সাবেরা তাবাসসুম
কী করলে এ-জীবন নিয়ে?
লিখলাম ‘একটা চুমু দাও তো, খাই’ আর বৃষ্টি এল
বৃষ্টিগুলো নারকেল পাতা বেয়ে সুড়সুড়িয়ে নেমে এল
নেমে আসা পানিগুলো ফোঁটা-ফোঁটা পিঁপড়ে হয়ে মাটি
ছুঁল –
এই দেখে-দেখে কেটে গেল একটা জীবন!
কী করলে এ-জীবন নিয়ে?
হিন্দি ছবির কোমর-বাঁকানো সুখ আর
বুক-ঝাঁকানো দুঃখ দেখে-দেখে –
শাম্মী কাপুরের নাচে খালামণিরা আশা পারেখ হলো –
ডানাকাটা বস্নাউজ, খাটো আঁচল, চুড়ো খোঁপায়
গিন্নিরা বিকেলের চায়ে জিনাত আমান হয়ে নিজেকে
ঢালল,
এই দেখে-দেখে আর পরম্পরায় সিনেমার খুনসুটি প্রেম
শিখে-শিখে কেটে গেল একটা জীবন!
কী করলে এ-জীবন নিয়ে?
বিমূর্ত চিত্রকলা না বুঝে, গালে সুপারি গুঁজে
ঠাকুরের গান গাইতে না পেরে – কার সঙ্গে মাধুর্য
হবে কার সঙ্গে হবে না এই ভেবে-ভেবে – হাওয়াই
মিঠাই থেকে
বাসমত্মী থেকে দূরে যেতে-যেতে – ঘন নীলের ভেতর
একনিষ্ঠ
খাবি খেতে-খেতে কেটে গেল একটা জীবন!
কী করলে এ-জীবন নিয়ে?
তুমি দিলে বিধান – তার আগে আল মাহমুদ – তার
পরে জয় –
তারপর আর কারো ভালো লাগা না-লাগা কবিতাকে
মাথায় তুলে ধেই-ধেই নেচে, নেচে নিচের তলার লোকের
নালিশ খেয়ে-খেয়ে আর তোমার কালাম তাবিজ করে
গলায় না পরে গয়নার পুঁটুলিতে বেঁধে, বেঁধে রেখে
ফের খুলে মুছে-চেঁছে নতুন মোম পুরে তুলে
রেখে রেখে কেটে গেল একটা জীবন!
কী করলে এ-জীবন নিয়ে?
আগের পাতায় আগের রাতে যা-সব লিখেছি
আজ ফের ওইসব ঘেয়োকথা টুকে-টুকে –
‘ভাগ্য, সবই ভাগ্য’ বলে-বলে –
চিবিয়ে-গিলে হেগে-মুতে শীৎকারে-ব্যর্থতায় আর
মাঝে-মাঝে পোতানো গলায় ‘আমি কোথায়, আমি
কোথায়’ বলে
খই ফোটাতে-ফোটাতে খেই হারাতে-হারাতে
কত কী করে কেটে গেল গোটা একটা জীবন!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.