ইস্ট সী, পোল্যান্ড, ২০১৪

অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত

 

সিন্ধুমরালের ডাক

নবজাত শিশুর কান্নার সঙ্গে মিশে গিয়ে

তৈরি করে নতুন সিম্ফনি

 

সমুদ্রকিনারে আমি লেখার কেবিন থেকে দেখি

স্নানার্থীরা জলের ভিতরে

অকাতরে মজে গিয়ে পুনর্বার সৈকতে তাদের

নিজ-নিজ অবসরচর্চার ঝুপড়িতে ঢুকে যায়,

ইসাবেল আলেন্দের বই পড়ে, পড়তে-পড়তেও

করুণামিশ্রিত ব্যঙ্গে আমাকে অবলোকন করে।

 

এমন সময় বেলাভূমির বিস্তীর্ণ বালুকায়

ভূমিষ্ঠ নবজাতক কঁকিয়ে উঠেছে,

সিন্ধুমরালেরা অমনি পঞ্চম-নিখাদ কাকলিতে

মা আর শিশুকে ঘিরে কর্কশ মাধুর্যে গান করে;

আমিও লেখার খাতা জড়ো করে এই মর্মে একটি কবিতা

লিখতে গেছি, তৎক্ষণাৎ স্নানার্থীরা আমার লেখার

পরিপার্শ্বে গোল হয়ে তীব্র কৌতূহলে ফেটে পড়ে –

লেখার সময় আমি একাকী বিজন থাকতে চাই

সে-কথা না বলে শুধু করজোড়ে ওদের জানাই :

‘আজ সংগৃহীত হলো চিত্রকল্প, কাল প্রত্যূষে

সমস্তটা লিপিবদ্ধ হবে’খন অক্ষরে-অক্ষরে’

 

বলতে-বলতে লজ্জা পাই আমারই নিরুদ্ধ কণ্ঠস্বরে,

আমাকে আজকের মতো নিষ্কৃতি দিয়েই দিনমণি

অস্ত যায়, আর তার গনগনে মোমের রক্ত লেখার খাতায় ঝরে পড়ে…