা বলতেন। অনেক সময় ওদের কারো হাত জড়িয়ে ধরে বলতেন যে, এটা ওর শেষ অনুরোধ। ওর দেহটা যেন ইছামতীর পারে দাহ করা হয়। যেহেতু সরলাই সবচেয়ে বেশি হাসপাতালে যেত, বা বলতে গেলে, হাসপাতালে প্রায় সারাক্ষণই বাবার পাশে থাকত, ফলে কথাটা ওকেই শুনতে হয়েছে সবচেয়ে বেশি। 

আজ যখন হাসপাতালের সব বিল মিটিয়ে, কাগজপত্র বুঝে নিয়ে, ভবেশবাবুর মৃতদেহটা বাইরে আনার প্রস্তুতি চলছে তখনই সরলা কাঁদতে কাঁদতে কথাটা তুলল, ‘দাদা, বাবার সৎকার কিন্তু টাকীতে করতে হবে। বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল।’

অমিতবাবু বিষয়টা প্রথমে গুরুত্ব দিতে চাননি। টাকীতে কেন? টাকীর পাট তো তাঁরা বিশ বছর আগেই চুকিয়ে কলকাতায় চলে এসেছেন। টাকীতে তাঁদের নিজেদের কোনো ঘরবাড়ি বা একখণ্ড জমিও নেই। তাছাড়া লাশ কলকাতা থেকে সেই সুদূর টাকী পর্যন্ত নেওয়ার একটা বড় খরচ ও ঝামেলা তো আছেই। বাবার যে কীসব ছেলেমানুষী খেয়াল! অথচ কলকাতার পাশেই গঙ্গা। সকালেই ওদের দেশপ্রিয় পার্কের পাড়ার ছেলেরা শ্মশানঘাটে গিয়ে যোগাযোগ করে এসেছে। গঙ্গার পারে ইলেকট্রিক চুল্লি। দশ মিনিটের মধ্যেই সৎকারের সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। মায়ের সময় তো ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সৎকারের সমস্ত পাট চুকিয়ে ওরা বাড়ি ফিরতে পেরেছিলেন। তা না টাকীতে চলো! এখন এই মৃতদেহ টাকী পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া,  সে কি কম ঝক্কির ব্যাপার!

এদিকে বোন সরলা বারবারই কেঁদে কেঁদে বলছিল, বাবার শেষ ইচ্ছাটা যেন পূরণ করা হয়। কলকাতাতে নয়, টাকীতে ইছামতীর পারেই যেন দাহ করা হয় বাবাকে। এটাই  তো ছিল বাবার শেষ ইচ্ছা। নয় কি?

কিছুটা হতাশ হয়েই অমিত তাই অন্য দুই ভাইকে ফোন করলেন। ব্যাঙ্গালোর থেকে সুমিতের ফ্লাইটটা সবে দমদমে ল্যান্ড করেছে। ও তখন লাগেজের জন্য এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করছিল। সব শুনে বলল, ‘ওসব ঝামেলায় যেও না দাদা। গঙ্গার পাড়েই বাবার দাহটা হোক। গঙ্গা পবিত্র নদী।’ আর কপাল ভালো যে আমেরিকায় তখনো অতটা রাত হয়নি। ফলে নবারুণকেও ফোনে পাওয়া গেল। নবারুণেরও ওই একই মত। টাকীতে কেন ও এটা বুঝতেই পারছিল না। টাকীতে তো আমাদের এখন কিছুই নেই দাদা। কলকাতাতেই বাবার দাহটা হোক। তাছাড়া মার দাহও তো কলকাতাতেই হয়েছিল। বাবারটা হতে অসুবিধা কোথায়? তবে শেষে এটাও বলেছে যে, বাবার মৃতদেহটা যদি টাকীতে নিতেই হয় তাহলে খরচের বাড়তি টাকাটা ও দিয়ে দেবে।

সরলাকে অবশ্য বোঝানো সম্ভব হয়নি। ও গোঁ ধরেই ছিল। ভাইদের মনেও বোধহয় বাবার শেষ ইচ্ছাটা এভাবে অমান্য করতে কোথায় যেন বাধছিল। টাকীতে পুরনো পাড়া-প্রতিবেশী ও পরিচিত যাদেরকে ফোনে পাওয়া গেল এরকম কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ওরা আশ্বস্ত করলেন লাশ টাকীতে নেওয়া হলে সৎকারের ব্যাপারে কোনো সমস্যা হবে না। ওঁরা সর্বতোভাবে সাহায্য করবেন। আসলে নির্ভেজাল ভালো মানুষ ভবেশবাবুকে সবাই-ই পছন্দ করত। ফুলে সাজানো লাশবাহী গাড়িতে ভবেশবাবুর মৃতদেহটা যখন টাকীর পথে কলকাতা ছাড়ল, অমিত-সুমিত দুই ভাইও ওদের পারিবারিক গাড়িতে চেপে ও গাড়ির পেছন পেছন টাকীতে চললেন। তবে সরলা আর আসেনি। বাড়িতে এখন অনেক আত্মীয়-স্বজন  ও অতিথি আসছেন। তাঁদের দেখাশোনার ব্যাপার রয়েছে। তাছাড়া গত দুই সপ্তাহ টানা হাসপাতাল ডিউটিতে ওর শরীর-মনের ওপর তো কম ধকল যায়নি।

এমনিতেই পিতার মৃত্যু একটা বিষাদময় ব্যাপার। তারপর সুদূর টাকী পর্যন্ত মৃতদেহটা নিয়ে যাওয়ার ঝামেলাটা। দুই ভাই-ই তাই গাড়িতে কিছুটা বিষণ্নমুখেই বসে ছিলেন। দুই ভাইয়ের তো আসলে জানার কথা নয় যে, ভবেশবাবু ঠিক কী ভেবেছিলেন বা কী আশা করতেন। মৃত্যুর আগে হয়তো ওঁর আশা ছিল, টাকীর কিছুটা ভাটিতেই তো সীমান্তের ওপারে ওদের ফেলে আসা দওডাঙ্গা গ্রামটা। ভিসা-পাসপোর্ট করে সেই ছেড়ে আসা গ্রামটাতে তো জীবনে আর কখনোই সশরীরে যেতে পারেননি ভবেশবাবু। তবে দাহ হওয়ার পর ওঁর মৃতদেহের ছাইগুলো যখন ইছামতী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে তখন কি ভাটির দিকে ইছামতীর ঢেউয়ে ভাসতে ভাসতে ওর শরীরের ছাইগুলো ওঁদের দওডাঙ্গা গ্রামের ঘাটটা একবার ছোঁবে না? সেই দওডাঙ্গা গ্রাম যেখানে পোঁতা রয়েছে ভবেশবাবুর পিতামাতাসহ ওঁদের পূর্বপুরুষদের জন্মের নাড়ি।

লাশবাহী গাড়িটা ধীরে ধীরে এগিয়ে চলল সীমান্ত শহর টাকী পেরিয়ে ইছামতী নদীর শ্মশানঘাটটার দিকে।