বাংলাদেশের যে-কোনো জায়গার নামকরণের একটা পটভূমি বা তাৎপর্য থাকে। তাই নীলফামারী নামটা শুনলেই মনের মাঝে উঁকিঝুঁঁকি দিত এ-জেলার নামকরণের সঙ্গে নীলচাষের হয়তো কোনো সম্পর্ক আছে। নীলফামারী গিয়ে সে-বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যা জানলাম এ-নামকরণের পেছনে দুই ধরনের ধারণা প্রচলিত আছে। প্রচলিত এক ধরনের ধারণায় নীলচাষ থেকেই নীলফামারী নামের উৎপত্তি। ব্রিটিশ আমলে নীলফামারী মৌজায় (নটখানা) নীলচাষের একটি বৃহৎ ফার্ম ছিল। নীল ফার্মিং বা নীল ফার্ম থেকে নীলফামারী নামের উৎপত্তি। নীলফামারী নাম নিয়ে আরেকটি ধারণা প্রচলিত আছে। কেউ কেউ মনে করেন, একসময় এ-অঞ্চলকে ন্যালপামারীন বলা হতো। ন্যালপান একটি আঞ্চলিক শব্দ যার অর্থ পিচ্ছিল। নীলফামারী অঞ্চলের জলাশয়গুলিতে প্রচুর পরিমাণে এক প্রকার পিচ্ছিল জলজ উদ্ভিদ জন্মাতে দেখা যায়, যেগুলো স্থানীয় লোকজনের কাছে ন্যালপা নামে পরিচিত। সেখান থেকে ন্যালপামারীন এবং পরবর্তী সময়ে নীলফামারী হয়েছে।
নামকরণ যেভাবেই হোক না কেন, নীলফামারীতে যে একসময় নীলচাষের আধিক্য ছিল তার সাক্ষ্য এখনো শহর ও শহরতলিতে রয়েছে।
অবিভক্ত বাংলায় নীলচাষের ইতিহাস অতি প্রাচীন। ভেষজ উপাদান হিসেবে নীলের ব্যবহার সম্পর্কে ভেষজ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। প্রাচীন আমলের পটচিত্রেও নীলের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, ১৭৭৭ সালে বাংলায় আধুনিক পদ্ধতিতে নীলচাষ শুরু করা হয়। বাংলায় লুইস বোনার্ড নামে এক ফরাসি ব্যবসায়ীকে নীলকর হিসেবে কাজ করতে দেখা গিয়েছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে সারা বঙ্গে শুধুমাত্র বিদেশি, যার মধ্যে অধিকাংশই ইংরেজ নীলকর ছিলেন, তাদের মোট নীলকুঠি ছিল ৭৪৫২টি। পূর্ববাংলার যশোহর, খুলনা, বগুড়া, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, নীলফামারী প্রভৃতি জেলায় নীলচাষ করা হতো। ওই সময় অবিভক্ত বাংলার নীলের খ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল।
কোম্পানি শাসনামলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এককভাবে নীলচাষ করলেও পরবর্তী সময়ে ১৮৩৩ সালে আইন পাশের মাধ্যমে তাদের একচেটিয়া অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়। তখন ইংল্যান্ড থেকে প্রচুর ইংরেজ নীলকর এসে বাংলায় নীলচাষ শুরু করেন। কারণ শিল্প বিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডে তখন বস্ত্রশিল্পের রমরমা ব্যবসা ছিল। নীলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ইংরেজ নীলকররা কৃষকদের উর্বর জমিতে নীলচাষে বাধ্য করতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, তারা রীতিমতো কৃষকদের ওপর জোর-জুলুম আর অত্যাচার শুরু করে দেয়। এভাবে ক্রমান্বয়ে যখন অত্যাচারের মাত্রা সীমাহীন পর্যায়ে যায়, তখন কৃষকরাও প্রতিবাদ আর বিদ্রোহ আরম্ভ করেন। প্রথমদিকে অহিংস আন্দোলন হলেও পরবর্তী সময়ে কৃষকদের বিদ্রোহ সশস্ত্র রূপ নেয়। নদীয়ার বিশ^নাথ সর্দারকে নীল বিদ্রোহের প্রথম শহীদ বলা হয়। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ফাঁসি দিয়ে তাঁর শবদেহ লোহার খাঁচায় পুরে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তারা চেয়েছিল বিদ্রোহীর এই বীভৎস পরিণতি দেখে কৃষকরা শঙ্কিত হোক। কিন্তু তা হয়নি। নীলচাষ করে কপর্দকহীন হয়ে পড়া কৃষকদের বিদ্রোহ আরো ছড়িয়ে পড়ে। এরকম পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বিদ্রোহ আর অসন্তোষের কারণ অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করে এবং কমিটির সুপারিশে নীলগাছের দাম বাড়িয়ে দিলে লাভের অঙ্ক কমতে থাকায় নীলকররা নীল উৎপাদন বন্ধ করে দিতে থাকে। এভাবেই এদেশে ক্রমান্বয়ে নীলচাষ বন্ধ হয়ে যায়।
