হেমন্তের বিষাদ পদ্য : ভূজপুর

ফারুক আলমগীর

কার্তিকের অবশেষ, যদি বলো
হেমন্তকে খুউব চিনেছি
নিজের মতোন করে
তবে ভুল বলা হবে,
যদিচ জেনেছি সায়াহ্নেই
তার রূপ ধরা দেয়
কুয়াশার আস্তরণে এখন যেমন
ভূজপুরের পাহাড় বনানীর কান্তি
নিমজ্জিত ঘোর-অন্ধকারে
নিশ্চিত-সবুজ কোনোভাবেই এখন
আর সবুজ থাকতে পারবে না
নীলিমা এখন আর দূরের আকাশ নয়!

কেননা অন্ধকার নেমেছে অনেক আগেই
এই ভূজপুরে
সেই মধ্য এপ্রিলের নিদাঘ দুপুরে
রক্তাক্ত শরীর নিয়ে অনুজ আমার
জয়বাংলা বলে
যখন নিষ্ঠুর এই গিরিপথে ফিরেছিল
চট্টগ্রাম মেডিক্যালে লাশকাটা ঘরে।

এই হেমন্তের দিনেও পুড়ছে
আমার শরীর দাউ দাউ, গনগনে আগুনের
চিতায় উঠুক ভূজপুর, ভস্মের কবরে
চাপা পড়–ক অনন্তকাল এই সর্পপুরী।

নৃশংস ভূজপুর, কোথাও বটের ছায়া নেই
বৃক্ষদের উদারতা উধাও, সেখানে
দগ্ধ মন রাখি এমন জায়গা নেই!

বিপুল নামের অনুজ আমার পড়ে আছে
সেই কখন থেকেই লাশকাটা ঘরে
একাকী নির্জীব, এখন হেমন্তে
অঘ্রানের সোনালি ধানের গন্ধ শুঁকে শুঁকে
কোনোদিন ফিরবে কী সে প্রাণের ফটিকছড়ি
Ñ দূর বক্তপুর!