নূরুজ্জামান কায়সার
কিছু কিছু মানুষ কালজয়ী হয়ে থাকেন তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে। সাধারণ জীবনযাপনের মধ্যে থেকেও গড়ে তোলেন অসাধারণ এক পৃথিবী। নিজের জীবনের ব্যাপ্তি বিলাস ও বৈচিত্র্যকে ঠেলে দিয়ে এক আবর্ত, তৈরি করেন আর তার মধ্যে নিমগ্ন থাকেন ভালোলাগা-ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ, স্বপ্ন-সমাজ আর
জীবনযাপনের নানা ভাঙাগড়া দিক নিয়ে। শিল্পী গণেশ পাইন বরাবরই সেই পৃথিবী নিয়ে সুখী ছিলেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই অসাধারণ পৃথিবী গড়তেই যেন ছিলেন ব্যস্ত। ধীর, শান্ত, পরিশীলিতভাবে এগিয়ে যেতে চেয়েছেন প্রতিদিন, গভীর এক নিঃসঙ্গতাকে বুকে চেপে রেখে আড়ালে থেকেছেন আজীবন। ছোটেননি খ্যাতির পেছনে কোনোদিন। মেতে ছিলেন প্রতিনিয়ত শিল্পকলার নিত্যনতুন পরীক্ষণে। বিনা প্রচারে বিনা আড়ম্বরে জয় করেছেন বিশ্ব। তাঁর ভাবনা আর তুলি সবসময় নিজস্ব এক ভাষা নিয়ে এগিয়ে গেছে গভীর থেকে গভীরে। জীবন ও শিল্পের অতল গভীরে ডুবে থাকতে চেয়েছেন সর্বদা।
জীবন ও শিল্প নিয়ে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমার জীবনে ব্যাপ্তি নেই, বৈচিত্র্য নেই, ভ্রমণে আমার প্রবল অনীহা। আমার কাজে জন্মার্জিত এক বোধ, যা প্রাচীন জলে ভেসে আসা কোনো গুল্মের মতো, শিকড় সঞ্চার আমার মনের গভীর প্রদেশে অবিরত ঘটে চলেছে। জীবন ও শিল্প-সংক্রান্ত আমার যাবতীয় স্মৃতি-স্বপ্ন, অভিজ্ঞতা সবই তার সংশ্লেষিত হয়েছে সেই বোধে। সেই সংশ্লেষের তাৎপর্য আমি সঠিক বুঝি না, শুধু তার ক্রিয়া অনুভব করতে পারি।’ এর ভেতর থেকে বোঝা যায় শিল্পীর নিজস্ব শিল্পসৃষ্টির মূলকথা।
গণেশ পাইন জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৭ সালে কলকাতার কাছে আদি সপ্তগ্রামে। যদিও তিনি জ্ঞান হওয়ার পর আর যাননি কোনোদিনই, ছিলেন কলকাতায়। প্রাচীন বনেদি যৌথ পরিবারে বড় হয়েছেন। ছবি আঁকার ঝোঁক কখন যে তৈরি হয়েছিল, তিনি তা বুঝতে পারেননি। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে আঁকিবুকি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বাড়িতে একটা বড় স্লেট ছিল কাঠের ফ্রেম করা, সেই স্লেটটি একসময় তাঁর দখলে চলে আসে। সেটিকে ধুয়েমুছে ঝকমক করে সেখানেই চালাতেন হরেকরকমের কাটাকুটি ও রেখাপাত। একসময় আনন্দে বুক ভরে যেত। ঠাকুরমার কাছে নানা রকমের কাল্পনিক গল্প শুনে তার চরিত্রগুলো বৃথা আঁকার চেষ্টায় তাঁর কাঁচা হাত অবিরাম মেতে থাকত। ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাতেন নানা রূপ দেওয়ার। আহত মনে ফিরে আসতেন কিন্তু থেমে থাকত না তাঁর আঁকার আকাক্সক্ষা। চার বছর বয়সে ভর্তি হন বাড়ির কাছে সিটি স্কুলে ইনফ্যান্ট ক্লাসে। বই-খাতা, প্রাইজ আর স্কুলের নানা নিয়ম-কানুন দিয়ে শুরু হলো জীবনের প্রথম অধ্যায়। কখনো কখনো স্কুলে যেতে মন চাইত না। সুনসান সেই মস্ত দুপুরে ফাঁকা বাড়িতে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে গড়ে তুলতেন অদ্ভুত এক জগৎ। তাঁর ভাবনাগুলোকে রূপ দিতেন নানাভাবে। কাগজ দিয়ে বানাতেন নৌকা, কাপড়ে দিয়ে দিতেন পাল, তারপর বাথরুমের চৌবাচ্চায় ভাসিয়ে দিয়ে পালে লাগিয়ে দিতেন আগুন। দূর থেকে দেখতেন আপনমনে নৌকার দহন। এরকম ফ্যান্টাসি নিয়েই ডুবে ছিলেন শৈশব-কৈশোরের দিনগুলোয়। অল্পবয়সে বাবাকে হারিয়ে ঠাকুরমা আর কাকাদের আঁকড়ে ধরেছিলেন। