যাত্রা

সাজেদুল আউয়াল

 

আর কিছুই চাই না –

ওই সড়কটি ধরে হেঁটে যেতে চাই কেবল।

পাশে থাকুক শাপলা-ফোটা জলাশয়, দুধকলমির ধাম,

কুঞ্জলতার বন; দূরে থাক গৃহস্থের ঘর-গেরস্থালি,

পাথরকুচির ফুল, আকাশে ভাসুক বৃষ্টিবতী মেঘ।

কলাগাছের পাতা নড়ুক বাতাসে।

আরো দূরে ধানক্ষেতে

নতমুখের কৃষক থাকুক নিড়ানি হাতে।

 

গোয়ালঘরে যেতে-যেতে কোনো এক রমণী

ঘোমটা সরিয়ে কিছুটা দেখে নিক আমাকে;

একটি ঘুঘু ডেকে যাক দূরে কোথাও বিষণ্ণতা ছড়িয়ে বাতাসে –

এসবের ভিতর দিয়ে হেঁটে যেতে চাই কেবল।

 

ডাকবে না কেউ নাম ধরে পিছু থেকে।

কারো সঙ্গে করতে হবে না কুশলবিনিময়,

থাকবে না তাড়া ঘরে ফেরার;

এরকম একটি যাত্রা হোক আমার।

গৈ-গেরামের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া সড়ক হোক

শুধু সঙ্গী – আর কেউ নয়।

 

পিছনে পড়ে থাক বাড়িভাড়ার রসিদ, টেলিফোনের বিল,

মিটিংয়ের চিঠি, জমির দলিল, পড়ে থাক মামলার নোটিশ,

দুয়ারে দাঁড়ানো কারো চাহনি।

পড়ে থাক লেখার টেবিল, তোমার অবহেলা, মৃত বন্ধুর মুখ,

বাজারের থলে, লালচে হয়ে যাওয়া অ্যালবামের ছবি।

 

আমি আজ হেঁটে যেতে চাই ওই সড়কটি ধরে শুধু।

সামনে থাকুক শিশুর গালের মতো লালচে আকাশ;

আকাশে উড়ুক ঘরে ফেরা বকের সারি।

যাত্রা হোক শেষ কোনো এক নদীর ধারে –

খেয়ার অপেক্ষায় যেন থাকি, একা।

আর কিছু নয়।