ব্রহ্মপুত্রের একান্ত নিজের এক গান আছে

তার বিশাল বিশাল চর, চরের কাশবন

সরিষার হলদে বান, জলের ভয়াল পাঁকের

যে-স্বরলিপি, যে-সুর তা আর কারো নেই

তার কাছে এলে আর কোনো গান শোনা যায় না

মোসার্ত, ম্যারাডোনা কি মাইকেল থেকে

জ্যানেট জ্যাকসন, সাকিরা কি ডায়নার

দেহ ও প্রেমের গান, গল্প এখানে

কোনো সুর খুঁজে পায় না, হয়তো তা পায়

ভল্গা, টেম্স কি হার্ডসনের তীরে

একদা তুমি বলেছিলে তার শম্ভুগঞ্জ

ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে, তার কাশবনে

চরের বিছানায় শোয়ে আমরা ছবি তুলব

অতঃপর আমি তোমাকে নিয়ে তার পাড় ধরে

হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে

তার অশান্ত স্রোতে পাল তুলে

চলতে চলতে চলতে চলতে

দিগন্তে মিশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম – এতকাল

পর এসে দেখলাম এইসব তার চরে অনির্বাণ

তৃষ্ণা, কোনো গান, কোনো গল্পই সে মোছেনি

কতো জল গড়িয়ে গেছে তবু : আমাদের সেই

অচরিতার্থ স্বপ্নের স্বরলিপি তার বিস্তৃত চরায়

এমনকি জলের পাঁকে, আমাদের না-তোলা

চলচ্চিত্র তার শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের ওপর জীবন্ত

ও ব্রহ্মপুত্র, তোমার বুকে যেভাবে নিজের সঙ্গে

দেখা মেলে আর কোথাও নয়, তোমার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে

প্রাণ খুলে যেভাবে গাওয়া যায় আর কারো সাথে নয়

তুমি আমার নিজের জন্য কান্নার এক অবারিত ঠাঁই