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে সিটি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর উঠে যায় তাঁর লেখাপড়ার ইচ্ছাশক্তি। মা আর পাঁচ ভাইবোনকে নিয়ে বড় অসহায় হয়ে পড়েন। অনিশ্চয়তা বারবার হানা দিচ্ছিল সেই সময়ে। চাকরি করে সংসারের হাল ধরবেন বলে মানসিক একটা প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন; কিন্তু বাদ সাধলেন কাকারা। এতো অল্পবয়সে চাকরি করে সংসারের হাল ধরবেন – এটা মেনে নিতে পারছিলেন না। তাঁর ছবি আঁকার ঝোঁক দেখে কাকারাই পাঠিয়ে দিলেন আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য। ১৯৫৫ সালে ১৮ বছর বয়সে সরাসরি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হলেন কলকাতা আর্ট স্কুলে। শুরু হলো এক নতুন অধ্যায়।
কলেজজীবন থেকে প্রভাবিত হয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথের লেখা-আঁকা দিয়ে। বলা যায়, তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে অবনীন্দ্রনাথ-অনুরাগী। স্কুল থেকেই দুচোখ দিয়ে যা কিছু দেখতেন শুষে নিতেন সবকিছুই। মানসিক বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আরো গাঢ় হতে থাকে অবনীন্দ্রনাথ। সত্যি বলতে, তিনি ছিলেন তাঁর সর্বস্ব ধ্যানে-জ্ঞানে। রেমব্রান্ট ও পল ক্লিও ভর করেছিল ছাত্রাবস্থায়। কিছুটা প্রভাবও ফেলেছিল বলা যায়। তাই সে-সময়ের অনেক কাজে তাঁর অবনীন্দ্রনাথের ভঙ্গি আর রেমব্রান্টের আলো-ছায়ার মায়াবী খেলা দেখা যেত। তিনি সেটা মেনেও নিয়েছিলেন। তবে তিনি কখনো তাঁদের নকল করার চেষ্টা করতেন না। তিনি এটা ভালোমতো জানতেন, আর্টিস্টের মন আর ভিত কীভাবে তৈরি করতে হয়। কীভাবে দেখতে হয়, কীভাবে ভাবতে হয়। আর্ট স্কুলের লাইব্রেরির নানারকম বই থেকেও তিনি অনেক কিছুই শিখতে চাইতেন। জীবনের পদে পদে হোঁচট খেয়ে তিনি শিখেছিলেন কীভাবে আঁকতে হয়। কলেজজীবনে অনেকের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন যেমন – গোপাল ঘোষ, চিন্তামণি কর, অনিল ভট্টাচার্য, সত্যেন ঘোষাল, দেবকুমার রায় চৌধুরী, রবীন্দ্র মৈত্র, কিশোরী রায়। তাঁদের সঙ্গে সরাসরি অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনাও হতো। শুধু তাই নয়, তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতাও ভাগাভাগি করে নিতেন সমানভাবে সবসময়, যা একজন শিল্পীকে মননশীল ও আধুনিক হতে সহায়তা করেছিল।
আর্ট কলেজ থেকে পাশ করার পর অন্ধকার এক জগতে ডুবে যাচ্ছিল তাঁর জীবন ক্রমাগত। বেকারত্ব – হতাশা তাঁকে গ্রাস করছিল প্রতিনিয়ত। কী করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছিলেন না। কলেজ স্ট্রিটে ঘুরে ঘুরে ফরমায়েশমতো বইয়ের ইলাসট্রেশন, চিৎপুরে বিজ্ঞাপনের নানা ছবি আঁকা সবই তিনি করেছিলেন। সে-সময় মন্দার মল্লিকের সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাঁর স্টুডিওতে অ্যানিমেটর হিসেবে যুক্ত হন নামমাত্র বেতনে। শুরু হয় আরেক জগৎ। মন্দার স্টুডিওর অমানুষিক পরিশ্রম, আর কলেজ স্ট্রিটের ফরমায়েশি কাজ শেষে রাতে ঘরে ফিরে শুরু করতেন আঁকাআঁকি। শিল্পী হওয়ার বাসনা তাঁকে যেন তখন পেয়ে বসত। প্রতিদিনই ক্যানভাসের মুখোমুখি হতেন, ভাবতেন, আঁকতেন অনেক বিষয় নিয়ে। ডুবে থাকতেন হরেকরকম আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে। তেলরং কোনোদিনই তাকে টানেনি। বরাবরই কাজ করেছেন টেম্পারা নিয়ে। সবসময় ভাবতেন কীভাবে নিজেকে পরিণত করে তোলা যায়। সে-কারণে হরেকরকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতেন। সেই সময়কার অনেক কাজে দেশ-বিদেশের অনেক শিল্পীর প্রভাব থাকলেও নিজস্ব স্বকীয়তা প্রকটভাবে প্রকাশ করতেন তার কাজের মধ্য দিয়ে, অন্যের অনুকরণে না গিয়ে শ্রদ্ধাসহ অনুধাবনই তাঁর সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল।