১৮০১ সালে বর্তমান নীলফামারী জেলায় তৎকালীন কাজিরহাট পরগনা বা দারোয়ানী, বারোনী এবং ডিমলায় ব্রিটিশ বেনিয়ারা নীলচাষ শুরু করে। তারপর থেকেই সেখানকার কৃষকদের জীবনে ধীরে ধীরে অন্ধকার নেমে আসে। বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের মতো নীলফামারীতেও ব্রিটিশ নীলকরদের অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। অবিভক্ত বাংলায় যখন নীল বিদ্রোহ শুরু হয়, তখন নীলফামারীতেও এ-বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৫০ সাল থেকে নীলকরদের সঙ্গে
এ-অঞ্চলের কৃষকদের সংঘর্ষ শুরু হলেও বিদ্রোহ চূড়ান্ত রূপ নেয় ১৮৫৯ সালে এবং ১৮৬০ সালে এর পরিসমাপ্তি ঘটে।
নীলকরদের মোকাবিলা করার জন্য কাজিরহাট পরগনা বা দারোয়ানী, বারোনী এবং ডিমলায় কৃষকরা স্থানীয়ভাবে একটি বাহিনী গড়ে তোলে। সে-বাহিনীতে বল্লমধারী, লাঠিয়াল, সাধারণ কৃষক, জেলে এমনকি নারীরাও অংশগ্রহণ করেন প্রতিপক্ষ নীলকরদের সৈন্য, লাঠিয়াল বাহিনীকে মোকাবিলা করার জন্য। এভাবেই জীবন বাজি রেখে তারা নীলকরদের প্রতিহত করেন এবং অবশেষে নীলকররা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
নীলফামারীর বর্তমান জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের পাশে যে টিনশেড ভবনটি রয়েছে, যেটি একসময় মহকুমা অফিস ছিল সেটি আদিতে মূলত ইংরেজ সাহেবদের বসবাস এবং নীলচাষ ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হতো। নীলকরদের কথামতো উর্বর জমিতে নীলচাষ না করলে অনারারি ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা ছিল সে-সময়। নীলফামারীর অনারারি ম্যাজিস্ট্রেটরা তখন ওই ভবনে বসবাস করতেন। বর্তমানে ওই ভবনটি জেলার অফিসার্স ক্লাব হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে কিছু সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে ভবনটির ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে একটি ফলক লাগানো হয়েছে। ফলকটিতে ভবনের নির্মাণকাঠামো, ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে মন্তব্য করা হয়েছে – কালের সাক্ষী এ-ভবন নীলফামারীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহনকারী। এই পুরাকীর্তি ভবনের কোনোরকম পরিবর্তন ও পরিবর্ধন ছাড়া সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কি না সে সম্পর্কে যাঁরা ভবনটি প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। ফলকপ্রস্তরে উৎকীর্ণ আছে, এ-এলাকার উর্বরভূমি নীলচাষের অনুকূল হওয়ায় দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় নীলফামারীতেই বেশিসংখ্যক নীলকুঠি ও নীল খামার গড়ে ওঠে। এ-দাবির সত্যতা ইতিহাসবিদরা যাচাই করতে পারেন। তবে নীলফামারী শহরের একপ্রান্তে এখনো কালের সাক্ষী হয়ে নীলকুঠি, নীলকুঠির সম্মুখে বিস্তীর্ণ ভূমি (হয়তো নীলগাছ চাষ করা হতো), মাঠের একপ্রান্তে নীলগাছ থেকে নীল প্রস্তুতকরণের কাজে ব্যবহৃত একটি কূপের অংশবিশেষ রয়েছে।
