অনন্ত আগুন

রেজাউদ্দিন স্টালিন

 

এ শহরে সন্ধ্যার আগেই বৃক্ষরা বিষণ্ণ হয়

বৃক্ষরা কবি বলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বোঝে

নগর নিহত হলে বৃক্ষরাও কাঁদে

তাদের কান্না হলো পাতা ঝরে যাওয়া

 

যখন নগর জুড়ে নিষেধের গুপ্ত আনাগোনা

প্রতিটি পদক্ষেপে লেপ্টে থাকে সন্ত্রাসের ছায়া

সম্রাটের ছদ্মবেশে ঘোরে-ফেরে ছুরির সম্ভ্রম

দস্যুদের প্রকৃত দোসর হয় নগরবাসীরা

তখন বৃক্ষের কান্না শোনে কোন হমত্মারক

 

এখন শহরের সব অধিবাসী একে অন্যের ঘোর হত্যাকারী

বৃক্ষরা বহুদিন এই নির্মম হত্যাকা–র প্রত্যক্ষদর্শী

 

তারা পাতা নেড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে

এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বিক্ষক্ষাভে অংশ নিয়েছে

কিন্তু সবই নিষ্ফল অরণ্যে-রোদন

কেউ ফিরেও দেখেনি

 

বৃক্ষের অভিশাপে এ নগরে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমেছে

কংকাল ও মানুষের পার্থক্য নির্ণয় দারুণ দুরূহ

পথে পথে গলিত স্বপ্নের লাভা-হিংস্র হাহাকার

সব উদয় অন্তর্হিত

 

এখন বৃক্ষের কাছে নতজানু হয়ে

করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী হতে হবে নগরবাসীকে

না হলে রক্ষা নেই – জ্বলে উঠবে অনন্ত আগুন