মূলত সত্তরের দশক থেকে গণেশ পাইনের ছবি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেতে থাকে শিল্পী ও শিল্পরসিক মহলে। তিনিও সে-সময় থেকে শিল্পের গভীরে প্রবেশ করেন পুরোপুরিভাবে। সত্তরের দশক থেকে আশির দশকে কিছু অসাধারণ কাজ ক্যানভাসে জায়গা করে নেয়, যা তাঁকে এগিয়ে যেতে অনেকাংশে সাহায্য করে। সত্যি কথা বলতে, সেই সময় থেকে তিনি হতে থাকেন পরিণত শিল্পী আর পেশাদার। সত্তরের দশকে তাঁর ছবির মধ্যে যে অন্ধকারাচ্ছন্ন আবহ ছিল, সেটা আশির দশকে আলোর দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। ‘দি টিথ’, ‘ঘাতক’, ‘হর্স অ্যান্ড হেড’, ‘হারবার’, ‘ব্ল্যাক মুন’, ‘মারসেট’ ইত্যাদি অনেক বিখ্যাত ছবি আত্মপ্রকাশ পায়, যা আজো অসাধারণ হয়ে আছে। এ-সময়টাতে তিনি নিজেকে প্রসারিত করেন। বলা চলে, এটাই তাঁর মাহেন্দ্রক্ষণ। তাঁর ছবির বিষয়বস্তু কী ছিল না – লতাপাতা, গাছফুল, পাখি, কঙ্কাল, পুরনো দেয়াল, হরিণ, মানুষ, ইতিহাস, চাঁদ সবই। অনেক বিষয় বারবার ঘুরেফিরে এলেও তার প্রকাশভঙ্গি ও রূপ ছিল ভিন্ন ভিন্ন। যেমন ছুরি, মুকুট, দাঁত – এগুলো প্রতীক হিসেবে অনেক ছবিতে দেখা গেছে; কিন্তু ক্লান্তি বা অবসাদ তৈরি করেনি কখনো।
তিনি সবসময় সুন্দরের সাধনায় লিপ্ত ছিলেন। কী করে একটি চিত্রকর্মকে অপরূপ করে গড়ে তোলা যায়, সেটা তিনি ভালোভাবে রপ্ত করেছিলেন। বিষয় নির্বাচন, রং-প্রয়োগ, রেখা, অবয়ব নির্মাণ, মুখ-চোখের ভঙ্গি সবকিছু মিলে অসুন্দর বস্তুর মধ্যেও সৌন্দর্যের অবগাহন ও অন্বেষণে তিনি মেতে ছিলেন। প্রতিটি ছবির মধ্যে তাই ফুটে ওঠে মায়াবী এক রূপের মাধুর্য। তাঁর নিবিড় মমতা আর রূপের মহিমা পুরোটাই ঢেলে দিতেন তাঁর সৃষ্টিতে। সে-কারণে প্রতিটি ছবির দিকে তাকালে মনে হয়, কোথাও কোনো খামতি নেই। ‘দি টিথে’ দেখা যায় কঙ্কালসার মুখে কী ভয়াবহ সৌন্দর্য নিয়ে একসারি দাঁত। ‘ব্ল্যাক মুনে’ দেখা যায় কালো চাঁদের পেছনে হলুদ রঙের সোনার হরিণ পটোলচেরা দিঘল চোখ অবিন্যস্ত পাঁজর নিয়ে চাঁদের আলোয় বিমোহিত। অশুভ কালো চাঁদ পাওয়া না পাওয়ার বেদনা, টানপড়েন-দ্বিধাদ্বন্দ্ব সব মিলে এক গভীর আত্মমগ্নতা। ‘মারসেটে’ দেখা যায়, হলুদ রঙের মৎস্যকন্যা দিঘল কালো চুল, একহাত লেজের কাছে অন্য হাত চুলে, গলায় কয়েকটা মালা, পেছনে নীলাভ জলের গভীরতা এখানেও দিঘল মায়াবী চোখ অপলক তাকিয়ে, ধীর-শান্ত (কিছুটা মরমী বলা যায়)। শিল্পীর একটা আর্তি গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে। চোখ আঁকার বিষয়ে গণেশ পাইনের একটা অন্য ধরনের মাধুর্য ছিল। দিঘল পদ্মকোরকের মতো চোখ, যেখানে অবলীলায় ফুটে উঠত আনন্দ-বেদনা, দুঃখ-সুুখের এক মায়াবী খেলা। পুতুল প্রতিমার ছেলেবেলায় দেখা সেই চোখ তাঁর প্রতিটি ছবিতে বলে যেত আলাদাভাবে এক গল্প। এক আলাদা স্বকীয়তা ফুটে উঠত সেই চোখের ভেতর। আশ্চর্য এক অলৌকিক দৃষ্টি – দৃষ্টি যেন পার্থব নয়।