পাঠকদের জানার জন্য সেই অফিসার্স ক্লাবে উৎকীর্ণ শিলালিপিতে বিধৃত বর্ণনা হুবহু তুলে ধরা হলো :
নীলফামারী নীলকুঠি তথা নীলফামারী অফিসার্স ক্লাবের ইতিহাস ইংরেজ নীলকরেরা দুই শতাধিক বছর পূর্বে নীলফামারীতে নীল চাষের খামার স্থাপন করেন। এ এলাকার উর্বর ভূমি নীল চাষের অনুকূল হওয়ায় দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় নীলফামারীতেই বেশি সংখ্যক নীলকুঠি ও নীল খামার গড়ে ওঠে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই নীলফামারীর নটখানা, দুরাকুটি, ডিমলা, কিশোরগঞ্জ, টেঙরামারী প্রভৃতি স্থানে নীলকুঠি স্থাপিত হয়। ইংরেজ সাহেবদের বসবাস ও নীলচাষ ব্যবসা পরিচালনার জন্য এই টিনশেড ভবনটি ব্যবহৃত হতো। এই ভবনের মধ্যে শীতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দুটি Fire place, দুটি বাথরুম, দুটি শয়নকক্ষ, একটি ড্রইং রুম ও একটি বারান্দা রয়েছে। তৎকালীন সময়ে এটি এলাকার সুরম্য অট্টালিকা ও দৃষ্টিনন্দন ভবন হিসেবে খ্যাত ছিল। মূল ভবনের দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট এবং প্রস্থ ৫১ ফুট। এতে ব্রিটিশ আমলের স্থাপত্যশৈলী পরিলক্ষিত হয়।
১৮৭৫ সালের ১৮ মে খ্রি. তারিখে রংপুর জেলা হতে বিভক্ত হয়ে ডোমার উপজেলার বাগডোগরা এলাকায় নীলফামারী মহকুমা কার্যালয় স্থাপিত হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতার জন্য ১৮৮২ সালের ১৯ মে বাগডোগরা থেকে বর্তমান নীলফামারী জেলা সদরে মহকুমা কার্যালয় স্থানান্তরিত হয়। তখন থেকে এটা মহকুমা প্রশাসকের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। গত ৩০. ০১. ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে নীলফামারী মহকুমা জেলায় উন্নীত হলে ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এটি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বাংলো হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গত ১২. ১০. ১৯৯৯ খ্রি. থেকে এটা নীলফামারী অফিসার্স ক্লাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালের সাক্ষী এ-ভবন নীলফামারীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষর বহনকারী এ পুরাকীর্তি ভবনের কোনোরকম পরিবর্তন ও পরিবর্ধন ছাড়া সংরক্ষণ করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম গোড়গ্রাম। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে এ-ইউনিয়নে ধোবাডাংগা নামে একটি গ্রাম আছে। সেখানে নীলসাগর নামে একটি দিঘি আছে।
জনশ্রুতি আছে, মহাভারতীয় যুগে রাজা বিরাট তাঁর রাজ্যের উত্তরদিকের চারণভূমি সীমানার মধ্যে গো-পালের পানি পানের জন্য একটা বিশাল দিঘি খনন করেছিলেন। তখন এটি বিরাট দিঘি নামেই পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ আমলে ডিমলার জমিদার যামিনী বল্লাল সেনের মা বৃন্দারানীর নামে এ-দিঘির নামকরণ হয় বৃন্দারানীর দিঘির। তবে স্থানীয় জনসাধারণের নিজস্ব উচ্চারণে এটি পরিচিতি পায় বিন্নার দিঘি হিসেবে। বাংলাদেশ আমলে এর একটি পোশাকি সুন্দর নামকরণ করা হয় – নীলসাগর। তবে স্থানীয়রা এখনো এটিকে বিন্নার দিঘি বলে। আর পর্যটকসহ বাইরের লোকজনের কাছে এটি নীলসাগর নামে পরিচিত।
দিঘিটির খননকাল মহাভারতীয় যুগে – এরকম যে জনশ্রুতি রয়েছে তার সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
