এই বাংলা মুজিবময়

আকাশভরা আলোর ঢলে
শাপলা ফুলে নদীর জলে
জোনাকজ্বলা বাঁশবাগানে
ভাটিয়ালির সুরের টানে
নায়ের পালে মাঝির গানে
ধানের ক্ষেতে তিল-তিসিতে
শিশিরভেজা ঘাসের দেশে
মায়ের কোলে মুজিব আসে।

ভালোবাসায় ভরিয়ে তীর
পদ্মা মেঘনা মধুমতির
জনসাগর উছলে দিয়ে
বাংলাদেশের বিজয় নিয়ে
মুজিব আসে বীরের বেশে।

সবুজ বনে পাখির গানে
বাতাস ফেরে খুশির তানে
তাকাও কাছে তাকাও দূরে
পাহাড় ভেঙে পাতাল ফুঁড়ে
মুজিব হাসে আকাশ জুড়ে।

হঠাৎ দেখি আঁধার নামে
হারিয়ে যায় তারার মেলা
চাঁদের আলো মেঘের খেলা
আমের বোলে শিমুল ফুলে
পাখ-পাখালি সবাই থামে!

খোকার চোখে খুকির চোখে
আকাশ ভেঙে কান্না নামে
লক্ষ বোনের চোখের জলে
মা-যে হারায় অতল তলে
হে দয়াময় – কী দুঃসময়!

শিশুর মুখে চাষির বুকে
সাহস দিতে সেই সে-শোকে
আবার দেখো উচ্চশিরে
আঁধার চিরে আকাশ ঘিরে
সূর্যের তেজে মুজিব আসে
মুজিব আসে মুজিব আসে …

মুজিব আনে মুক্তি ও জয়
দেখো, এই বাংলা মুজিবময়।

(জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্রষ্টা। কিন্তু উনিশশো পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর সপরিবার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় আড়াই দশক খুনিরা ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে বাঙালির এই মহান নেতাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত হয়। ইতিহাসের অমোঘ ধারায় তাঁর বর্ণাঢ্য সংগ্রামী জীবন, ত্যাগী নেতৃত্ব, জনমানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা সর্বোপরি বাঙালির জাতি-রাষ্ট্র নির্মাণে তাঁর অসীম অবদান প্রতিদিন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছে। তাই, এই বাংলা মুজিবময় আর বঙ্গবন্ধু মুজিব আজ বিশ্বময়। আমার কবিতায় বঙ্গবন্ধুর জন্ম, বাঙালি জাতিকে সঙ্গে নিয়ে অবিসংবাদিত নেতা হয়ে ওঠা, তাঁর মহাপ্রয়াণ ও সকল ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে উজ্জ্বল সূর্যের মতো দীপ্যমান হয়ে ফুটে থাকার কথা বলতে চেয়েছি। – মুহাম্মদ সামাদ)