মারাদোনা

রাজবিরোধী আমরা কজন তোমাকে রাজপুত্র ভাবে

পক্ষীরাজ বা রথ না থাকুক, পদাতিকের পায়ের দাপে

সবুজ ঘাসে ছন্দ জাগে, সে ছন্দে তো ছন্দ ভাঙা

তোমার পায়ে বিদ্রোহ তার খুঁজল ভাষা আগুন-রাঙা

রাজপুত্তুর স্বপ্নে থাকে, তাকে যখন ডেকেছে মাঠ

স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে এসে পেরিয়ে এসে ঘাট-বেঘাট

জিয়নকাঠি ছুঁইয়ে দিয়ে প্রাণ জাগাল কী স্পর্ধায়

একটা গোলক বর্শা হয়ে জালগুলোকে ছিঁড়তে চায়

ও রাজকুমার, তোমায় নিয়ে রূপকথা কে লিখবে আর

তোমার হাতে উল্কি আঁকা ওই যে ছবি চে গুয়েভারার

সেও তো ছিল স্বপ্ন, তাঁকে যখন তুমি ছুঁয়েছিলে

আকাশ বুঝি সত্যি তোমার হাতের মধ্যে ধরতে পেলে

আজ তবে থাক সেই আকাশে মাঠ-ভরানো নিমন্ত্রণ

রূপকথা হও তারার দেশের, জাল ছেঁড়ে বল সারাক্ষণ

সাদা মেঘজুড়ে সাদা সাদা হাঁসের পালক

ওবায়েদ আকাশ

আজকাল প্রায়ই দুপুরের ভাত বিকেল গড়িয়ে খাই আর

সকালের নাশতা একপ্রকার না খেয়েই সময় গড়িয়ে যায়

অথচ প্রতিদিন নিয়ম করে স্বাস্থ্য-আপারা আসেন

আর আমার তুমুল নিঃসঙ্গতা থেকে কলহপ্রিয়তা

যৌনতা থেকে স্মৃতিকাতরতা – একে একে টেনে 

শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে আবার শরীরে জোড়া দিয়ে যান

দেখি, তারাও এতোটা নির্জনতাপ্রিয় যে

আমার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত একটি বাক্যও কেউ মুখে তুলছে না!     

এই দেহের ভালো-মন্দ ঘিরে যাবতীয় অসামঞ্জস্য 

                              শুধু তাদের চোখেমুখেই  

ভেসে উঠতে থাকে – দৃশ্যত, তারা কখনো হাসছে

কখনো কাঁদছে আবার কখনো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে 

হয়ে উঠছে আমূল সাংসারিক!

আবার যখন রাত্রি গড়িয়ে দুপুরের খাবারের প্রসঙ্গ আসে

ওইসব স্বাস্থ্য-সেবিকা আমার অস্তিত্ব আছে কি নাই, এ-জাতীয় 

সন্দেহ ধরে হ্যাঁচকা টান মেরে দেখে – আসলে আমি

অনস্তিত্বময় এক বিপুল দোদুল্যমানতা, গৃহমাত্র বসবাস করি

আর নিঃসঙ্গতা – আমার প্রত্যন্ত অলঙ্কার

পরিবার থেকে পরিবারতন্ত্রে আমার অভ্রান্ত প্রতাপ

ঘর থেকে ঘরে আমি অভিন্ন বিচরণকারী

আর এই স্বাস্থ্যসেবিকাগণ

তারা প্রত্যেকে জ্ঞানত গৃহবহির্ভূতা, সম্ভ্রান্ত অনুপ্রবেশকারী

নিঃসঙ্গ থেকে নিঃসঙ্গতায় 

অবাধ

অগণন