গণেশ পাইনের চরিত্রের বড় দিক হলো, চারপাশে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনা, বিষয়বস্তুকে চিরে চিরে দেখে তার ভেতরের অংশটিকে বিশ্লেষণ করতেন। কলকাতার ঘরবাড়ি, জনজীবন, ইতিহাস, ভেঙেপড়া সমাজ, দারিদ্র্য, যন্ত্রণা থেকে তিনি অবগাহন করেছেন তাঁর শিল্পের খোরাক। বারবার উঠে এসেছে সে-গল্প।
জীবনের সত্যটাকে ধরতে চেয়েছেন বারবার বা দেখেছেন, ভেবেছেন, অনুভব করেছেন তাঁর মধ্যে। তাঁর সৃষ্টিশীল মন, আঁকার কলাকৌশল, আবেগ, সূক্ষ্ম অনুভূতি সবকিছু মিলে গড়ে তুলেছিলেন চিত্রকলার এক স্থায়ী আসন। একজন শিল্পীর যা কিছু প্রয়োজন, তিনি ছিলেন সে-বিষয়ে সম্পূর্ণ সচেতন। শুধু টেম্পারা দিয়ে এতো উন্নতমানের শিল্পকর্ম সৃষ্টি করা যায়, তিনি সেটা প্রমাণ করে গেছেন। তার বিষয়বস্তু ও শিল্পীর বিশেষ উপস্থাপনা টেম্পারার গাম্ভীর্যে সবসময় বজায় রেখেছে এক স্বাতন্ত্র্য।
কলকাতা সোসাইটি অব কনটেম্পোরারির সদস্য ছিলেন ১৯৬৩ সাল থেকে। মূল উদ্দেশ্য ছিল ছবি আঁকার অদম্য স্পৃহা। অনেকে সে-সময় সদস্য ছিলেন – সুহাস রায়, সুনীল দাস, সনৎ করসহ অনেক নবীন-প্রবীণ শিল্পী ও ভাস্কর। পরে আরো অনেকে যোগ দেন – বিকাশ ভট্টাচার্য, সুনীল গুপ্ত, লালু প্রসাদসহ অনেকে। সে-সময়ে অনেক ছবি আঁকা হয়েছিল। প্রদর্শনী হতো নিয়মিত কলকাতা ছাড়া বড় বড় অন্য শহরে। দারিদ্র্য হতাশা যদিও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়েছিল; কিন্তু কখনোই কোনোকিছু থেকে থামেননি। কলকাতার শিল্পী ও শিল্পবেত্তারা অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করলেও বোম্বে, দিল্লি থেকে স্বাগত জানিয়েছেন উদারভাবে। গণেশ পাইনের জীবনে শিল্পী হয়ে ওঠার জন্য সোসাইটির অবদান সেই সময় ছিল অনেক। দীর্ঘ ২৫ বছর পর স্বেচ্ছায় বিদায় নেন দল থেকে। এখানে বলে রাখা ভালো, সোসাইটি অব কনটেম্পোরারি গ্র“প আজো সর্বভারতীয় প্রধান দলগুলোর অন্যতম। এ-যুগের প্রদর্শনী দেখার জন্য শিল্পরসিক সমাজ সবসময় অপেক্ষায় থাকে। সুদীর্ঘ এই সময় ধরে এই গ্র“প তাদের কাজের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার জগৎকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছে এবং যে-আনন্দ শিল্পরসিক সমাজকে দিয়েছে, তার পেছনে শক্তিশালী শিল্পী গণেশ পাইনের এক বিশাল অবদান রয়েছে, সে-কথা অনস্বীকার্য।
মানুষের জীবন মৃত্যুশাসিত – এটা তিনি মেনে নিয়েছিলেন খুব গভীরভাবে। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে মৃত্যুকে অনেকবার খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন বলা যায়। তখন থেকে একরকমের মৃত্যুশোক তাকে আচ্ছন্ন করে রাখত। সে-কারণে প্রায়শই তাকে নানা ধরনের বিষণœতা ডুবিয়ে রাখত। তীব্র অবসাদ যেন ছেয়ে দিত সবকিছুকে, মিথ্যা মনে হতো জীবনের নানা রঙের ডালপালাকে। বাবার পরে সবচেয়ে কাছের মানুষ ঠাকুরমা, একে একে সেজো কাকা, ছোট কাকা, যার হাত ধরে আলোর পথে ছুটে যাওয়া সেই পিতৃপ্রতিম কাকাও-একদিন চলে গেলেন। এভাবে ঘন ঘন মৃত্যুশোক থেকে একধরনের বিষাদ তৈরি হয়েছিল তার বুকের ভেতর, সে-অবসাদে তিনি প্রায়শই ডুবে ছিলেন। স্বজন হারানোর বেদনা বারবার তাঁকে ভেঙেছে চুরমার করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মৃত্যুচিন্তার রূপও বদলে গিয়েছিল। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘মৃত্যু সম্পর্কে আমার বোধটা আর পালিয়ে বাঁচার নেই। একে চিনবার, আপন করবার একটা চেষ্টা শুরু হয়েছে। মৃতদেহের মধ্যে মৃত্যু নেই, এটা আমরা জীবিতরাই অনুভব করতে পারি। আমার বোধের দিক থেকে একমাত্র পরম বিস্ময় নিয়ে মৃত্যু অপেক্ষা করছে। শুধু দেখা হওয়া একটা অপেক্ষা।’
