দিলওয়ার
ভূমিকা ও সংগ্রহ : শ্যামল চন্দ্র নাথ
[গত ১০ অক্টোবর কবি দিলওয়ার মারা যান। তিনি গণমানুষের কবি হিসেবে খ্যাত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ও হৃদ্যতা গত আট মাসের। এর ভেতর তিনি আমাকে পরম আপন করে নেন, যা ছিল সত্যি বিস্ময়ের। কবি দিলওয়ারের কবিতার সঙ্গে আমার পরিচয় বেশিদিনের নয়। কিন্তু তাঁর কবিতার ভাষা এবং বলার ভঙ্গি আমাকে বারবার তাড়িত করেছে, এটা আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি। কবি দিলওয়ার ১৯৩৭ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১০ অক্টোবর ২০১৩ সালে ৭৬ বছর বয়সে নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সারাজীবন দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের কথা বলে গেছেন। অতি সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। এর মধ্যে ১৯৮০ সালে বাংলা একাডেমি এবং ২০০৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন। তিনি পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ের জনক। তাঁর কাব্যগ্রন্থ ঐকতান, রক্তে আমার অনাদি অস্থি, দুই মেরু দুই ডানা, গদ্যগ্রন্থ বাংলাদেশ জন্ম না নিলে এবং গানের বই বাংলা তোমার আমার বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য। কবি দিলওয়ারের মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য এক উজ্বল নক্ষত্রকে হারাল। আমি তাঁর মৃত্যুর আগে ও পরে কিছু লেখা সংগ্রহ করি, যা এখনো কোথাও প্রকাশিত হয়নি। এক্ষেত্রে আমাকে বিশেষভাবে সহায়তা করেন কবির ছেলে কামরান ইবনে দিলওয়ার। কবির প্রতি রইল অসীম শ্রদ্ধা।]
কমরেড হুগো রাফায়েল শ্যাভেজ ফ্রায়াস
মানুষের ইতিবৃত্তের দুর্বিনীত সন্ধিৎসু,
বাংলার জনসমষ্টির
জিন এবং ডিএনএর পক্ষ থেকে
মরণোত্তর তোমাকে লাল সালাম।
হুগো শ্যাভেজ, ল্যাটিন আমেরিকার
অনিন্দ্যসুন্দর আত্মিক নন্দন
আমার কানে ও-কার বাণীবন্দনা?
আমার এক প্রিয় চরিত্র, সাইমন বলিভার
ধীরোদাত্ত কণ্ঠে ব্যক্ত করেন
তাঁর জীবনদর্শন –
আমি সাইমন বলিভার বলছি
১৭৮৩ সনে জন্ম আমার
মৃত্যু সন ১৮৩০।
ফিডেল কাস্ত্রো, হুগো শ্যাভেজ এবং
ল্যাটিন আমেরিকার অগ্নিপুত্র-পুত্রীগণ
আমার মরণাতীত সন্তান-সন্ততি,
আমি বিশাল এক ধনিক বণিকের
ঘরে, স্পেনের ঔপনিবেশিক
ভূখন্ডে জন্ম নিয়েছিলাম সত্য,
কিন্তু ললাটলিখনে ছিলো একটি শব্দ – বিপ্লব
ঐকান্তিক ইচ্ছে যাদের মজ্জাগত
তারা বলবে অকম্পিত কণ্ঠে –
বলবে আমার জীবনদর্শনের মূল কথা –
A state too extensive
in itself, or by virtue
of its dependencies,
ultimately falls into decay;
its free government is
transformed into a tyranny;
it disregards the principles
which it should preserve,
and finally degenerates
into despotism.
The distinguishing characteristic
of small republics
is stability; the character of
large republics is –
mutability.
দুই
হুগো শ্যাভেজ, তোমার অকালমৃত্যুর
কী প্রয়োজন ছিলো?
আদ্যিকাল থেকে অস্তিত্বরক্ষায়
মৃত্যুহীন যৌবন দিয়ে আসছে
লাল রক্তের শারাবন তহুরা।
অমৃতের শিস!
মার্চ ২০১৩
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.