অর্ঘ্য

(প্রয়াত বিজ্ঞানী অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে)

শাহেদ রহমান

 

যখন গেলেন চলে তিনি তার মুখখানি্

একখন্ড সোনার মতন জ্বলজ্বল করছিল

সবুজসমৃদ্ধ চিরচেনা পাহাড়ের বুকে একটি বাড়িতে।

 

যখন মানুষ পৃথিবীকে ফেলে চলে যায়

ওপারে তারার জলসায়, যারা বেঁচে থাকে –

বন্ধু ও স্বজন তারা সকলেই আসে আমন্ত্রণহীন –

 

তারা আসে ছায়াঘেরা পথ দিয়ে,

আসে মহাসড়কের অন্য প্রান্ত থেকে

আসে বৃক্ষদের অশ্রুজলে ভিজে ভিজে

মেঘের বিলাপ শুনতে শুনতে আসে

আসে পাহাড়ের চূড়ায় জমাট বিষাদের ভার বুকে ধরে।

 

সোনার পাতের মতন উজ্জ্বল শরীর তাঁর –

সূর্যের মতন জ্বলতে জ্বলতে তিনি

বিলিয়েছিলেন আলো আরণ্যক অন্ধকারে।

 

আসুন হে বন্ধু, হে স্বজন, আজ তাঁকে দেখি নিষ্পলক চোখে –

তাঁকে দেখবার সুযোগ আমরা আর পাব না নিশ্চিত,

তিনি আমাদের সঙ্গে আর একটিবারও বলবেন না কথা

একটিবারও রাখবেন না তাঁর চোখ আমাদের চোখে,

চোখের বাইরে চলে গেছে তাঁর চোখ,

আমাদের দৃষ্টি দিগন্ত পর্যন্ত যায়,

তাঁর দৃষ্টি চলে গেছে দিগন্তের বহুদূর, অনন্তের বাতায়নে।

 

তাঁর মুখখানি জ্বলে হীরের মতন, যেন কোহিনুর –

ধূলিধূসরিত পথে আলো ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর মুখ থেকে,

পড়ছে পবিত্র জল, পাহাড়ের ঢালে, সমতলে সমতলে;

সূর্যের মতন জ্বলতে জ্বলতে তিনি বিলিয়েছিলেন আলো

ঘরে ঘরে বিশ্বব্যাপী-মহাবিশ্ব, ব্ল্যাকহোল,

মানবজাতির কল্যাণের কথা বলে বলে।

 

আসুন আমরা আজ এ-বহুমাত্রিক জ্ঞানতাপসের

মহান আত্মার মহাশান্তি কামনায় ধ্যানমগ্ন হই

কালোত্তীর্ণ ঋষির মতন।