গণেশ পাইন আজ ভারতবর্ষের একজন শ্রেষ্ঠ শিল্পী। অত্যন্ত সংবেদনশীল ও আন্তরিক এই শিল্পী নিয়মিত ও নিরলসভাবে এঁকে গেছেন। আমৃত্যু প্রায় সারাজীবনই তিনি কাটিয়েছেন গেরুয়া রঙের পাঞ্জাবি আর ধুতি পরে। খুবই সহজ-সরল জীবনযাপনে ছিলেন অভ্যস্ত। প্রতিযোগিতা আর সাফল্যের উল্লাসকে বড় অপছন্দ করতেন। বিরোধের জায়গাগুলো থেকে সবসময় সরিয়ে রাখতেন নিজেকে। গণেশ পাইন বারবার পেতে চেয়েছিলেন জীবনের স্বাদ, জীবনতৃষ্ণা ছিল তাঁর আকণ্ঠ। তাই তাঁর প্রতিটি শিল্পকর্মে ফুটে ওঠে তাঁর নিজের বোধ। ভিন্ন ভিন্ন দিক পরিবর্তন করে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে বিষয় নির্বাচন করে তার ভেতরে ছড়িয়ে দিতেন রঙের এক প্রলেপ নিপুণ অভিজ্ঞতায়। তাঁর অসাধারণ বিষয়, অনন্য প্রকাশভঙ্গি, প্রতিভার বিবর্তনের রেখা আর রং প্রতিনিয়ত চালাত এক গভীর শিল্পিত অনুসন্ধান।
M‡Yk cvBb I Zuvi wkwíZ AbymÜvb
b~i“¾vgvb Kvqmvi
wKQy wKQy gvbyl KvjRqx n‡q _v‡Kb Zuvi K‡g©i ga¨ w`‡q| mvaviY Rxebhvc‡bi g‡a¨ †_‡KI M‡o †Zv‡jb AmvaviY GK c„w_ex| wb‡Ri Rxe‡bi e¨vwß wejvm I ˆewPΨ‡K †V‡j w`‡q GK AveZ©, ˆZwi K‡ib Avi Zvi g‡a¨ wbgMœ _v‡Kb fv‡jvjvMv-fv‡jvevmv, myL-`ytL, ¯^cœ-mgvR Avi
Rxebhvc‡bi bvbv fvOvMov w`K wb‡q| wkíx M‡Yk cvBb eiveiB †mB c„w_ex wb‡q myLx wQ‡jb, g„Zy¨i AvM ch©š— †mB AmvaviY c„w_ex Mo‡ZB †hb wQ‡jb e¨¯—| axi, kvš—, cwikxwjZfv‡e GwM‡q †h‡Z †P‡q‡Qb cÖwZw`b, Mfxi GK wbtm½Zv‡K ey‡K †P‡c †i‡L Avov‡j †_‡K‡Qb AvRxeb| †Qv‡Ubwb L¨vwZi †cQ‡b †Kv‡bvw`b| †g‡Z wQ‡jb cÖwZwbqZ wkíKjvi wbZ¨bZzb cix¶‡Y| webv cÖPv‡i webv Avo¤^‡i Rq K‡i‡Qb wek¦| Zuvi fvebv Avi Zzwj memgq wbR¯^ GK fvlv wb‡q GwM‡q †M‡Q Mfxi †_‡K Mfx‡i| Rxeb I wk‡íi AZj Mfx‡i Wy‡e _vK‡Z †P‡q‡Qb me©`v|
Rxeb I wkí wb‡q wZwb GK mv¶vrKv‡i e‡j‡Qb, ÔAvgvi Rxe‡b e¨vwß †bB, ˆewPΨ †bB, åg‡Y Avgvi cÖej Abxnv| Avgvi Kv‡R Rb¥vwR©Z GK †eva, hv cÖvPxb R‡j †f‡m Avmv †Kv‡bv ¸‡j¥i g‡Zv, wkKo mÂvi Avgvi g‡bi Mfxi cÖ‡`‡k AweiZ N‡U P‡j‡Q| Rxeb I wkí-msµvš— Avgvi hveZxq ¯§„wZ-¯^cœ, AwfÁZv meB Zvi ms‡kwlZ n‡q‡Q †mB †ev‡a| †mB ms‡k‡li Zvrch© Avwg mwVK eywS bv, ïay Zvi wµqv Abyfe Ki‡Z cvwi|Õ Gi †fZi †_‡K †evSv hvq wkíxi wbR¯^ wkím„wói g~jK_v|
M‡Yk cvBb Rb¥MÖnY K‡ib 1937 mv‡j KjKvZvi Kv‡Q Avw` mßMÖv‡g| hw`I wZwb Ávb nIqvi ci Avi hvbwb †Kv‡bvw`bB, wQ‡jb KjKvZvq| cÖvPxb e‡bw` †hŠ_ cwiev‡i eo n‡q‡Qb| Qwe AuvKvi †SuvK KLb †h ˆZwi n‡qwQj, wZwb Zv eyS‡Z cv‡ibwb| Ávb nIqvi ci †_‡K AuvwKeywK wb‡q e¨¯— wQ‡jb| evwo‡Z GKUv eo †¯U wQj Kv‡Vi †d«g Kiv, †mB †¯UwU GKmgq Zuvi `L‡j P‡j Av‡m| †mwU‡K ay‡qgy‡Q SKgK K‡i †mLv‡bB Pvjv‡Zb n‡iKiK‡gi KvUvKzwU I †iLvcvZ| GKmgq Avb‡›` eyK f‡i †hZ| VvKzigvi Kv‡Q bvbv iK‡gi KvíwbK Mí ï‡b Zvi Pwiθ‡jv e„_v AuvKvi †Póvq Zuvi KuvPv nvZ Aweivg †g‡Z _vKZ| e¨_© cÖ‡Póv Pvjv‡Zb bvbv iƒc †`Iqvi| AvnZ g‡b wd‡i Avm‡Zb wKš‘ †_‡g _vKZ bv Zuvi AuvKvi AvKv•¶v| Pvi eQi eq‡m fwZ© nb evwoi Kv‡Q wmwU ¯‹z‡j Bbd¨v›U K¬v‡m| eB-LvZv, cÖvBR