সিটি ব্যাংক-নিবেদিত কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২৪ : পাঁচ তরুণ পেলেন সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি

স্বীকৃতি সব সময়ই যে-কোনো কার্যক্রম ও চর্চাকে গতিশীল করে, প্রাণিত করে। বাংলাদেশে যাঁরা সাহিত্যচর্চা ও গবেষণায় রত তাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশ তরুণ। তাঁরা প্রতিনিয়ত নতুন-নতুন ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-ভাবনার সন্নিবেশ ঘটাচ্ছেন আমাদের সাহিত্য ও গবেষণায়। এই প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিভাবান তরুণদের সম্মানিত ও উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কালি ও কলম প্রবর্তন করেছে ‘তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার’। ২০০৮ সাল থেকে প্রবর্তিত এ-পুরস্কার প্রতিবছরই প্রদান করা হয়ে থাকে কোনো রকম নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটিয়ে।

সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জন্যও প্রদান করা হয়েছে ‘সিটি ব্যাংক-নিবেদিত কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২৪’। এবার এ-পুরস্কার অর্জন করেছেন পাঁচজন তরুণ। পুরস্কারের পাঁচটি বিভাগে – কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব এবং শিশু-কিশোর সাহিত্য – এই পুরস্কার অর্জন করেছেন তাঁরা। বাংলাদেশে তরুণদের জন্য প্রবর্তিত যত পুরস্কার রয়েছে তার মধ্যে কালি ও কলম পুরস্কারের অর্থমূল্য সর্বোচ্চ, দুই লাখ টাকা। এছাড়া দীর্ঘ পথচলায় এই সম্মাননা সবার কাছে বিশেষ সম্মান ও গুরুত্ব অর্জনে সমর্থ হয়েছে।

এবার যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন তাঁরা হলেন – কবিতায় সতীতালয় গ্রন্থের জন্য অস্ট্রিক ঋষি, কথাসাহিত্যে নির্বাচিত দেবদূত গ্রন্থের জন্য সাজিদ উল হক আবির, প্রবন্ধ-গবেষণায় শতবর্ষে চা-শ্রমিক আন্দোলন : ডেডলাইন ২০ মে ১৯২১ গ্রন্থের জন্য মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব বিভাগে একাত্তরে অবরুদ্ধ দিনের দুঃসাহস : সাগাই ফোর্ট এস্কেপ গ্রন্থের জন্য স্বরলিপি এবং শিশু-কিশোর সাহিত্যে তিলকুমারের যাত্রা গ্রন্থের জন্য নিয়াজ মাহমুদ।

গত ২৬শে জুলাই ২০২৫-এ এক অনাড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে পাঁচ বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া এই পুরস্কার আয়োজন ঘিরে দুদিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে কালি ও কলম কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে পুরস্কার প্রদানের আগের দিন, ২৫শে জুলাই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় কবিতাবিষয়ক কর্মশালা ‘কবিতার কলাকৌশল’।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং সিটি ব্যাংক লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন, কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য লুভা নাহিদ চৌধুরী। দুই পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে ছিল গানের দল ও কৃষ্ণকলির সংগীত পরিবেশনা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে স্বাগত বক্তব্যে লুভা নাহিদ চৌধুরী জানান, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে প্রকাশিত তরুণ কবিদের বই আহ্বান করা হয় কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার প্রদানের জন্য। এ-আহ্বানে সাড়া দিয়ে অসংখ্য বই জমা পড়ে কালি ও কলম দফতরে। সেসব বই থেকে তিন সদস্যের বিচারকমণ্ডলী নানা দিক বিচার-বিশ্লেষণ শেষে পাঁচ বিভাগে পাঁচটি বই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন। এবার বিচারকমণ্ডলীতে ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক মাহবুব সাদিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী এবং কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আহমাদ মোস্তফা কামাল।

সূচনা বক্তব্যের পর ঘোষণা করা হয় ২০২৪ সালে সিটি ব্যাংক-নিবেদিত কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। বিজয়ীদের নাম ঘোষিত হওয়ার তাঁদের মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয় এবং অনুরোধ করা হয় সংক্ষেপে তাঁদের অনুভূতি প্রকাশের।

অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সাজিদ উল হক আবির বলেন, যতদিন আমরা স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি ততদিন আমাদের মূল্যায়ন করার একটি পদ্ধতি থাকে। কিন্তু যখন আমরা সাহিত্য-শিল্প চর্চা করি, তখন আমাদের মূল্যায়ন করার মানদণ্ড হয়ে দাঁড়ায় পুরস্কার ও সম্মাননা। এ সময় তিনি কালি ও কলম, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এবং সিটি ব্যাংকের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এরপর তিনি স্রষ্টাকে ধন্যবাদ জানান সংবেদনশীল অন্তর দেওয়ার জন্য। সাজিদ বলেন, প্রতিদিন আমরা যেসব গল্প লিখি তা আমাদের আশপাশেরই ঘটনা। গল্পকারের সংবেদনশীল মনের কারণে এসব ঘটনা একসময় গল্প হয়ে ওঠে। এরপর তিনি তাঁর বাবা-মা, বোনসহ সকল শুভানুধ্যায়ীকে ধন্যবাদ জানান।

মুহাম্মদ ফরিদ হাসান বলেন, সাহিত্য আমার জীবনের অংশ, যাপনের অংশ। তিনি তাঁর সাহিত্যপথের সহযাত্রীদের এবং কালি ও কলমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আগামী দিনে এই পুরস্কার আমার সাহিত্যকে এবং সাহিত্যচর্চা যেন অব্যাহত থাকে, সেই প্রেরণা জোগাবে।

মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব বিভাগে পুরস্কৃত স্বরলিপি বলেন, আমি মূলত গল্প ও কবিতা লিখে থাকি। সাগাই ফোর্ট এস্কেপ আমার প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা। এ রচনায় আমাকে যাঁরা সাহায্য করেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোলাইমান ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন রফিক – তাঁদের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করছি। এই সাগাই ফোর্ট এস্কেপে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সান্নিধ্য না পেলে এই বই লেখা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না।

নিয়াজ মাহমুদ বলেন, আমার লেখা প্রথম বইটিই কালি ও কলম পুরস্কার লাভ করেছে। তিনি জানান, বইটিতে চড়ুই পাখির জীবন ও ঘটনাক্রম বর্ণনার মধ্য দিয়ে এই শহর, দেশ তথা সমগ্র বিশে^র দিকে দৃষ্টিপাত করতে প্রয়াসী হয়েছেন। নিয়াজ দেখাতে চেয়েছেন, পুরো পৃথিবীতেই মানব সম্প্রদায়ের বেড়ে ওঠা, এগিয়ে চলাকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে এবং হচ্ছে। তিলকুমারের যাত্রা গ্রন্থটির মধ্য দিয়ে তিনি সেই বাস্তবতাকেই তুলে আনার চেষ্টা করেছেন।

অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকা কবিতা বিভাগে পুরস্কারজয়ী অস্ট্রিক ঋষির পাঠানো অনুভূতি সংক্ষিপ্তাকারে পড়ে শোনান লুভা নাহিদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রিক ঋষি হিসেবে আমি সবসময় চেয়েছি পাঠক আমার লেখার মূল্যায়ন করুক। আমাকে পড়ে ভালো বা মন্দ যেকোনো অনুভূতি যেন সে দ্বিধাহীনভাবে জানাতে পারে। আমার মুখ, আমার পরিচিতি, আমার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক – এসব কিছুই যেন প্রভাবক হিসেবে কাজ না করে। এই পুরস্কার পাওয়ার চেয়ে তাই আমার কাছে বড় হয়ে উঠেছে কালি ও কলম কর্তৃপক্ষের সহযোগিতাপূর্ণ মানসিকতা।’

পুরস্কারপ্রাপ্তদের অনুভূতি প্রকাশের পর বক্তব্য রাখেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কথাসাহিত্যিক মাসরুর আরেফিন। তিনি বলেন, অন্য যে-কোনো সময়ের চেয়ে এখন লেখকদের জন্য বিপজ্জনক সময়। তাঁদের নানা রকমের ভীতি ও চাপের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে। যাঁরা লেখক হতে চান, তাঁদের এই বিপদ, ভয়ভীতির ভেতর দিয়েই নিজেদের সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। কালি ও কলমের এই পুরস্কারের সঙ্গে সিটি ব্যাংক যুক্ত থাকবে। তিনি আরো জানান, এখন অর্থমূল্য দুই লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে, যদি কালি ও কলম কর্তৃপক্ষ রাজি থাকেন তবে আগামীতে এর পরিমাণ দ্বিগুণ করা হবে।

