আকাশভিমুখী

হাশেম খান বাংলাদেশের চিত্রকলার সৃজনধারায় এক সমাজমনস্ক চিত্রকর। তাঁর ক্যানভাসে ধরা আছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবন-অভিজ্ঞতার নানা রূপ। প্রকৃতি, পরিবেশ ও মানুষ তাঁর চিত্রের মুখ্য বিষয়। চাঁদপুরে শৈশবে বা কৈশোরে অবলোকন করেছিলেন নিরনড়ব সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। এই স্মৃতি তাঁর সৃষ্টিতে প্রভাব ফেলেছে। পাখি ও কাক তাঁর প্রিয় বিষয়। এদের মধ্যে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন চলমান জীবনের প্রবাহকে। রিকশা-সিরিজে ধৃত হয়েছে সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম। তাঁর শিল্প-অঙ্গীকার বহুস্তরবিশিষ্ট বলে বাঙালি জীবনের সংকটকে তিনি কখনো প্রতীকের আশ্রয়েও রূপায়িত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রগুচ্ছেও তিনি বাঙালির অসম সাহস, শৌর্য ও বীরত্ব এবং ঐতিহাসিক পটভূমিকে মর্যাদার সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন।
চার দশক ধরে তিনি প্রাথমিক শিক্ষার বইয়ের নকশা অঙ্কন করেছেন বলে তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়েই শিশুর এক তৃতীয় নয়ন সৃষ্টি হয়। পাখি, ফুল, বৃক্ষ ও লতাপাতার যে-অবয়ব নির্মাণ করেছেন, তা শিশুর কল্পনার জগৎকে প্রসারিত করে।
আশির দশকে কৃষ্ণসাগরের উপকূলের পাখি সিরিজে কৃষ্ণসাগর ও পাখি তাঁকে বিমোহিত করেছিল।
এ-বছর তাঁর ভাস্কর্যের একক প্রদর্শনী হয়েছিল জাতীয় জাদুঘরে। এই প্রদর্শনীটি হয়ে উঠেছিল তাঁর শিল্পিত আরেক অভিযাত্রার উন্মোচন।
প্রচ্ছদে ব্যবহৃত অ্যাক্রিলিকে আঁকা চিত্রটি ২০১০ সালের।
সংগ্রাহক বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।