Avi ¯‹z‡ji bvbv wbqg-Kvbyb w`‡q ïi“ n‡jv Rxe‡bi cÖ_g Aa¨vq| KL‡bv KL‡bv ¯‹z‡j †h‡Z gb PvBZ bv| mybmvb †mB g¯— `ycy‡i duvKv evwo‡Z mevi †PvL duvwK w`‡q M‡o Zzj‡Zb A™¢yZ GK RMr| Zuvi fvebv¸‡jv‡K iƒc w`‡Zb bvbvfv‡e| KvMR w`‡q evbv‡Zb †bŠKv, Kvc‡o w`‡q w`‡Zb cvj, Zvici ev_i“‡gi †PŠev”Pvq fvwm‡q w`‡q cv‡j jvwM‡q w`‡Zb Av¸b| `~i †_‡K †`L‡Zb Avcbg‡b †bŠKvi `nb| GiKg d¨v›Uvwm wb‡qB Wy‡e wQ‡jb ˆkke-ˆK‡kv‡ii w`b¸‡jvq| Aíeq‡m evev‡K nvwi‡q VvKzigv Avi KvKv‡`i AuvK‡o a‡iwQ‡jb| ¯‹z‡ji MwÊ †cwi‡q wmwU K‡jR †_‡K B›UviwgwW‡qU cvk Kivi ci D‡V hvq Zuvi †jLvcovi B”Qvkw³| gv Avi cuvP fvB‡evb‡K wb‡q eo Amnvq n‡q c‡ob| AwbðqZv evievi nvbv w`w”Qj †mB mg‡q| PvKwi K‡i msmv‡ii nvj ai‡eb e‡j gvbwmK GKUv cÖ¯‘wZ wb‡q GwM‡q hvw”Q‡jb; wKš‘ ev` mva‡jb KvKviv| G‡Zv Aíeq‡m PvKwi K‡i msmv‡ii nvj ai‡eb – GUv †g‡b wb‡Z cviwQ‡jb bv| Zuvi Qwe AuvKvi †SuvK †`‡L KvKvivB cvwV‡q w`‡jb AvU© K‡j‡R fwZ© nIqvi Rb¨| 1955 mv‡j 18 eQi eq‡m mivmwi wØZxq e‡l©i QvÎ wn‡m‡e fwZ© n‡jb KjKvZv AvU© ¯‹z‡j| ïi“ n‡jv GK bZzb Aa¨vq|
K‡jRRxeb †_‡K cÖfvweZ n‡qwQ‡jb Aebx›`ªbv‡_i †jLv-AuvKv w`‡q| ejv hvq, wZwb wQ‡jb g‡bcÖv‡Y Aebx›`ªbv_-AbyivMx| ¯‹zj †_‡KB `y‡PvL w`‡q hv wKQy †`L‡Zb ï‡l wb‡Zb mewKQyB| gvbwmK e„w× I weKvk NUvi m‡½ m‡½ Av‡iv Mvp n‡Z _v‡K Aebx›`ªbv_| mwZ¨ ej‡Z, wZwb wQ‡jb Zuvi me©¯^ a¨v‡b-Áv‡b| †igeªv›U I cj wK¬I fi K‡iwQj QvÎve¯’vq| wKQyUv cÖfveI †d‡jwQj ejv hvq| ZvB †m-mg‡qi A‡bK Kv‡R Zuvi Aebx›`ªbv‡_i fw½ Avi †igeªv‡›Ui Av‡jv-Qvqvi gvqvex †Ljv †`Lv †hZ| wZwb †mUv †g‡bI wb‡qwQ‡jb| Z‡e wZwb KL‡bv Zuv‡`i bKj Kivi †Póv Ki‡Zb bv| wZwb GUv fv‡jvg‡Zv Rvb‡Zb, AvwU©‡÷i gb Avi wfZ Kxfv‡e ˆZwi Ki‡Z nq| Kxfv‡e †`L‡Z nq, Kxfv‡e fve‡Z nq| AvU© ¯‹z‡ji jvB‡eªwii bvbviKg eB †_‡KI wZwb A‡bK wKQyB wkL‡Z PvB‡Zb| Rxe‡bi c‡` c‡` †nuvPU †L‡q wZwb wk‡LwQ‡jb Kxfv‡e AuvK‡Z nq| K‡jRRxe‡b A‡b‡Ki mvwbœa¨ †c‡qwQ‡jb †hgb – †Mvcvj †Nvl, wPš—vgwY Ki, Awbj fÆvPvh©, m‡Z¨b †Nvlvj, †`eKzgvi ivq †PŠayix, iex›`ª ˆgÎ, wK‡kvix ivq| Zuv‡`i m‡½ mivmwi A‡bK welq wb‡q Av‡jvPbvI n‡Zv| ïay ZvB bq, Zuv‡`i ¸i“Z¡c~Y© AwfÁZvI fvMvfvwM K‡i wb‡Zb mgvbfv‡e memgq, hv GKRb wkíx‡K gbbkxj I AvaywbK n‡Z mnvqZv K‡iwQj|
AvU© K‡jR †_‡K cvk Kivi ci AÜKvi GK RM‡Z Wy‡e hvw”Qj Zuvi Rxeb µgvMZ| †eKviZ¡ – nZvkv Zuv‡K MÖvm KiwQj cÖwZwbqZ| Kx Ki‡eb wKQyB †f‡e cvw”Q‡jb bv| K‡jR w÷ª‡U Ny‡i Ny‡i digv‡qkg‡Zv eB‡qi Bjvm‡Uªkb, wPrcy‡i weÁvc‡bi bvbv Qwe AuvKv meB wZwb K‡iwQ‡jb| †m-mgq g›`vi gwj‡Ki m‡½ †`Lv nIqvq Zuvi ÷zwWI‡Z A¨vwb‡gUi wn‡m‡e hy³ nb bvggvÎ †eZ‡b| ïi“ nq Av‡iK RMr| g›`vi ÷zwWIi AgvbywlK cwikÖg, Avi K‡jR w÷ª‡Ui digv‡qwk KvR †k‡l iv‡Z N‡i wd‡i ïi“ Ki‡Zb AuvKvAuvwK| wkíx nIqvi evmbv Zuv‡K †hb ZLb †c‡q emZ| cÖwZw`bB K¨vbfv‡mi gy‡LvgywL n‡Zb, fve‡Zb, AuvK‡Zb A‡bK welq wb‡q| Wy‡e _vK‡Zb n‡iKiKg AvaywbK cix¶v-wbix¶v wb‡q| †Zjis †Kv‡bvw`bB Zv‡K Uv‡bwb| eiveiB KvR K‡i‡Qb †U¤úviv wb‡q| memgq fve‡Zb Kxfv‡e wb‡R‡K cwiYZ K‡i †Zvjv hvq| †m-Kvi‡Y n‡iKiK‡gi cix¶v-wbix¶v Pvjv‡Zb| †mB mgqKvi A‡bK Kv‡R †`k-we‡`‡ki A‡bK wkíxi cÖfve _vK‡jI wbR¯^ ¯^KxqZv cÖKUfv‡e cÖKvk Ki‡Zb Zvi Kv‡Ri ga¨ w`‡q, A‡b¨i AbyKi‡Y bv wM‡q kÖ×vmn AbyavebB Zuvi mvd‡j¨i g~j PvweKvwV wQj|
