সম্পাদকীয়

উদ্ভিদবিজ্ঞানী দ্বিজেন শর্মা (১৯২৯-২০১৭) সম্প্রতি পরলোকগমন করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। উদ্ভিদবিজ্ঞানে তিনি বিশেষজ্ঞ হলেও সমাজ, সাহিত্য, শিল্প ও স্থাপত্য বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ও লেখালেখি আমাদের অভিজ্ঞতার দিগমত্মকে বিসত্মৃত করেছে। তিনি বহু গ্রন্থের অনুবাদকও ছিলেন। এছাড়া সমাজে বিজ্ঞানচেতনা সম্প্রসারণের প্রয়াসের মধ্য দিয়ে তিনি যুক্তিবাদিতা সঞ্চার করতে নিরলস সাধনা করে গেছেন ।

প্রকৃতি মানব জীবনের কত প্রাণদায়ী ও সঞ্জীবনী শক্তি নিয়ে জীবনকে সমৃদ্ধ করে এ বোধ সঞ্চারিত করেছেন সমাজে।

দ্বিজেন শর্মা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে মৃত্যুকাল অবধি বাঙালির সমাজ জীবনের অসংগতি ও সংকট মোচনের জন্য যে চিমত্মা করেছেন এবং সে চিমত্মার বীজ সমাজের অন্য মানুষদের মনেও সঞ্চারিত করার মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দেশের বিবেকবান এক অগ্রণী ব্যক্তিত্ব।

দেশের শীর্ষ এই বিজ্ঞানী দেশীয় উদ্ভিদ সংরক্ষণ এবং বিশেষত ভবনে, লোকালয়ে ও বাগানে বৃক্ষের বিন্যাস নিয়ে চিমত্মাপ্রসূত ভাবনা দ্বারা সমাজকে আলোকিত করেছেন। তাঁরই প্রযত্ন ও প্রণোদনায় উদ্ভিদে আগ্রহী নবীন প্রজন্মের একটি বৃত্ত গড়ে উঠেছে। আশা করা যায়, এই প্রজন্মের আগ্রহীরা দেশের বৃক্ষবিন্যাসে নবমাত্রা যোগ করতে পারবেন। দ্বিজেন শর্মার এও এক বৃহৎ কীর্তি। বৃক্ষের বিন্যাসও যে নান্দনিক বোধ-বুদ্ধি ও মননধর্মিতার সঙ্গে সংশিস্নষ্ট এ-কথা তিনি বারবার উচ্চারণ করেছেন। সে উচ্চারণে অন্যদেরও সঙ্গী করেছেন।

তাঁর মৃত্যুতে শুধু উদ্ভিদবিজ্ঞানের পরিমল নয়, এদেশের সাহিত্য ও শিল্পের ভুবনেও এক ক্ষতি হলো। এ ক্ষতি সহজে পূরণ হবে না।

আমরা তাঁর সম্মানে এ-সংখ্যায় কয়েকটি রচনা দিয়ে একটি ক্রোড়পত্র প্রকাশ করলাম।