দুটি কবিতা

সাযযাদ কাদির

তবু

মণিমালা জানে

সে আমার মণিমালা।

তবুও মণিমালা যেন মণিমালা নয় –

এইভাবে মণিমালা থাকে

মণিমালা হয়ে।

অবশেষে – সব শেষে

তবু আমি চিনেছি তাকে –

জেনেছি তাকে আমার মণিমালা।

তবু সে দেখে না আমাকে –

দেখে না আমার কিছু,

বলে না কোনো কথা।

তাহলে কাকে দেখে মণিমালা?

কাকে বলে কথা?

এত কথা?

তবুও মণিমালা জানে

আমার হৃদয়ে থাকে সে

আমারই হৃদয় হয়ে।

মণিমালা তাই

আমারই ভালোবাসা হয়ে

আমারই কষ্ট পায় –

কাঁদে মণিমালা হয়ে।

বৃষ্টিবিলীন

মণিমালা, তোমার বর্ষা এলো আজ এই শহরে।

কখনো সন্ধ্যায় শনশনে হাওয়ায়-হাওয়ায় নামে ফিনফিনে বৃষ্টি

কখনো টিপটিপ সারাদিন, কখনো ইলশে গুঁড়ি।

তারও আগে একদিন এক সকালে

        প্রথম বৃষ্টির একটি রুপোলি ফোঁটা

                ঝলমল করে উঠেছিল হঠাৎ

                       আমার জানালার পাশে

                               নাগকেশরের একটি পাতায়।

মণিমালা, এই বৃষ্টির বিবরণ আমি লিখবো।

লিখবো এক নতুন বর্ণমালায়।

মণিমালা, সেই বর্ণমালার প্রতিটি বর্ণ আমি নেবো

তোমার চোখ থেকে, তোমার ঠোঁট থেকে –

নেবো তোমার ভ্রুলতা থেকে,

তোমার গ্রীবাভঙ্গি থেকে, তোমার স্তনচূড়া ও নাভিমূল থেকে।

তোমার বাহুর বাঁধন, বুকের ভাঁজ, ঊরুসন্ধির বাঁক –

        তোমার দেহের প্রতিটি রেখা থেকে

                 নেবো আমি এক-একটি বর্ণ।

তারপর এই বৃষ্টির বিবরণ আমি লিখবো সেই বর্ণমালা দিয়ে।

মণিমালা, এই মেঘভারনত আকাশের নিচে

          এই শ্রাবণঘন সন্ধ্যায় –

আর কোনো যোগ্য বর্ণমালা নেই

          এই বৃষ্টিবিলীন তোমার

          বর্ণনা-বৃত্তান্ত লেখার।