g~jZ mˇii `kK †_‡K M‡Yk cvB‡bi Qwe we‡klfv‡e ¸i“Z¡ †c‡Z _v‡K wkíx I wkíiwmK gn‡j| wZwbI †m-mgq †_‡K wk‡íi Mfx‡i cÖ‡ek K‡ib cy‡ivcywifv‡e| mˇii `kK †_‡K Avwki `k‡K wKQy AmvaviY KvR K¨vbfv‡m RvqMv K‡i †bq, hv Zuv‡K GwM‡q †h‡Z A‡bKvs‡k mvnvh¨ K‡i| mwZ¨ K_v ej‡Z, †mB mgq †_‡K wZwb n‡Z _v‡Kb cwiYZ wkíx Avi †ckv`vi| mˇii `k‡K Zuvi Qwei g‡a¨ †h AÜKviv”Qbœ Aven wQj, †mUv Avwki `k‡K Av‡jvi w`‡K cÖevwnZ n‡Z _v‡K| Ôw` wU_Õ, ÔNvZKÕ, Ônm© A¨vÛ †nWÕ, ÔnvieviÕ, Ôe¨vK gybÕ, Ôgvi‡mUÕ BZ¨vw` A‡bK weL¨vZ Qwe AvZ¥cÖKvk cvq, hv Av‡Rv AmvaviY n‡q Av‡Q| G-mgqUv‡Z wZwb wb‡R‡K cÖmvwiZ K‡ib| ejv P‡j, GUvB Zuvi gv‡n›`ª¶Y| Zuvi Qwei welqe¯‘ Kx wQj bv – jZvcvZv, MvQdzj, cvwL, K¼vj, cyi‡bv †`qvj, nwiY, gvbyl, BwZnvm, Puv` meB| A‡bK welq evievi Ny‡iwd‡i G‡jI Zvi cÖKvkfw½ I iƒc wQj wfbœ wfbœ| †hgb Qywi, gyKzU, `uvZ – G¸‡jv cÖZxK wn‡m‡e A‡bK Qwe‡Z †`Lv †M‡Q; wKš‘ K¬vwš— ev Aemv` ˆZwi K‡iwb KL‡bv|
wZwb memgq my›`‡ii mvabvq wjß wQ‡jb| Kx K‡i GKwU wPÎKg©‡K Aciƒc K‡i M‡o †Zvjv hvq, †mUv wZwb fv‡jvfv‡e iß K‡iwQ‡jb| welq wbe©vPb, is-cÖ‡qvM, †iLv, Aeqe wbg©vY, gyL-†Pv‡Li fw½ mewKQy wg‡j Amy›`i e¯‘i g‡a¨I †mŠ›`‡h©i AeMvnb I A‡š^l‡Y wZwb †g‡Z wQ‡jb| cÖwZwU Qwei g‡a¨ ZvB dz‡U I‡V gvqvex GK iƒ‡ci gvayh©| Zuvi wbweo ggZv Avi iƒ‡ci gwngv cy‡ivUvB †X‡j w`‡Zb Zuvi m„wó‡Z| †m-Kvi‡Y cÖwZwU Qwei w`‡K ZvKv‡j g‡b nq, †Kv_vI †Kv‡bv LvgwZ †bB| Ôw` wU‡_Õ †`Lv hvq K¼vjmvi gy‡L Kx fqven †mŠ›`h© wb‡q GKmvwi `uvZ| Ôe¨vK gy‡bÕ †`Lv hvq Kv‡jv Puv‡`i †cQ‡b njy` i‡Oi †mvbvi nwiY c‡Uvj‡Piv w`Nj †PvL Aweb¨¯— cuvRi wb‡q Puv‡`i Av‡jvq we‡gvwnZ| Aïf Kv‡jv Puv` cvIqv bv cvIqvi †e`bv, Uvbc‡ob-wØavØ›Ø me wg‡j GK Mfxi AvZ¥gMœZv| Ôgvi‡m‡UÕ †`Lv hvq, njy` i‡Oi grm¨Kb¨v w`Nj Kv‡jv Pzj, GKnvZ †j‡Ri Kv‡Q Ab¨ nvZ Pz‡j, Mjvq K‡qKUv gvjv, †cQ‡b bxjvf R‡ji MfxiZv GLv‡bI w`Nj gvqvex †PvL AcjK ZvwK‡q, axi-kvš— (wKQyUv gigx ejv hvq)| wkíxi GKUv AvwZ© Mfxifv‡e cÖKvk †c‡q‡Q| †PvL AuvKvi wel‡q M‡Yk cvB‡bi GKUv Ab¨ ai‡bi gvayh© wQj| w`Nj cÙ‡Kvi‡Ki g‡Zv †PvL, †hLv‡b Aejxjvq dz‡U DVZ Avb›`-†e`bv, `ytL-myy‡Li GK gvqvex †Ljv| cyZzj cÖwZgvi †Q‡j‡ejvq †`Lv †mB †PvL Zuvi cÖwZwU Qwe‡Z e‡j †hZ Avjv`vfv‡e GK Mí| GK Avjv`v ¯^KxqZv dz‡U DVZ †mB †Pv‡Li †fZi| Avðh© GK A‡jŠwKK `„wó – `„wó †hb cv_©e bq|
M‡Yk cvB‡bi Pwi‡Îi eo w`K n‡jv, Pvicv‡k N‡U hvIqv cÖwZwU NUbv, welqe¯‘‡K wP‡i wP‡i †`‡L Zvi †fZ‡ii AskwU‡K we‡klY Ki‡Zb| KjKvZvi Nievwo, RbRxeb, BwZnvm, †f‡Ocov mgvR, `vwi`ª¨, hš¿Yv †_‡K wZwb AeMvnb K‡i‡Qb Zuvi wk‡íi †LvivK| evievi D‡V G‡m‡Q †m-Mí|
