আমার আজব ঘোড়া

মিনার মনসুর

 

যে-শহরে আমাদের বেড়ে ওঠা – সেটি ছিল পাহাড়বেষ্টিত। যখন-তখন আমরা পাহাড় ভ্রমণে যেতাম। বড়োরা যেত সমুদ্রস্নানে। বাতাসে ভেসে বেড়াত তাদের অলৌকিক মেয়েবন্ধুদের শিহরণজাগানো সব গল্প। ঢেউয়ের ডানায় চেপে ‘লাল দোপাট্টা’ উড়িয়ে তারা আসতো।

সব ওলটপালট হয়ে গেল হঠাৎ। আমি যখন স্কুলের পোশাক পালটাচ্ছিলাম ঠিক তখনই বিদঘুটে একটি পাহাড় আমাদের শহরের ওপর চড়াও হয়েছিল। সেটা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না – সবাই জানতো।

নগরবাসী বিস্ময়করভাবে আত্মগোপন করেছিল স্বনির্মিত এক বিষণ্ণতার কুয়োয়। সাগরপাড়ের এই মানুষগুলোকে আমি চিনতাম। বংশানুক্রমিকভাবে তারা ছিল লড়াকু।

আমার ঘোড়াটিও তখন অদ্ভুত আওয়াজ করছিল। আমি কোমলস্বরে জিজ্ঞেস করি : ‘তুমিও কি ভয় পেলে নাকি, বাছা?’ প্রতিবাদে সে দুপায়ে দাঁড়িয়ে যায় – যেন গর্জমান আগুনের শিখা। আমি এক লাফে চেপে বসি সেই অগ্নিরথে। পাহাড় পিছু হটেছিল।

বন্ধুরা মাথা নাড়ে। তাদের সংশয় – ঘোড়া আবার উড়তে শিখলো কবে!