কবিতাগুচ্ছ

শুভাশিস সিনহা

চারুগমন

একটু ভেতরে যদি যাই পুষ্পের কুঁড়ির, গন্ধের রঙের, একটু অশান্ত চোখে আকাশে বিদ্যুতে, খানিক অধর্মে… যা ছিল তা কি থাকবে তখনো, – লেগে থাকা অবসন্নতার দাগ, প্রেমের অন্তিম সুর, রাত্রিগেলা ভোরের ঢেঁকুর?… একটু দাঁড়াতে চেয়ে ঠাঁইহীনা জলশ্রীর তটের ওপর, ডুবে ডুবে যেতে যেতে একটু আড়ালে গিয়ে একটু গভীরে গিয়ে অশেষ অতলে ভুলে তটরেখা থেকে রক্তারক্তি নতুন দেহের বাঁকা টান ছিঁড়েখুঁড়ে… একটু সন্তাপে পাপে দূরে উড়ে উড়ে…

দ্বন্দ্বাতুর

জানি হারানিরা কেবল অাঁচল তুলে হাওয়াপালে শাদায় শাদায় যায় চলে, আর গায় হারিয়ে জেতার গান, তাদের কণ্ঠের কাছে পাল তোলা বালিহাঁসগুলো, যত কাদা ধুলো অথচ কী সমারোহে মেলা করে পাওয়ায় পাওয়ায়; জানি হারানিরা কলিজার এক টুকরো স্মৃতিমায়াটানমাংস খুলে নিয়ে হাতের তালুতে ধরে উচ্চে উচ্চে ছুটে যায়, তড়াসে মিলায়, অথচ কি অক্ষয় অজর কায়াহৃদস্বাস্থ্য-উদ্যাপনে মুখর জীবন ফের হাস্যে মাতে রঙ্গ করে পেয়েছি পেয়েছি রবে গড়াগড়ি খায়…

বি-সংগীত

অনেক তো জানো গান তালে ও বৈতালে, সুরে সুরে দোলাতে ভুবনদোল, জড়ের শরীর, তারার লকেট; অনেক তো জানো তানে তানে আকাশ ফুঁড়িয়া যেতে পল থেমে নদীর নীলের দিকে গাছের মাথার দিকে চেয়ে বালুর ধূসর বসনের হাহাকার খেয়ে খেয়ে বেঁচে যেতে; অনেক তো শ্রুতিমালা পরে নিয়ে বিছায়ে বিছায়ে কুঁড়ি যেতে জানো বিশ্রুতিসুদূর… শুধু এই মীড়ের রাগের বেহাগের ঘনলীন মৌনময়ীটির কথা সারাদিন বেজে গেল তোমার অন্যথা!