Rxe‡bi mZ¨Uv‡K ai‡Z †P‡q‡Qb evievi ev †`‡L‡Qb, †f‡e‡Qb, Abyfe K‡i‡Qb Zuvi g‡a¨| Zuvi m„wókxj gb, AuvKvi Kjv‡KŠkj, Av‡eM, m~² Abyf~wZ mewKQy wg‡j M‡o Zz‡jwQ‡jb wPÎKjvi GK ¯’vqx Avmb| GKRb wkíxi hv wKQy cÖ‡qvRb, wZwb wQ‡jb †m-wel‡q m¤ú~Y© m‡PZb| ïay †U¤úviv w`‡q G‡Zv DbœZgv‡bi wkíKg© m„wó Kiv hvq, wZwb †mUv cÖgvY K‡i †M‡Qb| Zvi welqe¯‘ I wkíxi we‡kl Dc¯’vcbv †U¤úvivi Mv¤¢x‡h© memgq eRvq †i‡L‡Q GK ¯^vZš¿¨|
KjKvZv †mvmvBwU Ae Kb‡U‡¤úvivwii m`m¨ wQ‡jb 1963 mvj †_‡K| g~j D‡Ïk¨ wQj Qwe AuvKvi A`g¨ ¯ú„nv| A‡b‡K †m-mgq m`m¨ wQ‡jb – mynvm ivq, mybxj `vm, mbr Kimn A‡bK bexb-cÖexY wkíx I fv¯‹i| c‡i Av‡iv A‡b‡K †hvM †`b – weKvk fÆvPvh©, mybxj ¸ß, jvjy cÖmv`mn A‡b‡K| †m-mg‡q A‡bK Qwe AuvKv n‡qwQj| cÖ`k©bx n‡Zv wbqwgZ KjKvZv Qvov eo eo Ab¨ kn‡i| `vwi`ª¨ nZvkv hw`I Av‡óc„‡ô Rwo‡qwQj; wKš‘ KL‡bvB †Kv‡bvwKQy †_‡K _v‡gbwb| KjKvZvi wkíx I wkí‡eËviv AeÁv I D‡c¶v Ki‡jI †ev‡¤^, w`wj †_‡K ¯^vMZ Rvwb‡q‡Qb D`vifv‡e| M‡Yk cvB‡bi Rxe‡b wkíx n‡q IVvi Rb¨ †mvmvBwUi Ae`vb †mB mgq wQj A‡bK| `xN© 25 eQi ci †¯^”Qvq we`vq †bb `j †_‡K| GLv‡b e‡j ivLv fv‡jv, †mvmvBwU Ae Kb‡U‡¤úvivwi MÖ“c Av‡Rv me©fviZxq cÖavb `j¸‡jvi Ab¨Zg| G-hy‡Mi cÖ`k©bx †`Lvi Rb¨ wkíiwmK mgvR memgq A‡c¶vq _v‡K| my`xN© GB mgq a‡i GB MÖ“c Zv‡`i Kv‡Ri ga¨ w`‡q wkíKjvi RMr‡K †hfv‡e mg„× K‡i‡Q Ges †h-Avb›` wkíiwmK mgvR‡K w`‡q‡Q, Zvi †cQ‡b kw³kvjx wkíx M‡Yk cvB‡bi GK wekvj Ae`vb i‡q‡Q, †m-K_v Ab¯^xKvh©|
gvby‡li Rxeb g„Zz¨kvwmZ – GUv wZwb †g‡b wb‡qwQ‡jb Lye Mfxifv‡e| Ávb nIqvi ci †_‡K g„Zz¨‡K A‡bKevi Lye KvQ †_‡K †`‡LwQ‡jb ejv hvq| ZLb †_‡K GKiK‡gi g„Zz¨‡kvK Zv‡K Av”Qbœ K‡i ivLZ| †m-Kvi‡Y cÖvqkB Zv‡K bvbv ai‡bi welYœZv Wywe‡q ivLZ| Zxeª Aemv` †hb †Q‡q w`Z mewKQy‡K, wg_¨v g‡b n‡Zv Rxe‡bi bvbv i‡Oi Wvjcvjv‡K| evevi c‡i me‡P‡q Kv‡Qi gvbyl VvKzigv, G‡K G‡K †m‡Rv KvKv, †QvU KvKv, hvi nvZ a‡i Av‡jvi c‡_ Qy‡U hvIqv †mB wcZ…cÖwZg KvKvI-GKw`b P‡j †M‡jb| Gfv‡e Nb Nb g„Zz¨‡kvK †_‡K GKai‡bi welv` ˆZwi n‡qwQj Zvi ey‡Ki †fZi, †m-Aemv‡` wZwb cÖvqkB Wy‡e wQ‡jb| ¯^Rb nviv‡bvi †e`bv evievi Zuv‡K †f‡O‡Q Pzigvi K‡i| eqm evovi m‡½ m‡½ Zuvi g„Zz¨wPš—vi iƒcI e`‡j wM‡qwQj| GK mv¶vrKv‡i wZwb e‡jwQ‡jb, Ôg„Zz¨ m¤ú‡K© Avgvi †evaUv Avi cvwj‡q euvPvi †bB| G‡K wPbevi, Avcb Kievi GKUv †Póv ïi“ n‡q‡Q| g„Z‡`‡ni g‡a¨ g„Zz¨ †bB, GUv Avgiv RxweZivB Abyfe Ki‡Z cvwi| Avgvi †ev‡ai w`K †_‡K GKgvÎ cig we¯§q wb‡q g„Zz¨ A‡c¶v Ki‡Q| ïay †`Lv nIqv GKUv A‡c¶v|Õ
M‡Yk cvBb AvR fviZe‡l©i GKRb †kÖô wkíx| AZ¨š— ms‡e`bkxj I Avš—wiK GB wkíx wbqwgZ I wbijmfv‡e Gu‡K †M‡Qb| Avg„Zz¨ cÖvq mvivRxebB wZwb KvwU‡q‡Qb †Mi“qv i‡Oi cvÄvwe Avi aywZ c‡i| LyeB mnR-mij Rxebhvc‡b wQ‡jb Af¨¯—| cÖwZ‡hvwMZv Avi mvd‡j¨i Djvm‡K eo AcQ›` Ki‡Zb| we‡iv‡ai RvqMv¸‡jv †_‡K memgq mwi‡q ivL‡Zb wb‡R‡K| M‡Yk cvBb evievi †c‡Z †P‡qwQ‡jb Rxe‡bi ¯^v`, RxebZ…òv wQj Zuvi AvKÉ| ZvB Zuvi cÖwZwU wkíK‡g© dy‡U I‡V Zuvi wb‡Ri †eva| wfbœ wfbœ w`K cwieZ©b K‡i AZ¨š— wbLyuZfv‡e welq wbe©vPb K‡i Zvi †fZ‡i Qwo‡q w`‡Zb i‡Oi GK cÖ‡jc wbcyY AwfÁZvq| Zuvi AmvaviY welq, Abb¨ cÖKvkfw½, cÖwZfvi weeZ©‡bi †iLv Avi is cÖwZwbqZ PvjvZ GK Mfxi wkwíZ AbymÜvb|
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.