পুরাণে মহাভারতীয় যুগের দেব-দেবীর যেরকম বর্ণনা রয়েছে তার সঙ্গে অনেকেই গ্রিক সভ্যতার সময়কালের একটা সাযুজ্য খুঁজে পান। তাই মহাভারতীয় যুগকে গ্রিক সভ্যতার সমসাময়িক বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু দিঘিটা অত প্রাচীন বলে পুরাকীর্তিবিদরা মনে করেন না। কারণ প্রত্নতাত্ত্বিক খননে এ পর্যন্ত দিঘির ঘাটের যে অংশটুকু উন্মোচিত হয়েছে সে-অংশের স্থাপত্যরীতি, নির্মাণশৈলী, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইট ইত্যাদি দেখে ধারণা করা হয় যে, এটি দশম বা একাদশ শতকে খননকৃত। সমস্ত ভারতবর্ষে ওই সময়ের নির্মাণশৈলী এবং ব্যবহৃত উপকরণের অনেক প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। সময়ের বিচারে যদি দশম বা একাদশ শতকের কোনো এক সময়ে দিঘিটি খনন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয় তাহলেও এর পুরাকীর্তি মূল্য অনেক।
গোটা বরেন্দ্র অঞ্চলসহ উত্তরাঞ্চলে প্রাকৃতিক পানির আধার যেমন নদী-নালা, হাওর-বাঁওড় কম থাকায় শাসকশ্রেণি একসময় জনকল্যাণে বিভিন্ন এলাকায় দিঘি, পুষ্করিণী খনন করেছিলেন। সেগুলোর অনেকগুলোই হারিয়ে গেছে। কালের সাক্ষী হয়ে এখনো কিছু কিছু রয়ে গেছে। এর মধ্যে নীলফামারীর নীলসাগর আর দিনাজপুরের রামসাগর উল্লেখযোগ্য।
নীলসাগর দিঘিটির জলভাগের আকার ৩২.৭০ একর। আর এর চারিদিকের পাড়ের অংশসহ পরিমাপ করলে এর আয়তন প্রায় ৫৪ একর। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ২০১৭ সালে দিঘিটিসহ এর পাড় সংরক্ষণের কাজ শুরু করে। দিঘিটির পূর্ব, পশ্চিম আর দক্ষিণ দিকের পাড় তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে উৎখনন করে প্রাচীন তিনটি ঘাটের সন্ধান পেয়েছে। তাদের ধারণা, উত্তর প্রান্তেও অনুরূপ একটি ঘাট রয়েছে। উন্মোচিত ঘাটগুলো মাটির নিচে শতকের পর শতক চাপা পড়ে ছিল। তবে উৎখননের পর অনেক অংশ আদিরূপে পাওয়া গেছে। যদিও কিছু কিছু অংশ অবিকৃত পাওয়া যায়নি। প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন কাজ শেষ হলে পুরো এলাকার স্থাপনা-কাঠামো উন্মোচিত হবে।
ঘাটগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো, দিঘিতে নামার জন্য সিঁড়ি নয়, বরং র্যাম্পের মতো ঢালু করে দিঘিতে নামার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলো বেশ প্রশস্ত এবং পার্শ্বরেলিং অনেকটা দেয়ালের মতো কিছুটা উঁচু করা। নির্মাণশৈলী অত্যন্ত সুন্দর। র্যাম্পের মতো অংশটি দিঘির ভেতরে অনেকাংশে নেমে গেছে।
দিঘির পাড় বেশ উঁচু করে মাটি দিয়ে বাঁধা ছিল। এর কিছু অংশ এখনো অক্ষত রয়েছে। একপার্শ্ব খনন করা পানি নিষ্কাশনের সুন্দর ড্রেনেরও নিদর্শন পাওয়া গেছে।
শীতকালে দিঘিতে প্রচুর পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই দিঘির কাছাকাছি একটি প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর নির্মাণ করেছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, জেলা প্রশাসন এর একদিকে একটি শিশু পার্ক নির্মাণ করেছে। শীতকালে এখানে পিকনিক করা হয়। মাইকের শব্দ, প্যাকেটজাত নানারকম খাদ্যদ্রব্যের মোড়ক, কাগজ, পলিথিন ইত্যাদির কারণে দিঘি এবং দিঘিপাড়ের নৈসর্গিক পরিবেশ অনেকটাই বিঘ্নিত হচ্ছে। পাশাপাশি শব্দদূষণ এবং পিকনিকে আসা নানাধরনের অংশগ্রহণকারীর কারণে পরিযায়ী পাখির সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.