শহীদ কাদরী ‘ব্যক্তিগত, ব্যথিত শহরে’

তমিজ উদ্দীন লোদী

 

তোমার চুম্বনগুলো পৌঁছাবার সাথে সাথে তুমিও পৌঁছে গেলে তোমার স্বদেশে

তোমার অস্থি, মাংস, মাংসের খাঁচা মিশে থাকল স্বদেশের সোঁদা সুন্দর মাটিতে।

 

তুমি বলতে ‘দেশ’। দেশ মানে ত্রিশ লাখ মানুষের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি বদ্বীপ। তার মাটি, তার জল, তার বৃষ্টি, টিকে থাকার সংগ্রামে যুযুধান মানুষের মুখ। দেশ মানে অজস্র কবিতার চাদরে ঢাকা প্রাণবন্ত এক মানচিত্র।

 

তোমার উচ্ছল হাসির ঢেউ, পরিমিতিহীন আড্ডার চিহ্ন এখনো লেগে আছে পারসন্স

বুলেভার্ডের ঘরের দেয়ালে। তোমার পোর্ট্রেটে এখনো জমে যায়নি ধুলো। তাকে তাকে তোমার স্পর্শলাগা বইয়ের স্তূপ। প্রায়শই উচ্চারিত ‘কোনো নির্বাসনই কাম্য নয় আর’ কিংবা ‘উন্মূল মানুষের কোনো দেশ হয় না’ – ঘুরছে বাতাসে।

 

‘রয়ে যাই ওই গুল্মলতায়’ কিংবা ‘আমার টাটকা শব ফেরে যেন আমারই দখলে’ তোমার পঙ্ক্তির মতো তুমি ফিরে গেলে পরিত্যক্ত হাওয়ায়-ওড়ানো কোন হলুদ পাতায়।

 

‘শহীদ কাদরী বাড়ি নেই’ এই বাক্য মিথ্যে প্রমাণ করে তুমি বাড়ি ফিরে গেলে ‘হিরণ¥য় রৌদ্রে’ কিংবা ‘ব্যক্তিগত, ব্যথিত শহরে’।