দুটি সনেট

বায়তুল্লাহ্ কাদেরী

 

নাইয়র-সীমানা

(সদ্যপ্রয়াত জননীকে)

 

মুহম্মদ ইউনুস সাহেবের কনিষ্ঠ আত্মজ

বায়তুল্লাহ্ কাদেরীকে কেউ কি চেনেন ঠিক তার

দুঃখের মতন? মাতা রফিকুন্নেসা চৌধুরী আর

খবর রাখে না তার, মহীয়সী এখন সহজ

অমিত্মমের মুখোমুখি, ভুলে যান পুত্রের জলজ

বৈশিষ্ট্যাবলির কিছু অংশ; কবিতাপাগল বলে

নাড়িছেঁড়া দুঃখবতী প্রশ্রয় দিতেন, তলে-তলে

প্রজ্ঞাবতী বুঝতেন, এ-সন্তান বহু দুঃখপ্রজ।

 

সেই যে পরম মাতা যে-একদা অপেক্ষার কণ্ঠা

ছুঁয়ে হাঁটতেন বাড়িময়, তিনি আজ অন্যরূপা;

স্মৃতি-বৃষ্টিহীনা সময়ের জলে ভিজে-চোপচোপা,

বাড়ির চৌহদ্দি ঘিরে শুধু মাতার শাড়ির ঘণ্টা

অস্থির বাজতে থাকে, আমি তাকে বলতে পারি না –

আম্মা, এসেছি দেখুন : আপনার নাইয়র-সীমানা।

 

 

সুবোধ কি তবু পালাবে

 

সুবোধ পালিয়ে গেছে। বহুবার পথের ভিতরে

সুবোধ পালিয়ে গেছে পথ হয়ে। ব্যাকপ্যাক-পিঠে

পালিয়ে গেছে এ-সুবোধে। মেজাজ ভীষণ খিটখিটে

রক্তশূন্য মুখে সুবোধ পালিয়ে গেছে বহুস্বরে।

সুবোধকে ‘পালিয়ে যা, পালিয়ে যা’ বলে যারা ঝড়ে –

বৃষ্টিতে ভীষণভাবে হায়, তাকে বলিল পালাতে

তারা কি তাহলে সকলেই আজ সুবোধের সাথে

মশকরা করিল, নাকি ওরা সুবোধই প্রকারান্তরে?

 

কেনইবা পালানো এই? জীবনের দেয়ালে-দেয়ালে

চিকা মেরে এই পালানো কি ঠিক? এভাবে সুবোধ

কোনোকালে হয় কি সুবোধ? কিন্তু, কোথায় বা যাবে?

জনতার অনেক পেছনে আরো জনতা মেলালে

হয়তো সুবোধ হয়, হয়তো বা কিছু কিছু রোদ

সুবোধের জন্যই ওঠে : সুবোধ কি তবু পালাবে?