মাসরুর আরেফিনের বক্তব্যের পর সিটি ব্যাংক-নিবেদিত কালি ও কলম পুরস্কার ২০২৪ তুলে দেওয়া হয় বিজয়ীদের হাতে। এরপর বিজয়ীদের সঙ্গে বিশিষ্টজনের ফটোসেশন শেষে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। পুরস্কারপ্রাপ্ত পাঁচ তরুণকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, একদিকে পুঁজিবাদের শোষণ ও অন্যদিকে প্রযুক্তির উৎকর্ষের ধারাবাহিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে মানবতা ও সৃজনশীলতা আজ বিপন্ন। সাহিত্য হলো সামাজিক সম্পদ। এই পরিস্থিতি থেকে সাহিত্যই মানবিকতা ও সৃজনশীলতাকে রক্ষা করতে পারে। তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন কালি ও কলমের প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং পত্রিকাটির সম্পাদক আবুল হাসনাতকে। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আগামী দিনে পৃথিবী মনুষ্য বসতির জন্য নিরাপদ থাকবে কি না সেটা নির্ভয় করছে পুঁজিবাদকে বিদায় করা যায় কি না, তার ওপর। পুঁজিবাদ সম্পর্কে পুঁজিবাদী দেশেই অনেক সমালোচনা হয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন কারণে বর্তমান সময়ে বাংলা ভাষার মান কমে যাচ্ছে। ফলে এ-ভাষায় সাহিত্যচর্চাও কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে সবার সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। সবশেষে তিনি বলেন, যখন আমরা তরুণ কবি ও লেখকদের পুরস্কৃত করছি, তখন মূলত আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকে সমৃদ্ধ করার কাজে এগিয়ে যাচ্ছি।

এরপর বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২২ বছর ধরে কালি ও কলম নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল হাসনাত ও সভাপতিমণ্ডলীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান পত্রিকাটিকে একটি উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের প্রয়াণের পরে সেই মান বজায় রাখা খুব কঠিন। তবে সে-চেষ্টা করা হচ্ছে। তরুণ লেখকদের উৎসাহিত করার জন্য ২০০৮ সাল থেকে এই পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। ১৭ বছর ধরে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত তরুণ লেখকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, লিখতে গেলে পড়তে হবে। এখন পর্যন্ত পড়ার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বিপদের সময় সাহিত্যিকেরাই প্রজ্বলিত হন। সাহিত্যের শক্তিই বিপদকে অতিক্রম করতে সমাজে অনুপ্রেরণা জাগায়।

সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। একই সঙ্গে তিনি তরুণ লেখকদের অভিনন্দন জানান।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শেষে মঞ্চে আসে গানের দল ও কৃষ্ণকলি। শিল্পী তাঁর পরিবেশনা শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা বিশ্ব ভরা প্রাণ’ গানের মধ্য দিয়ে। এরপর একে একে বিভিন্ন স্বাদের গান দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের বিমোহিত করেন তাঁরা। প্রাণবন্ত এই পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় কালি ও কলমের ২০২৪ সালের তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান।

কবিতার কলাকৌশল

সাহিত্যের অন্যতম ধারা কবিতা। এ বিষয়ের করণকৌশল নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল ‘কবিতার কলাকৌশল’ শীর্ষক কর্মশালা। ২৫শে জুলাই ২০২৫-এ কালি ও কলম-আয়োজিত এ-কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরিফ, কবি ও অধ্যাপক তুষার দাশ, কবি ও শিক্ষক সাকিরা পারভীন এবং কবি পিয়াস মজিদ।

নির্ধারিত দিন সকাল ১১টায় শুরু হয় কর্মশালাটি। এতে অংশগ্রহণ করেন অর্ধশতাধিক প্রশিক্ষণার্থী। প্রশিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্য,

আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে আয়োজনটি। এতে আলোচ্য হিসেবে উঠে আসে কবিতার ভূমিকা, গঠনশৈলী, উপমা ও রূপকের ব্যবহার, ধারাবাহিকতা এবং নন্দনতত্ত্বসহ বিভিন্ন বিষয়।

কর্মশালায় যোগ দেওয়া এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, তাঁর এ কর্মশালায় আসার কারণ, কবিতা কিভাবে তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ করা যায় ও লেখা যায় তা শিখতে পারা। আরেকজন জানান, কীভাবে কবিতার ভাব নিজের মধ্যে ধারণ করা যায় তা জানতেই তাঁর এই কর্মশালায় যোগদান। এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, কবিতার মূল বিষয়গুলো জানার জন্যই তাঁর এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ। অন্য আরেক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, আয়োজনটি একদিনের না হয়ে কয়েকদিনের হলে ভালো হতো। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এমনটা হলে আমরা যাঁরা নিজের জন্য শিখতে চাইছি, তাঁদের উপকার হতো।

আয়োজনের একেবারে শেষে কথা বলেন কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, যে কোনো সাহিত্যে ভূমি তৈরি করে সামাজিক শক্তি, কোনো রাজনৈতিক শক্তি নয়। একটা সমাজে যা কিছু ঘটে, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি, সেগুলো থেকেই কবিতা তথা সাহিত্যের উপাদান উৎপাদন হয়।

মনোজ্ঞ আয়োজনের শেষাংশে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সবাইকে সনদপত্র প্রদান করা হয়।