অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত
সিন্ধুমরালের ডাক
নবজাত শিশুর কান্নার সঙ্গে মিশে গিয়ে
তৈরি করে নতুন সিম্ফনি
সমুদ্রকিনারে আমি লেখার কেবিন থেকে দেখি
স্নানার্থীরা জলের ভিতরে
অকাতরে মজে গিয়ে পুনর্বার সৈকতে তাদের
নিজ-নিজ অবসরচর্চার ঝুপড়িতে ঢুকে যায়,
ইসাবেল আলেন্দের বই পড়ে, পড়তে-পড়তেও
করুণামিশ্রিত ব্যঙ্গে আমাকে অবলোকন করে।
এমন সময় বেলাভূমির বিস্তীর্ণ বালুকায়
ভূমিষ্ঠ নবজাতক কঁকিয়ে উঠেছে,
সিন্ধুমরালেরা অমনি পঞ্চম-নিখাদ কাকলিতে
মা আর শিশুকে ঘিরে কর্কশ মাধুর্যে গান করে;
আমিও লেখার খাতা জড়ো করে এই মর্মে একটি কবিতা
লিখতে গেছি, তৎক্ষণাৎ স্নানার্থীরা আমার লেখার
পরিপার্শ্বে গোল হয়ে তীব্র কৌতূহলে ফেটে পড়ে –
লেখার সময় আমি একাকী বিজন থাকতে চাই
সে-কথা না বলে শুধু করজোড়ে ওদের জানাই :
‘আজ সংগৃহীত হলো চিত্রকল্প, কাল প্রত্যূষে
সমস্তটা লিপিবদ্ধ হবে’খন অক্ষরে-অক্ষরে’
বলতে-বলতে লজ্জা পাই আমারই নিরুদ্ধ কণ্ঠস্বরে,
আমাকে আজকের মতো নিষ্কৃতি দিয়েই দিনমণি
অস্ত যায়, আর তার গনগনে মোমের রক্ত লেখার খাতায় ঝরে পড়ে…
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.